২০ মাস পর কি ছাড়পত্র পাবে ছবিটি?

হৃদয়ের রংধনু ছবির দৃশ্য
হৃদয়ের রংধনু ছবির দৃশ্য

২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর সেন্সর বোর্ডে জমা পড়ে রাজিবুল হোসেন পরিচালিত ছবি ‘হৃদয়ের রংধনু’। সেদিনই বোর্ডের সদস্যরা তা দেখেন। এরপর প্রায় ২০ মাস পেরিয়ে গেলেও সেন্সর ছাড়পত্র পায়নি এই ছবি। ‘হৃদয়ের রংধনু’ দেশের পর্যটনশিল্পের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে-এই আশঙ্কা প্রকাশ করে ছবিটি এখনো আটকে আছে। তবে এখন নতুন করে ছবিটির ছাড়পত্র পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। গত বুধবার সকালে চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডে আবারও এই ছবির প্রিভিউ হয়।

দুই বছর ধরে হৃদয়ের রংধনু নিয়ে চলছে নানা টানাহেঁচড়া। ছবির কিছু দৃশ্য দেশের পর্যটনশিল্পের জন্য ক্ষতির কারণ হয় কি না, তা জানতে চেয়ে সেন্সর বোর্ড নানা জায়গায় চিঠি দিয়েছে। মতামতের জন্য সেন্সর বোর্ড কখনো বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, কখনোবা বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠিয়েছে ছবিটিকে। দীর্ঘ সময় ধরে এ নিয়ে চলেছে চিঠি-চালাচালি। এর ফলে ছবিটি ছাড়পত্র পাবে কি না, এ সিদ্ধান্ত নিতে সেন্সর বোর্ড দেরি করায় নির্মাতা রাজিবুল আদালতের শরণাপন্ন হন।

এ বছরের শুরুর দিকে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কাছে ছবিটির বিষয়ে মতামত চেয়ে একটি চিঠি দেয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতেই বুধবার রাজধানীর ইস্কাটনে সেন্সর বোর্ডের কার্যালয়ে হৃদয়ের রংধনুর প্রিভিউ হয়। পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে পর্যটন করপোরেশন, পর্যটন বোর্ড, পর্যটন মন্ত্রণালয়, সেন্সর বোর্ডের ১০ জনের একটি দল ও ছবির পরিচালক ছবিটি দেখেন। ছবি দেখার পর এর ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রিভিউতে থাকা কেউই আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খোলেননি। তবে সেন্সর বোর্ডের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ পর্যন্ত তো অনেক ছবিতেই কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকতে অপরাধের চিত্র দেখানো হয়েছে। কোথায়, একটি ছবি নিয়েও তো আমাদের মতামত জানতে চায়নি সেন্সর বোর্ড! অথচ এই ছবি নিয়ে যে কেন এতবার মতামত চাওয়া হচ্ছে, বুঝতে পারছি না।’

এদিকে বুধবারের প্রিভিউয়ের পর ছবিটির ছাড়পত্র পাওয়া নিয়ে বেশ আশাবাদী হৃদয়ের রংধনুর প্রযোজক ও পরিচালক রাজিবুল হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘ছবিটি দেখার পর প্রিভিউ বোর্ডের প্রায় সবাই ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাঁরা সেন্সর বোর্ডকে ছবিটি সম্পর্কে ইতিবাচক মতামতই দেবেন বলে জানিয়েছেন আমাকে।’

এ ব্যাপারে পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান খান বলেন, ‘এর আগেও একবার ছবিটি আমরা দেখেছি, আবারও দেখলাম। আগেও ছবিটি নিয়ে আমাদের ইতিবাচক মনোভাব ছিল, এবারও। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই আমাদের মতামত চিঠির মাধ্যমে সেন্সর বোর্ডকে জানাব।’

এদিকে চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মতামতের অপেক্ষায় আছি। এখনো মতামত হাতে আসেনি। এলেই তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেব ছবিটি ছাড়পত্র পাবে কি না।’

হৃদয়ের রংধনু ছবির কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেছেন কায়েস চৌধুরী। এতে অভিনয় করেছেন মিনা পেটকোভিচ, শামস কাদির, মুহতাসিম স্বজন, খিং সাই মং মারমা প্রমুখ।