এক সন্ধ্যায় দুই নাটকের উদ্বোধন

সংস্কার নাট্যদলের ভুল স্বর্গ নাটকের দৃশ্য। গতকাল শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়।  ছবি: প্রথম আলো
সংস্কার নাট্যদলের ভুল স্বর্গ নাটকের দৃশ্য। গতকাল শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়। ছবি: প্রথম আলো

লোকটি নেহাত বেকার ছিল। তার কোনো কাজ ছিল না, কেবল শখ ছিল নানা রকমের। ছোট ছোট কাঠের চৌকোয় মাটি ঢেলে তার ওপর সে ছোট ছোট ঝিনুক সাজাত। দূর থেকে দেখে মনে হতো যেন একটা এলোমেলো ছবি, তার মধ্যে পাখির ঝাঁক। কিংবা এবড়োখেবড়ো মাঠ, সেখানে গরু চরছে। অথবা উঁচুনিচু পাহাড়, তার গা বেয়ে ঝরনা নেমেছে। কখনো দেখে মনে হয়, পায়ে চলা পথ। বাড়ির লোকের কাছে তাঁর লাঞ্ছনার সীমা ছিল না। মাঝেমধ্যে পণ করত পাগলামি ছেড়ে দেবে। কিন্তু পাগলামি তাকে ছাড়ত না।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ভুল স্বর্গ’ গল্পের শুরুটা এমন। এই গল্পটিকে নবনাট্যরূপ দিয়েছেন অধ্যাপক ইউসুফ হাসান অর্ক। গতকাল সোমবার ঢাকার মঞ্চে যোগ হয়েছে নাটকটি। এটি সংস্কার নাট্যদলের চতুর্থ প্রযোজনা। এই নাটকের সঙ্গে একই সন্ধ্যায় গতকাল সংস্কার নাট্যদল মঞ্চে এনেছে মহাপতঙ্গ নাটকটিও।

সংস্কার নাট্যদলের আয়োজনে গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে ‘ভুল স্বর্গ’ ও ‘মহাপতঙ্গ’ নাটক দুটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়। বিরতিসহ নাটক দুটির ব্যাপ্তি ১ ঘণ্টা ১০ মিনিট।

মহাপতঙ্গ দলের ষষ্ঠ প্রযোজনা। আবু ইসহাকের গল্প থেকে নাটকটি লিখেছেন রুবাইয়াৎ আহমেদ। নির্দেশনা দিয়েছেন হাবিব মাসুদ। মহাপতঙ্গ অনেকটা রূপক নাটক। নাটকের কাহিনিতে দেখা যায়, ছোট একটি শহরের ছোট একটি বাড়ির দেয়ালের ফোকরে বাস করে চড়ুই দম্পতি। বাসায় তাদের দুটি ছানা। তারা বহু আদরে বেঁচে থাকার কায়দা শেখায় বাচ্চাদের। ছানাদের শোনায় গল্প, এক মহাপতঙ্গের গল্প। দেখতে ফড়িংয়ের মতো মহা সেই প্রাণী ভোঁ ভোঁ শব্দ করে এসেছিল। সেবার বন্যায় দুর্গত দোপেয়ে দৈত্য অর্থাৎ মানুষকে তারা বস্তা করে শস্য দিয়ে গিয়েছিল। উদ্ধার করে নিয়ে গিয়েছিল নিরাপদ স্থানে। আরেক দিন আকাশে দেখা যায় মহাপতঙ্গের। এবার দেখা যায় মহাপতঙ্গের ভিন্নরূপ। দোপেয়ে দৈত্যরা মহাপতঙ্গ থেকে বড় বড় ডিমের মতো বোমা ফেলে। বোমা ফেটে চৌচির হয়ে যায় ঘরবাড়ি, গাছপালা প্রান্তর। হারিয়ে যায় চড়ুইয়ের সুখের সংসার।

গতকাল মঞ্চস্থ দুটি নাটকে অভিনয় করেছেন ফাতেমাতুজজোহরা, ইসমাইল হোসেন, বাপ্পী সাইফ, নদী সাইফ, সুজন কীর্তনীয়া, পৃথা দে, শিহাবুল ইসলাম, সাজ্জাদ হাওলাদার, জুলি ইসলাম, রত্না ইসলাম, মোস্তফা জালাল, টুটন চাকলাদার, মাসুদ কবির, আশিকুর রহমান ও মনমী ইসলাম।