গানে গানে বার্তা দিয়েছেন কোনাল

‘একলা চলো রে’ গানের মিউজিক ভিডিওর দৃশ্য
‘একলা চলো রে’ গানের মিউজিক ভিডিওর দৃশ্য

‘শিল্পী শুধু শিল্পী নন, তিনি কিন্তু এই বার্তাবাহক, আমি সব সময় তা-ই মনে করেছি। একজন শিল্পীর দায়িত্ব, কর্তব্য, কার্যভার—সাধারণ যে কারও চেয়ে বিশাল! চারদিকে যা ঘটছে, তা দেখে, শুনে, মুখ বুজে বসে আছি সবাই, ফেসবুকে নিউজ শেয়ার দিচ্ছি আর ভাবছি, দেশটা রসাতলে গেল! কিন্তু করছি কী?’ বললেন সংগীতশিল্পী কোনাল—‘চ্যানেল আই সেরা কণ্ঠ’ প্রতিযোগিতায় ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়ন। তিনি এবার গেয়েছেন রবীন্দ্রসংগীত, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ’। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন উপলক্ষে গানটির মিউজিক ভিডিও প্রকাশ করেছেন।

কোনাল যা বলেছেন, মিউজিক ভিডিওতে তিনি তা-ই দেখিয়েছেন। বাসায়, চলার পথে কিংবা কর্মক্ষেত্রে মেয়েশিশু, কিশোরী ও নারীরা যেভাবে নির্যাতিত হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে তাদের প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

কোনাল আরও বলেছেন, ‘গান দিয়ে শুধু দর্শককে নাচাতে হবে কেন? দর্শককে ভাবাতেও হবে! এই ভাবনা থেকেই গানটি গেয়েছি। শিশু ও নারীর প্রতি যে সহিংসতা হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে সবাইকে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানানোর জন্য রবীন্দ্রনাথের এ গানটিকেই আমার যথাযথ মনে হয়েছে। আর গানটির ভিডিওটি প্রকাশের জন্য কবিগুরুর জন্মদিনকেই বেছে নিয়েছি।’

‘একলা চলো রে’ গানের মিউজিক ভিডিওতে কোনাল
‘একলা চলো রে’ গানের মিউজিক ভিডিওতে কোনাল

চ্যানেল আইয়ের ইউটিউব চ্যানেলে গতকাল মঙ্গলবার ৪.৪৯ মিনিটের এই মিউজিক ভিডিওটি অবমুক্ত করা হয়। এ ছাড়া রাজধানীর তেজগাঁওয়ে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণের চেতনা চত্বরে আয়োজিত ‘রবীন্দ্র মেলা’য় কোনালের এই গান নিয়ে তৈরি অ্যালবামটির মোড়ক খোলেন চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ, রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী ইফফাত আরা দেওয়ান, আজিজুর রহমান তুহিন এবং অভিনয়শিল্পী আফসানা মিমি।

মিউজিক ভিডিওটির গল্প আর ভাবনা প্রসঙ্গে কোনাল বললেন, ‘এটি খুবই সময়োপযোগী। আশা করি, কিছুটা হলেও সবার মধ্যে সাহস জোগাবে। আমাদের এই গান সব সহিংসতার বিরুদ্ধে।’

‘একলা চলো রে’ গানটির সংগীত আয়োজন করেছেন নির্ঝর চৌধুরী ও শাহরিয়ার আলম। মিউজিক ভিডিওটি পরিচালনা করেছেন তানহা জাফরীন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘একলা চলো রে’ গানটি লিখেছিলেন গিরিডি শহরে। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের স্বদেশী যুগে কবিগুরুর ২২টি প্রতিবাদী গানের মধ্যে এই গানটি অন্যতম। ১৯০৫ সালে ‘আমার সোনার বাংলা’র মতো এই গানটিও প্রতিবাদী গান হিসেবে খুব জনপ্রিয় হয়। ওই বছর সেপ্টেম্বর মাসে ‘ভাণ্ডার’ পত্রিকায় ‘একা’ শিরোনামে গানটি প্রথম প্রকাশিত হয়। গানটি গোড়াতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বাউল’ বইয়ে ছিল। তবে ১৯৪১ সালে গানটি গীতবিতানের ‘স্বদেশ’ পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গানটিতে সুর দেন ইন্দিরা দেবী।