'আজ যদি মান্না ভাই থাকতেন...'

>ঢাকার জ্যাম-এ কলকাতার ঋতুপর্ণা’—পত্রিকায় এমন খবর দেখে ভুল বুঝবেন না। প্রায় ১০ বছর পর প্রয়াত নায়ক মান্নার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কৃতাঞ্জলি একটি ছবি প্রযোজনা করতে যাচ্ছে। নাম জ্যাম। পরিচালনায় নঈম ইমতিয়াজ। সবকিছু ঠিক থাকলে, এই ছবিতে একজন আইনজীবীর চরিত্রে অভিনয় করবেন কলকাতার অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। ২৩ জুলাই ছবির মহরতে যোগ দিতে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। পরদিনই ফিরে গেছেন কলকাতায়। একফাঁকে কথা হলো জ্যাম, নায়ক মান্না, বর্তমান কাজ, কলকাতার ছবি...আরও নানা প্রসঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শফিক আল মামুন
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ছবি: প্রথম আলো
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ছবি: প্রথম আলো

‘জ্যাম’ ছবিতে কাজের সিদ্ধান্ত তাহলে চূড়ান্ত?
ছবির গল্প শুনেছি। কাজের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। এখনো চুক্তিবদ্ধ হইনি। ছবিতে ফেরদৌস, পূর্ণিমা অভিনয় করছেন। আরিফিন শুভরও থাকার কথা। আমার বিষয়টা একটু সারপ্রাইজ থাক না! তবে এ ছবিটি নিয়ে আমি খুব আশাবাদী। অনেক দিন পর মান্না ভাইয়ের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে ছবিটি নির্মাণ হতে যাচ্ছে। মান্না ভাইয়ের সঙ্গে আমার অন্য রকম সম্পর্ক ছিল। অনেক ভালো কাজ করেছি তাঁর সঙ্গে।

কোন কোন ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছিলেন, মনে আছে?
বংশধর, জুম্মুন কসাই, স্বামী ছিনতাইসহ অনেক ছবিতেই তাঁর সঙ্গে কাজ করেছি। সেই সময় তাঁর সঙ্গে করা প্রায় সব ছবিই দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছিল। মান্না ভাইকে ঘিরে আমার অনেক স্মৃতি আছে। তিনি আমাকে অনেক আদর করতেন, স্নেহ করতেন। জ্যাম ছবির মহরত অনুষ্ঠানে মনটা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। মনে হচ্ছিল আজ যদি মান্না ভাই থাকতেন, কত ভালো হতো!

ছবিতে অভিনয় করতে রাজি হওয়ার পেছনে কি নায়ক মান্নার প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধাও একটা বড় কারণ?
তা তো অবশ্যই। এর আগে মান্না ভাইয়ের নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের একটি কাজ করেছিলাম। হয়তো তিনি বেঁচে থাকলে সেই সময় আরও কাজ হতো। প্রায়ই মান্না ভাই তাঁর ছবির শুটিংয়ে আমাকে নিয়ে যেতেন। কীভাবে তিনি কাজ করেন, দেখতাম। ভালো কাজের প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহ ছিল তাঁর। সেই সময় থেকেই তাঁর পরিবারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক হয়ে গেছে। এখনো সেটা অটুট আছে। মান্না ভাইয়ের স্ত্রী শেলী ভাবি আমাকে ছোট বোনের মতো দেখেন।

এর আগে পরিচালক নঈম ইমতিয়াজ নেয়ামূল এবং নায়ক ফেরদৌসের সঙ্গে আপনি এ দেশে আরও একটা ছবিতে অভিনয় করেছিলেন, ‘এক কাপ চা’...
যত দূর মনে পড়ে, ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে এক কাপ চা মুক্তি পেয়েছিল। দীর্ঘদিন পর আবারও বাংলাদেশের ছবিতে আমি, ফেরদৌস একসঙ্গে কাজ করব। ফেরদৌস আমার কাছের বন্ধু। তাঁর সঙ্গে ভালো ভালো কাজের দীর্ঘ ইতিহাস আছে। এক কাপ চা ছবির পরিচালক নঈম ইমতিয়াজ এবারের ছবিটিও পরিচালনা করবেন। সবার মধ্যে বোঝাপড়ার জায়গাটা ভালো। তা ছাড়া জ্যাম ছবির গল্পও দারুণ। আশা করছি, ছবিটা ভালো হবে।

‘একটি সিনেমার গল্প’ থেকে কেমন সাড়া পেলেন?
প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। মুক্তির পর ছবিটি নিয়ে পরিচালক আলমগীর ভাই খুশি ছিলেন। পরিচালক খুশি থাকলেই তো ছবির শিল্পীরাও খুশি হন। তা ছাড়া যাঁরা ছবিটি দেখেছেন, তাঁরা সবাই-ই প্রশংসা করেছেন।

বাংলাদেশে কার কার অভিনয় ভালো লাগে?
ফেরদৌসের সঙ্গে তো দুই বাংলার অনেক কাজ করেছি। অসাধারণ অভিনেতা ফেরদৌস। এ ছাড়া রাজ্জাক ভাইয়ের সঙ্গে বাবা কেন চাকরসহ আরও দু-একটি কাজ করেছি। রাজ্জাক ভাইয়ের কথা আর কী বলব? লিজেন্ড। এ ছাড়া আলমগীর ভাই, ফারুক ভাইয়ের অভিনয় ভালো লাগে।

এখন যাঁদের সঙ্গে কাজ করছেন, তাঁদের মধ্যে?

এখনকার মধ্যে ফেরদৌস তো আছেই। শাকিবের ছবি আমি দেখিনি। আমাদের ওখানেও তিনি কাজ করছেন। শুনেছি এখানে তিনি খুবই জনপ্রিয়। আরিফিন শুভ খুব ভালো অভিনয় করেন। তাঁর সঙ্গেও কাজের অভিজ্ঞতা আছে।

নিয়মিতভাবে বাংলাদেশের ছবিতে কাজ করার ইচ্ছা আছে?

হ্যাঁ, আমি বাংলাদেশের ছবিতে নিয়মিত কাজ করতে চাই। এখানকার ভালো পরিচালক ভালো গল্প নিয়ে কাজের প্রস্তাব করলে অবশ্যই কাজ করব। আমি কলকাতায় যেভাবে কাজ করছি, এখানেও সেভাবে কাজ করতে চাই। কেননা দুই বাংলার চলচ্চিত্রশিল্পকে একই পরিবার মনে হয়। বাংলাদেশ আমার পছন্দের জায়গা। এখানে ভিন্ন কিছু কাজ করতে চাই। যেন এখানকার মানুষ আমাকে মনে রাখেন।

এখন কলকাতায় কী কী ছবিতে কাজ করছেন?

অনেকগুলো কাজ করছি। রঞ্জন ঘোষের আহা রে, সুজিত মন্ডলের অন্বেষণ, শ্রীজিত মুখার্জির শাহজাহান রিজেন্সি। এ ছাড়া রিংগো, সুমন ঘোষসহ বেশ কয়েকজন পরিচালকের চলচ্চিত্রে কাজ করছি।