সেই ওয়েস্টার্ন রঙের দিনগুলো!

‘ম্যাকেনাস গোল্ড’ ছবির দৃশ্য
‘ম্যাকেনাস গোল্ড’ ছবির দৃশ্য

কাউবয় মুভি মানে ওয়েস্টার্ন মুভি। অনেকে ওয়েস্টার্ন বলতে ভাবেন পশ্চিমা মুভি। তা নয়। ২৪ ক্যারেট আমেরিকান মুভি। কাউবয়ের সোজা বাংলা, গরুর রাখাল। রাখাল? আমেরিকায়? হ্যাঁ। এই কালচারই ছিল সেই সময়ে। ২০০ বছর আগে। সময়টা ছিল রুক্ষ। বেঁচে থাকার প্রধান উপায় ছিল গরু পালন। গরু পালন মানে গোয়ালঘরে না। শয়ে শয়ে গরু। এই গরুগুলো পালা হয় বিশাল অঞ্চলজুড়ে। রাখা হয় কাঠের গুঁড়ির বিশাল বিশাল ঘেরে। টিভি-মুভিতে দেখেছেন। এগুলোকে বলে র‍্যাঞ্চ। র‍্যাঞ্চের মালিক র‍্যাঞ্চার। ধনী। এই গরু পালা, গরু ধরা, লুট করা, রক্ষা নিয়ে হয় দলাদলি, খুন-খারাবি। গড়ে ওঠে শহর, হোটেল, পানশালা। উদয় হয় খুনি মাস্তান, চলে আসে মাস্তানের মাস্তান হিরো, হাজির হয় আইনের রক্ষক শেরিফ। তৈরি হয় এই বিচিত্র কালচার নিয়ে নানা রঙের, নানা কাহিনির ওয়েস্টার্ন মুভি। হলিউডে।

বিগত শতকের দ্বিতীয় ভাগজুড়েই ছিল কাউবয় মুভির জয়জয়কার। কাউবয় মুভিগুলোর দর্শক ছিলেন তরুণেরা। তবে মারদাঙ্গা মনের কলেজ-ভার্সিটির মেয়েরাও আসতেন মধুমিতা-অভিসারে। এই হল দুটিতে বেশি ইংলিশ মুভি চলত। অনেকে অবশ্য টিপ্পনি কেটে বলতেন, মেয়েরা আসে ক্লিন্ট ইস্টউড, জন ওয়েন, চার্লস ব্রনসনদের দেখতে, কাউবয়দের না। ওয়েস্টার্ন হিরোরা দেখতে ম্যানলি। রাফ অ্যান্ড টাফ।

‘দ্য গুড দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ ছবিতে ক্লিন্ট ইস্টউড
‘দ্য গুড দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ ছবিতে ক্লিন্ট ইস্টউড

ওয়েস্টার্ন মুভির মজা পেতে হলে কাউবয় কালচার সম্পর্কে কিছু জানা থাকলে ভালো। অবশ্য দেখতে দেখতে জানা হয়ে যায়।

ওয়েস্টার্ন মুভিগুলো মূলত তৈরি হয় ১৯৪০-৫০ দশক থেকে। এর কাঁপানো ধাক্কা ঢাকায় এসে লাগে স্বাধীনতার পর। মধুমিতা মুভিজ এ দেশে হলিউড মুভি রিলিজ দেওয়ার কিংবদন্তি। ওয়েস্টার্ন মুভিগুলো তারাই আনত।

বিগত শতকের সত্তর, আশি ও নব্বইয়ের দশকে মধুমিতা-অভিসার-নাজ সিনেমা হলে ছবি দেখার শুরুর আকর্ষণ ছিল আমেরিকায় বানানো সফট ড্রিংকসের বিকিনি মেয়েদের বিজ্ঞাপন আর মুক্তির প্রতীক্ষায় হলিউড মুভির ট্রেলার। এক বছর আগে থেকেই দর্শক ট্রেলারে দেখতেন ওয়েস্টার্ন কাউবয় মুভির মজার মজার ক্লিপগুলো। দেখতেন জন ওয়েন, পল নিউম্যান বা ক্লিন্ট ইস্টউডদের শক্তিশালী অ্যাকশন। হলগুলোর ডিসপ্লেতে শোভা পেয়েছে ওয়েস্টার্ন মুভির আকর্ষণীয় পোস্টার ‘দ্য গুড দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’, ‘রেড সান’, ‘ফর আ ফিউ ডলারস’, ‘ম্যাকেনাস গোল্ড’, ‘কিল দেম অল অ্যান্ড কাম ব্যাক অ্যালোন’। লেখা থাকত, কামিং সুন! দর্শকও মনে মনে বলতেন, আমরাও আসছি, ডোন্ট ওরি! নাজ সিনেমা হল যাঁরা চিনতে পারছেন না, বলছি, গুলিস্তান হলের ডান পেটে ছোট্ট এই হলটি ছিল ইংলিশ ছবির জন্য বরাদ্দ। পরে তা বাংলা ‘অশ্লীল’ বা ‘কাটপিস’ ছবির নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন দ্য ওয়েস্ট’ ছবিতে চার্লস ব্রনসন
‘ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন দ্য ওয়েস্ট’ ছবিতে চার্লস ব্রনসন

কাউবয় মুভি মানেই অ্যাকশন, টানটান উত্তেজনা, মারদাঙ্গা মুভি। থাকবে ঘোড়া, ঘোড়ার আস্তাবল, গরুর র‍্যাঞ্চ, ট্রেন, ওয়াগন, রেড ইন্ডিয়ানরা, থাকবে রিভলবার-বন্দুক-গোলাগুলি, থাকবে ফুর্তি, ডুয়েল ফাইট, সেলুনে রাতভর হইহল্লা আর সাইড দিয়ে হালকা প্রেম। সেলুন মানে চুল কাটার সেলুন না, রাস্তার পাশের ছোট্ট পানশালা। এই পানশালাগুলোকে সেলুন বলা হতো। এগুলো ছিল ২০০ বছর আগের আমেরিকা। আস্তে। এরই মধ্যে কিন্তু ওরা চাঁদ বিজয় করে ফেলেছে, ১৩ ফুট লম্বা ডিঙিতে চড়ে সবার আগে আটলান্টিক পাড়ি দিয়েছে।

কাউবয়দের সঙ্গে আমার পরিচয় স্কুলজীবন থেকেই। যার ফলে তাদের বুঝতে সুবিধা হয়েছে। পল নিউম্যান, চার্লস ব্রনসন, ক্লিন্ট ইস্টউড, গ্রেগরি পেকরা ছিল আমার নিত্যদিনের সঙ্গী। তাদের কাছ থেকেই শিখি কাউবয় কালচার।

গ্রেগরি পেক
গ্রেগরি পেক

প্রথম যে বিষয়টি আমাকে নাড়া দেয়, তা হলো, ইস্টম্যান কালার! যেকোনো ওয়েস্টার্ন মুভির ট্রেলারেই বিশেষভাবে বলা হতো, ইন ইস্টম্যান কালার! এটা আসলে আকর্ষণীয় আধুনিক রঙের জানান দিয়ে কাছে ডাকা।

দাঙ্গাবিক্ষুব্ধ কাউবয় মুভিগুলোর কাহিনি হতো মহৎ মেসেজের। পাহাড়-পর্বতঘেরা গরুর র‍্যাঞ্চ ও জনপদের ধারেকাছেই থাকবে একটা শহর। শহর মানে আমাদের গঞ্জ আর কি। একটা চিপা রাস্তা, রাস্তার দুই ধারে কিছু ঘর, সরাইখানা, পানশালা। কাউবয়রা দূরপথ পাড়ি দিতে এই শহরেই রাত কাটায়, ফুর্তি-টুর্তি করে। সকালে চলে যায় গন্তব্যে। জন ওয়েন, ক্লিন্ট ইস্টউড, চার্লস ব্রনসন বা গ্রেগরি পেকদের এই সব শহরের শয়তানদের সঙ্গেই মারপিট হয়েছে বেশি। সংঘর্ষ হয়েছে অন্য জায়গায়ও। কাহিনি অনুযায়ী। সব কাউবয়ের হাতেই অস্ত্র থাকে। আগ্নেয়াস্ত্রকে ওরা সোজা বলে ‘গান’। এই কালচারে দুই ধরনের মানুষ। কাউহ্যান্ড, মানে নিরীহ রাখাল আর গানহ্যান্ড, মানে অস্ত্রসহ কাউহ্যান্ড। আর আরেক দল থাকে দাঙ্গাবাজ। খুন-খারাবি-লুটতরাজ করাই তাদের কাজ। তাদের বলা হয় ‘আউট ল’! মজার ব্যাপার, এই নিরীহ বা দাঙ্গাবাজ, কারোরই অস্ত্রের লাইসেন্স নেই। আমাদের ওয়েস্টার্ন হিরোরা বেশির ভাগ মুভিতেই ঘটনাচক্রে জড়িয়ে গিয়েছিল এই দাঙ্গাবাজদের অভয়ারণ্যে। তারাও আউট ল ছিল। এই হিরোরা খুন-লুট করতে গিয়েই ভালো-খারাপের দ্বন্দ্বে খারাপের বিপক্ষে দাঁড়ায়, অর্থাৎ মন্দের মধ্যেই ভালো-মন্দের দ্বন্দ্ব। কাউবয় মুভিগুলোর মূল থিমই ছিল, খারাপের ওপর ভালোর বিজয়। নিষ্ঠুর হৃদয়ে বিবেকের জাগরণ।

হলিউড-কাঁপানো ‘ম্যাকেনাস গোল্ড’-এর ট্রেলার দেখেই স্কুলের বন্ধুরা লাফ দিয়ে উঠি। তখন বিটিভিতে সিরিয়াল ‘সিক্স মিলিয়ন ডলার ম্যান’ আর ন্যাড়া মাথায় ললিপপ চোষা ডিটেকটিভ ‘কোজাক’কে দেখি। ‘ম্যাকেনাস গোল্ডে’, ‘কোজাক’ মানে অভিনেতা টেলি স্যাভালাস আছে। আরও ছিল ওমর শরিফ, গ্রেগরি পেক। আমার চাচাতো-ফুপাতো বোনেরা ওমর শরীফ-ওমর শরীফ বলে পাগল ছিল। আমি ভাবতাম শশী কাপুর-টাইপ ভারতীয় কোনো হলিউড অভিনেতা। পরে জেনেছি, মিসরের। হ্যান্ডসাম হিরো। ত্রিমুখী অ্যাডভেঞ্চারের মজার ওয়েস্টার্ন মুভি ‘ম্যাকেনাস গোল্ড’। তিনবার দেখেছি। এক নিশ্বাসে দেখা যায় পুরো মুভি।

কাউবয় মুভির আউট ল হিরোদের সবকিছুই ডায়নামিক। দৃষ্টি শার্দূলের, ক্ষিপ্রতা চিতার। মুহূর্তে কখন যে রিভলবার কোমর থেকে হাতে উঠে আসবে, চোখে দেখা যাবে না। লক্ষ্য অভেদ্য। নিজের সুতীক্ষ্ণ নিশানা দেখাতে কেউ কেউ দূরে মদের বোতলে গুলি করবে, বোতলের ছিপি খুলে যাবে, বোতল থাকবে অক্ষত! তালি দিয়ে উঠবে সবাই।

ছোট্ট কারণেই আউট লদের মধ্যে শুরু হতে পারে ভয়াবহ গোলাগুলি। তাসের জুয়া খেলছে চার বন্ধু। চুরি চলছে ম্যাজিশিয়ানদের মতো। কেউ চেয়ারের নিচ থেকে বের করছে টেক্কা, কেউ টেবিলের নিচ থেকে আলগোছে বের করছে কুইন। ধরা পড়ল, তো শুরু হয়ে গেল ধুড়ুম ধুড়ুম ফায়ার!

টেলি স্যাভালাস
টেলি স্যাভালাস

কাউবয় মুভির দেখার মতো ফাইট হচ্ছে ডুয়েল ফাইট। মানে, দুজনের মুখোমুখি ফাইট। হাতাহাতি না, রিভলবারের। এ ডুয়েল দেখতে নিরাপদ দূরত্বে উৎসাহী দর্শকেরাও জড়ো হন কখনো কখনো। নির্দিষ্ট দূরত্বে মুখোমুখি দাঁড়ায় দুজন। স্থির দৃষ্টি, হাত কোমরের রিভলবারের বাঁটে। হঠাৎ ধুরুম! যে আগে তীক্ষ্ণ নিশানায় প্রতিপক্ষকে ফেলে দিতে পারবে, সে-ই জয়ী। ডুয়েলে হারা মানে স্বর্গে চলে যাওয়া।

একটা মজার ডুয়েলের কথা আমার এখনো মনে আছে। ‘দ্য গুড, দ্য ব্যাড অ্যান্ড দ্য আগলি’ মুভিতে ক্লিন্ট ইস্টউডের সঙ্গে অন্য দুজনের। বিষয়টা ছিল ট্রায়াঙ্গুলার। ত্রিমুখী। অভিসার হলে হচ্ছিল ডুয়েলটি। আসলে ঘোষিত ডুয়েল না। তিনজনের বারগেইন চলছে একটা কবরস্থানে দাঁড়িয়ে। সবার হাত কোমরের রিভলবারের বাঁটের কাছাকাছি। প্রায় পাঁচ মিনিটের এই অ্যাকশন ম্যুডের কথোপকথনে পুরো হলে পিনপতন নীরবতা। হঠাৎ একজন রিভলবারে হাত দিয়ে দিল। সঙ্গে সঙ্গে গুলি চালাল ক্লিন্ট ইস্টউড। ফ্র্যাকশন অব সেকেন্ডে। পড়ে গেল ও খুঁড়ে রাখা কবরের পাশে। ইগলের চোখে দাঁড়ানো প্রতিপক্ষের সঙ্গে কথা বলছে ক্লিন্ট। পড়ে থাকা প্রতিপক্ষ শোয়া অবস্থায়ই আবার অস্ত্র তাক করল ক্লিন্টের দিকে। ওর দিকে না তাকিয়েই দ্বিতীয়বার শুট করল ক্লিন্ট ইস্টউড। গড়িয়ে বেচারা পড়ে গেল কবরের মধ্যে। পুরো হলের চেয়ার সব ক্যাঁচ ক্যাঁচ করে উঠল, অর্থাৎ এতক্ষণ টেনশনে সবাই স্থির ছিল, এখন রিল্যাক্সড। তাই চেয়ারের সম্মিলিত ক্যাঁচ ক্যাঁচ। পয়সা উশুল।

এত কিছুর মধ্যেও এই সব জনপদে আছে আইনের রক্ষক। শেরিফ ডাকা হয় তাকে। অনেকটা থানার ওসি যেমন, তেমন। তার শার্টের বুকে ঝোলে ধাতব স্টার। তা দেখেই সবাই শেরিফকে চেনে। যত বড় মাস্তান আউট ল-ই হোক, শেরিফকে এড়িয়ে চলে। আইনের লোক সে জন্য না, সেরের ওপরে সোয়া সের, তাই এই পদে বহাল হয়েছে শেরিফ।

আউট লদের নিজস্ব কিছু আইনও ছিল। যেমন কারও পিঠে গুলি করা যাবে না। পিঠে গুলি করা মানে, সে তো ডুয়েল লড়তে আসেনি। ওয়েস্টার্ন কাউবয়দের জগতে কাপুরুষের জায়গা নেই। দুর্ধর্ষ আর নিষ্ঠুর হলেও নারীদের প্রতি ছিল সব কাউবয়ের অগাধ সম্মান। মেয়েদের অপমান করলে তার শাস্তি মৃত্যু। সে যে-ই হোক। বেদ বাক্যের মতো ওয়েস্টার্ন জনপদের আইন, ‘এখানে মেয়েরা সম্মানিত!’

‘জেসিস গার্লস’ ছবির পোস্টার
‘জেসিস গার্লস’ ছবির পোস্টার

এক মুভিতে দেখেছিলাম ট্রেনিং দেওয়া ঘোড়া দাবড়িয়ে বুনো গরুর পাল তাড়িয়ে নিজেদের র‍্যাঞ্চের দিকে নিয়ে যাচ্ছে কাউবয়রা। সে এক দৃষ্টিনন্দন দৃশ্য। ট্রেইনড ঘোড়া দাবড়িয়ে বুনো ঘোড়া ধরার দৃশ্য আরও মজার। দৌড়িয়ে দৌড়িয়ে বুনো ঘোড়াকে রশির লুপ ছুড়ে ধরে পোষ মানানো হয়। দড়ির এই লুপকে বলে ‘ল্যাসো’। ওয়েস্টার্ন মুভিতে উন্নত জাতের স্ট্যালিয়ন, এপালুসা বা মাসট্যাং-জাতীয় ঘোড়া ব্যবহার হয়েছে বেশি। এই ঘোড়াগুলো পরিশ্রমী, আর পাহাড়-মাটি-পানিতে সমান দৌড়ায়।

বাংলাদেশে দেওয়ান নজরুল ‘দোস্ত দুশমন’ ছবি দিয়ে ওয়েস্টার্ন মুভির আদলে ছবি নির্মাণে সফল হন। পরে তৈরি করেন আরেক ওয়েস্টার্ন ধাঁচের মুভি ‘আসামি হাজির’। এই মুভিগুলো নির্মাণে তাঁর সহযোগীর ভূমিকায় ছিলেন জসিমের জ্যাম্বস গ্রুপ। কিন্তু ওয়েস্টার্ন কাউবয় মুভিতে যে বিশাল সেট আর আয়োজনের দরকার, তা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সে সময়ে সম্ভব হয়নি। তবুও তাঁর এই দুঃসাহসিক চেষ্টাকে সাধুবাদ দিতেই হবে।

একটা কাউবয় মুভি দেখলাম মধুমিতা হলে, ‘কিল দেম অল অ্যান্ড কাম ব্যাক অ্যালোন’। খুব ভালো লাগল। বড় ভাইয়ের বন্ধু শেলি ভাইকে বললাম। শুনে মিটিমিটি হাসলেন। তিনিও দেখেছেন মুভিটি। হেসে কুইজের স্টাইলে বললেন, ‘এই মুভিতে একটা জিনিস কখনো দেখা যায় নাই। বল তো, সেটা কী?’ চিন্তায় পড়লাম। বললাম, ‘নদী।’ বললেন, ‘উঁহু।’ বললাম, ‘রাইফেল।’ বললেন, ‘উঁহু।’ বললাম, ‘ল্যাসো দিয়ে ঘোড়া ধরা।’ বললেন, ‘উঁহু। চলো আজকে তোমাকে আবার ছবিটা দেখাই।’ বুঝলাম তাঁরও দ্বিতীয়বার মুভিটা দেখার ইচ্ছা। মধুমিতা হলে ছবি শুরুর আগে আগে ফিসফিসিয়ে বললেন, ‘এই মুভিতে কোনো অভিনেত্রী নাই। খুব মনোযোগ দিয়ে দেখো।’

হায় হায়! টর্চ লাইট দিয়েও কোনো অভিনেত্রী খুঁজে পেলাম না। আরে? আগে তো খেয়াল করিনি? অভিনেত্রী ছাড়া মুভি হয়?

কয়েনের উল্টো পিঠও আছে। হঠাৎ করেই টাইট জিনস আর ফেল্ট হ্যাটে ঢাকায় উপস্থিত হয়ে গেল কাউগার্ল মুভি ‘জেসিজ গার্লস’! এক ধর্ষিত মেয়ের কাহিনি। ধর্ষিত হয়ে ঘুরে দাঁড়িয়ে হয়ে উঠল দুর্ধর্ষ ও ভয়ংকর ওয়েস্টার্ন আউট ল! যেন হুবহু ‘দস্যু ফুলন দেবী’র জীবনকাহিনি।

তাহলে কি দস্যু ফুলন দেবী চুপি চুপি মধুমিতা হলে এসে ‘জেসিজ গার্লস’ দেখেছিলেন?