পুরস্কার নিতে যাব, নির্বাচনও করব: ফারুক

ফারুক
ফারুক

‘নয়ন মণি’, ‘সারেং বৌ’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’সহ দুই শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন বাংলা চলচ্চিত্রের প্রখ্যাত অভিনেতা ফারুক। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের এবারের আসরে আজীবন সম্মাননার জন্য নাম ঘোষণা করা হয়েছে বরেণ্য অভিনয়শিল্পী ফারুক ও ববিতার। একসঙ্গে দুজনের নাম দেখে পুরস্কার গ্রহণ করবেন কি করবেন না, তা নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন ফারুক। আগামী ৮ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরস্কারজয়ী ব্যক্তিদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন। এর মধ্যে সিদ্ধান্তের কোনো বদল হয়েছে কি না, তা জানতে যোগাযোগ করা হয় ফারুকের সঙ্গে। পুরস্কারের বিষয়ের পাশাপাশি কথা বললেন আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ইচ্ছে নিয়েও।

আপনি আজীবন সম্মাননা গ্রহণ করতে যাবেন কি না, তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন বলে শোনা গিয়েছিল।
শুরুতে আমি শুনেছিলাম, এই পুরস্কারটি যুগ্মভাবে দেওয়া হয়েছে। পরে জানলাম, এটা আলাদা আলাদা। এটা ঠিক যে আমি বলেছিলাম, যাওয়া ঠিক হবে কি না ভেবে দেখতে হবে। তবে একটি কথা বলতে চাই, আমরা সম্মান দিতে জানি। মোদ্দাকথা হলো আমি পুরস্কার নিতে যাব।

আপনি নাকি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন?
অবশ্যই। আর কত। কারণ, রাজনীতির মাঠে উদারতার কারণে বহু তো ধাক্কা খেলাম। আর ধাক্কা খাইতে চাই না। নির্বাচন করতে চাই, আমার মনে হচ্ছে করা উচিতও। যাঁরা এত দিন আমার ওখানে ছিলেন, তাঁরা ঠিকমতো কাজও করেননি। এত কথা বলে তো লাভ নেই, কাজের লোক দরকার। এখন আমার এলাকার মানুষ চাচ্ছেন, ফারুক সাহেব আপনি আসেন। আপনাকে দরকার, আমরা আপনাকে মন থেকে চাই।

নির্বাচনের রাজনীতিই যখন করবেন, তাহলে আরও আগে হলে কি ভালো হতো না?
আমার মাঝেমধ্যে মনে হয়, জীবনে আমি অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি। এই ভুল তো আর শোধরানো যাবে না। পেছন ফিরে তাকালেও আফসোস ছাড়া কিছুই থাকবে না। তাই ওসব ভাবতেও চাই না। আমি আমার এলাকার, এলাকার বাইরের অনেক মানুষের উপকার করেছি। আমি শিল্পী মানুষ, আমরা তো মিথ্যা কথা বলতে পারি না। তবে এই সত্যের মধ্যে অনেক মজার মজার কিছু থাকে। সংস্কৃতির মানুষ হয়ে আমি সব সময় বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের কথা বলি।

দেশের কোন এলাকা থেকে আপনি নির্বাচন করতে চান?
আমার এলাকা গাজীপুর-৫ আসন, মানে কালীগঞ্জ। এখানে একটা সময় আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি ছিল, এখন আর নেই। আওয়ামী লীগের অবস্থাকে নাজুক করে ফেলা হয়েছে। এই আসনটাকে আবার শক্ত ঘাঁটিতে পরিণত করতে চাই।

এই সময়ে এসে নির্বাচনের রাজনীতি করার ব্যাপারটি আপনার জন্য কতটা চ্যালেঞ্জ মনে করছেন?
এসব জায়গায় যে যত বড়ই থাকুক না কেন, একটা চ্যালেঞ্জ সব সময়ই আছে। মিত্র-শত্রু যারা, তাদের কাউকেই কখনো খাটো করে দেখতে নেই। সুতরাং চ্যালেঞ্জের ওই জায়গাগুলো কিন্তু আমার চেনা-জানা। সে জন্যই বলতে পারি, আমার জন্য অনেক সহজ হবে, আর আমার নতুন করে তো পরিচিতির কোনো দরকার নেই। আমার পরিবারের তিন শ থেকে সাড়ে তিন শ বছরের ইতিহাস আছে। এখন শুধু দল থেকে মনোনয়ন চাই। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের মানুষ, শেখ হাসিনার আদর্শের মানুষ। আমি এখান থেকে যদি ভালোবাসাটা পাই, সেই ভালোবাসা এলাকার মানুষের পেছনে কাজে লাগাতে পারব।

আপনি কতটা আত্মবিশ্বাসী?
এর আগে যাঁরাই আমার এলাকা থেকে সাংসদ হয়েছেন, তাঁরা সবাই আমার সমর্থনে হয়েছেন। কেউ আমাকে বাদ দিয়ে যেতে পারেননি। আমার এলাকার কিছু মানুষ আছেন আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসেন। এবার মনে হয়েছে, সেই ভালোবাসার মানুষদের প্রতিদান দেওয়া উচিত। শুধু গাজীপুর নয়, দেশের আনাচ-কানাচে অনেক জায়গায় জনসংযোগ করেছি। বাংলাদেশের এমন কোনো জেলা নেই, যেখানে আমি জনসভা করিনি। মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে কথা বলেছি। নিজেকে প্রতিনিয়ত যাচাই করেছি। চট্টগ্রাম যখন গিয়েছিলাম, তখন সেখানকার মানুষ বলে, আপনি চট্টগ্রাম থেকে মনোনয়ন নেন, আপনি পাস করে যাবেন। মানুষ আমাকে এত বেশিই ভালোবাসে। এই আমাকে উত্তরবঙ্গের মানুষও একই কথা বলেছে। মানুষ আমাকে মন থেকেই ভালোবাসে।