'সঞ্জু' ছবির টুকিটাকি

সঞ্জু ছবিতে রণবীর কাপুর
সঞ্জু ছবিতে রণবীর কাপুর
আগে থেকে কিছুই বলেননি রাজকুমার হিরানি। সঞ্জয় দত্তকে নিয়ে সিনেমা বানাবেন—ব্যস, এইটুকুই। কিন্তু থলের মধ্যে যে এমন চমকজাগানিয়া বিড়াল থাকবে, তা কে জানত। টিজার প্রকাশ পেতেই সবার চোখ চড়কগাছে। আরে বাহ্। এ তো দেখি লঙ্কাকাণ্ড। টিজার দেখে স্বয়ং সঞ্জয় দত্তও অবাক। সঞ্জয়ের চরিত্রে রণবীর নাকি সঞ্জয়—ধন্দ লেগে যায়। রণবীরের এমনই নিখুঁত অভিনয়। ছবির একেকটি পোস্টার টুইটারে পোস্ট করতে থাকেন হিরানি। আর আগ্রহ বাড়তে থাকে ভক্তকুলের। সঞ্জু ছবি নিয়ে তাই কিছু টুকিটাকি থাকল এই আনন্দে।


এক মানুষ অনেক জীবন

রণবীর কাপুরকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনার জীবনী চিত্রায়িত করতে চাইলে অনুমতি দেবেন? রণবীর বলেছিলেন, ‘আমার জীবনের ওপর কেউ ছবি নির্মাণ করতে চাইলে নিশ্চয় রাজি হব। তবে আমার জীবন খুব বোরিং। কোনো বৈচিত্র্য নেই। কাজে যাই আর বাড়ি ফিরে আসি।’ আর সঞ্জয় দত্তের জীবন? ঠিক রণবীরের বিপরীত। অভিনেতা, গ্যাংস্টার, বন্দিজীবন, মাদকাসক্তি, প্রেম বিতর্ক—জীবনটা নানা বাঁক নিয়েছে সঞ্জয়ের জীবনে। তা-ই চিত্রায়িত করেছেন হিরানি। একজন মানুষের মধ্য দিয়েই উঠে আসবে জীবনের নানা রূপ।

সঞ্জয়ের শৈশবের বাড়ি

রাজকুমার হিরানির ছবি যাঁরা দেখেছেন কিংবা তাঁকে যাঁরা চেনেন, তাঁরা জানেন, কতটা নিখুঁত কাজ করেন তিনি। ‘মুন্নাভাই সিরিজ’, থ্রি ইডিয়টস বা পিকে— এই ছবিগুলোই আপনাকে বলে দেবে, পরিচালক হিসেবে কতটা নিখুঁত মিস্টার হিরানি। তাঁর এই নৈপুণ্য দেখা গেল এই ছবিতেও। সঞ্জয়ের শৈশবকে তুলে আনতে নতুন করে একটি বাড়ি বানালেন তিনি। অবিকল সঞ্জয়ের শৈশবের বাড়ির মতো। মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় বাবা সুনীল দত্ত আর মা নার্গিসের সঙ্গে সঞ্জয় ওই বাড়িতে থাকতেন। বাড়িটি তৈরিতে হিরানিকে সাহায্য করেন সঞ্জয়ের বোন প্রিয়া দত্ত। বাড়িটি তৈরিতে সময় লেগেছিল ২৫ দিন।

চিনতে পারেননি ঋষিও!

বেশ কটি ছবিই হোঁচট খেল বক্স অফিসে। রণবীর ফেরার জন্য আকুল। তার কিছুটা ঝলক দেখা গেল অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল ছবিতে। আর সঞ্জু ছবিতে? একেবারে বাজিমাত। বুঝিয়ে দিলেন, অভিনয়টা পাক্কাই জানেন কাপুরপুত্র। টিজারে নিজের ছেলেকেই নাকি চিনতে পারেননি ঋষি কাপুর। বলেছিলেন, ‘আমি চিন্তাই করিনি যে এটা রণবীর। হিরানি অসাধারণ কাজ করেছে। আমি ভেবেছি, এটা সঞ্জয় দত্ত।’ আর সঞ্জয় দত্ত ছবির ফুটেজ দেখে তো একেবারে ‘থ’। হিরানিকে বললেন, ‘হিরানি, মুন্নাভাইয়ের তৃতীয় কিস্তিতে আমার বদলে আবার রণবীরকে নিয়ে নিয়ো না।’

একঝাঁক তারকা

শুধু অভিনয় নয়, একঝাঁক তারকারও দেখা মিলবে এই ছবিতে। রণবীরের বাবা সুনীল দত্তের চরিত্রে দেখা যাবে পরেশ রাওয়ালকে, মা নার্গিসের চরিত্রে মনীষা কৈরালা। সঞ্জয় দত্তের স্ত্রী মান্যতা দত্তরূপে দেখা দেবেন দিয়া মির্জা। দেখা যাবে আনুশকা শর্মাকেও, আইনজীবী হিসেবে। থাকবেন সোনম কাপুর, টাবু, ভিকি কুশলের মতো তারকারা।

রণবীরকে এমন বানাল কে?

রণবীর অভিনয়ে পাক্কা, তা ঠিক। কিন্তু রণবীরকে সঞ্জয় দত্তের রূপে সাজিয়ে তুলেছেন যিনি, তাঁর কথা না বললে কি হয়? তিনি সুরেশ মুরকে। একজন পেশাদার প্রস্থেটিক আর্টিস্ট। তিনিই রণবীরকে সাজিয়ে তুলেছেন একদম সঞ্জয় রূপে। এটি অবশ্য সুরেশের প্রথম কাজ নয়। এর আগে কাজ করেছেন তনু ওয়েডস মনু, ডার্টি পিকচারগুরু ছবিতে। প্রস্থেটিক আর্টিস্টের কাজ হলো শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ, যেমন নাক, কান, দাঁত ইত্যাদি কৃত্রিমভাবে স্থাপন করা। বলে রাখা ভালো, সুরেশ কিন্তু সামনা-সামনি একবারও সঞ্জয় দত্তকে দেখেননি। শুধু ছবি দেখেই রণবীরকে এমনভাবে সাজিয়ে দিলেন।

টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, বলিউড হাঙ্গামা অবলম্বনে শরীফ নাসরুল্লাহ