মধ্যরাতে বাবাকে বিপাশা-নাতাশার শুভেচ্ছা

স্ত্রী মাহফুজা শিরিনকে বেলি ফুল পরিয়ে দিচ্ছেন আবুল হায়াত
স্ত্রী মাহফুজা শিরিনকে বেলি ফুল পরিয়ে দিচ্ছেন আবুল হায়াত

অভিনয়শিল্পী আবুল হায়াতের বিবাহিত জীবন আজ ৪৮ বছরে। মা-বাবার বিবাহবার্ষিকী উদ্‌যাপন করতে দুই সন্তান বিপাশা ও নাতাশা রাতেই বেইলি রোডের বাসায় হাজির হন। মঞ্চ, টিভি, চলচ্চিত্র ও বিজ্ঞাপনচিত্রে সমানতালে কাজ চালিয়ে যাওয়া এই শিল্পীর দুই সন্তান সঙ্গে নিয়ে যান ফুল, কেক, উপহার। আবুল হায়াত ও তাঁর স্ত্রী মাহফুজা শিরিন দুই মেয়ে ও তাঁদের সন্তানদের নিয়ে কেক কাটেন। দুই সন্তানের এভাবে আসার ব্যাপারটিকে ঝটিকা সফর হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন আবুল হায়াত।

শোবিজে এখন ভাঙনের খবরই বেশি শোনা যায়। সেখানেই অনেক শিল্পীর দাম্পত্য জীবনও আশার আলো হয়ে জ্বলছে। আবুল হায়াত তাঁদেরই একজন প্রতিনিধি। বুয়েটে পড়াশোনা শেষে দেশ স্বাধীনের আগে নাটকের দলের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। আর দেশ স্বাধীনের পর অভিনয় শুরু করেন চলচ্চিত্রে। সেই থেকে এখনো চলছে। জীবনের দীর্ঘ পথচলায় অভিনয়জীবন যেমন সামলে নিয়েছেন, তেমনি সংসারের প্রতিও ছিলেন বিশ্বস্ত। 

আবুল হায়াতের বিয়ের ৪৮ বছর পদার্পণে নাতাশার সেলফিতে পরিবারের অন্য সদস্যরা
আবুল হায়াতের বিয়ের ৪৮ বছর পদার্পণে নাতাশার সেলফিতে পরিবারের অন্য সদস্যরা

আবুল হায়াত বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ রহমতে আমাদের জীবনে এখনো ছন্দপতন হয় নাই। একসঙ্গে আছি। সামনের দিনগুলোতেও এভাবেই থাকব। তবে আমাদের যে দুঃখ-কষ্ট ছিল না তা কিন্তু না, এর পাশাপাশি আনন্দও ছিল। সবকিছুর পরও দুজন-দুজনের বন্ধনের প্রতি বিশ্বাস ছিল, আস্থা ছিল, ভালোবাসা ছিল, ভালো লাগাও ছিল।’

আবুল হায়াত ও মাহফুজা শিরিন
আবুল হায়াত ও মাহফুজা শিরিন


আবুল হায়াত আরও বলেন, ‘বিবাহিত সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি কথা সব সময় মনে রাখা উচিত, দুজন মানুষ কিন্তু দুটি ভিন্ন পরিবেশ থেকে আসে। একেকজনের বেড়ে ওঠার ধরনও একেকভাবে। দুই পরিবেশের দুজন যখন একসঙ্গে হয়, তখন কিছু ছাড় দিতে শিখতে হয়, নতুন কিছু গ্রহণ করতেও শিখতে হবে। এসবই সুন্দর সম্পর্কের ভিত।’

এখনকার সময়ে শোবিজের বাসিন্দাদের অনেক বেশি অস্থিরও বলে থাকে কেউ কেউ। দ্রুত যেমন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন, তেমনি বিচ্ছেদেরও। বিষয়টি মনে করিয়ে দিতেই আবুল হায়াত বলেন, ‘আমি আগেই কিন্তু বলেছি, একেকজনের মানসিক অবস্থা একেক রকম। তার মানে এই নয় যে সম্পর্কের মধ্যে আস্থা থাকবে না, বিশ্বাস থাকবে না! সবচেয়ে বড়, এখন কিন্তু গোটা পৃথিবীটা অস্থিরতায় চলছে।

বাংলাদেশ, এখানকার সমাজ ও মানুষেরা এর বাইরে নয়। আমরা যাঁরা পুরোনো দিনের মানুষ, এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগেও মূল্যবোধকে আঁকড়ে ধরে রাখি। মূল্যবোধের স্খলন হতে দিই না। আবার তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গেও নিজেদের মানিয়ে চলি। আমার মনে হয়, এখনকার ছেলেমেয়েরা তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে এতভাবে জড়িয়ে থাকে, একটা সময় তাদের একক অস্তিত্বে বিশ্বাস করা শুরু করে। সে কারণে জটিলতা তৈরি হয়।’