আলাউদ্দীন আলীর সুরে মিতালীর গান

আলাউদ্দীন আলী ও মিতালী মুখার্জি
আলাউদ্দীন আলী ও মিতালী মুখার্জি

আলাউদ্দীন আলীর সুরে ও সংগীতে অসংখ্য কালজয়ী গানে কণ্ঠ দিয়েছেন মিতালী মুখার্জি। বহু বছর পর বাংলাদেশের জীবন্ত এই কিংবদন্তি সুরকার ও সংগীত পরিচালকের তৈরি নতুন একটি গান মিতালী মুখার্জির কণ্ঠে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। ঈদে প্রকাশের অপেক্ষায় থাকা ‘আমার মরণ হলে’ শিরোনামের এই গানের কথা লিখেছেন আহমেদ রিজভী।

মিতালী মুখার্জি বহু বছর ধরে ভারতের মুম্বাইয়ে থাকেন। আজ সোমবার বিকেলে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা হয় তাঁর। গানটির প্রকাশের খবরে তিনি ভীষণ আনন্দিত। বললেন, ‘এটি অসাধারণ একটি গান। আড়াই বছর আগে এই গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছিলাম।’

আলাউদ্দীন আলীর সুর ও সংগীতে অনেক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন মিতালী মুখার্জি। এসব গানের মধ্যে ‘এই দুনিয়া এখন তো আর সেই দুনিয়া নাই’, ‘ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়’, ‘আকাশের সব তারা ঝরে যাবে’, ‘এ জীবন তোমাকে দিলাম’, ‘কেন আশা বেঁধে রাখি’, ‘দুঃখ ছাড়া হয় না মানুষ’, ‘যেটুকু সময় তুমি থাকো’ কালজয়ী হয়ে আছে। নতুন গানটিও নিয়েও অনেক আশাবাদ এই গায়িকার। আলাউদ্দীন আলীর সুর ও সংগীতে গাইতে পারার ব্যাপারটাকে সৌভাগ্যের বলেও মনে করছেন তিনি। বললেন, ‘আলাউদ্দীন আলী ভারতীয় উপমহাদেশের বিশাল মাপের একজন সংগীত পরিচালক। পুরোপুরি সংগীতজ্ঞান তাঁর মধ্যে আছে। তাঁর অনেক গান আছে, মনে হবে খুব সহজ, আসলে অত সহজ নয়। এ জন্য তাঁর সমস্ত গান অমর হয়ে আছে। আমি খুবই সৌভাগ্যবান এই জন্য যে, তাঁর সুর ও সংগীতে গান গাইতে পেরেছি। নতুন যে গানটি মুক্তি পেতে যাচ্ছে, এটি আমার খুব প্রিয় একটি গান। অডিওর পাশাপাশি গানটির যদি একটা ভিডিও যদি তৈরি হতো, তাহলে খুব ভালো লাগত।’

সংগীত নিয়ে চিন্তাধারার দিক দিয়ে আলাউদ্দীন আলীর মতো মানুষ ভারতীয় উপমহাদেশে খুব কম আছে বলে মনে করেন মিতালী মুখার্জি। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সংগীত পরিচালক হলেও তিনি আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত। আলী ভাইয়ের সঙ্গে আমার স্বামী ভুপিন্দর সিংও কাজ করেছেন। সে তো ভীষণ মুগ্ধ হয়। ভুপেন্দর বলেছিল, ভারতীয় উপমহাদেশে এত অসাধারণ চিন্তাধারা খুব কম মানুষের মধ্যে আছে।’

আলাউদ্দীন আলীর সুর ও সংগীতে বহু বছর আগে গান গেয়েছেন মিতালী। এখনো নাকি কোনো মঞ্চে গানগুলো গাইতে গেলে বিস্মিত হন তিনি। বলেন, ‘আমার সঙ্গে গিটার বাজায় রকেট মণ্ডল। ও ভাবে, এত বছর আগের একটা গান এখনো এত সুন্দর, এত আধুনিক! আমার মনে হয়, আলাউদ্দীন আলী ভাইকে সৃষ্টিকর্তা আমাদের কাছে একটা উপহার দিয়েছেন। গান নিয়ে অনেকেই তো চিন্তাভাবনা করেন, কিন্তু আলী ভাইয়ের ভাবনা অনেক উঁচুতে। সব রকম গানই করেছেন।’

১৯৬৮ সালে যন্ত্রশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রজগতে পা রাখেন আলাউদ্দীন আলী। শুরুটা শহীদ আলতাফ মাহমুদের সহযোগী হিসেবে, পরে প্রখ্যাত সুরকার আনোয়ার পারভেজের সঙ্গেই কাজ করেন দীর্ঘদিন। লোকজ ও ধ্রুপদি গানের সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা তাঁর সুরের নিজস্ব ধরন বাংলা সংগীতে এক আলাদা ঢং হয়ে উঠেছে বিগত প্রায় চার দশক ধরেই। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের বহু স্বনামধন্য শিল্পী তাঁর সুরে গান করে নিজেদের সমৃদ্ধ করেছেন। আলাউদ্দীন আলী এখনো নতুন গান তৈরি করে চলছেন। মিতালী মুখার্জির গানটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আড়াই বছর আগে গানটি তৈরি করেছিলাম। ও আমার সুর-সংগীতে অনেক গান গেয়েছে। সেসব গান শ্রোতারা গ্রহণ করেছে। এই গানটিও শ্রোতাদের ভালো লাগবে।’