পরিচালক হতে চান ফারুক

ফারুক। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
ফারুক। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

‘সিনেমা পরিচালনা করার খুব ইচ্ছা আমার। জানি না, সেটা করে যেতে পারব কি না।’ বললেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের বরেণ্য নায়ক ফারুক। জন্মদিনে তাঁর ইচ্ছার কথা জানতে চাওয়া হয়। গতকাল ১৮ আগস্ট ছিল চিত্রনায়ক ফারুকের জন্মদিন।

১৯৪৮ সালের ১৮ আগস্ট জন্ম ফারুকের। স্কুলজীবন থেকে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে যান। ১৯৬৬ সালে তিনি ছয় দফা আন্দোলনে যোগ দেন এবং এ সময় তাঁর নামে মামলা হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ২৩ বছর বয়সে ‘জলছবি’ সিনেমা দিয়ে তাঁর অভিনয়জীবনের শুরু। এরপর আর এই অঙ্গন থেকে বের হননি। এখনো অভিনয়ের সঙ্গেই আছেন। অসংখ্য ছবিতে অভিনয়ের পাশাপাশি কিছু প্রযোজনাও করেছেন। তবে দীর্ঘ অভিনয়জীবনে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কখনো ছবি পরিচালনার কাজটি করা হয়নি।

ফারুক বলেন, ‘দেশভাগ নিয়ে ছবি নির্মাণের ভাবনা অনেক দিনের। মানবিক গল্পের কিছু ছবির ভাবনাও মাথায় ঘুরছে। অটিস্টিক শিশু আর রাজনীতি নিয়ে ছবি নির্মাণ করার ইচ্ছা আছে। এসব আমি করতে পারব কি না, জানি না। কিংবা সময় পাব কি না, বলতে পারি না। তবে সময় আসার পরও টু-কে রেজ্যুলেশনের প্রজেক্টর মেশিন যত দিন আসবে না, দেশের প্রেক্ষাগৃহ যত দিন ঠিক হবে না, তত দিন সিনেমা বানানো আমার জন্য ঠিক হবে না। কারণ সিনেমা তো মানুষের কাছে নিয়ে যেতে হবে। সিনেমা বানিয়ে ঘরে বসে থাকলে হবে না।’

ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীরা জন্মদিন পালন করলেও এসবে আগ্রহ নেই ফারুকের। বরেণ্য এই চিত্রনায়কের জন্মদিনে টেলিভিশন চ্যানেলে অনুষ্ঠান আর পত্রিকায় সাক্ষাৎকার ও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তবে একসময় আনন্দ নিয়ে জন্মদিন পালন হতো ফারুকের। বললেন, ‘ছোটবেলায় হইহুল্লোড় করে আমার জন্মদিন পালন করা হতো। মায়ের মৃত্যুর পর তা বন্ধ হয়ে যায়। চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরুর পর দেখেছি জন্মদিনের ব্যাপারটি খুব বড় আয়োজনে পালন করা হতো। কারণ আমাদের সহকর্মীরা দিনটি ঘিরে অন্য রকম সব আয়োজন করত। কিন্তু আমাকে খুব একটা টানত না। ১৯৭৫ সালের পর নিজে থেকে তো জন্মদিন পালন করা বন্ধ করে দিয়েছি। তবে শুটিং ইউনিটের কেউ জন্মদিন পালন করলে নিষেধ করতে পারতাম না। কারণ ওরা আমাকে ভালোবেসে এসব করে, আমি তো কষ্ট দিতে পারি না।’

দীর্ঘ অভিনয়জীবনে অসংখ্য চলচ্চিত্রে কাজ করলেও ‘সুজন সখী’ ফারুকের সবচেয়ে প্রিয় চলচ্চিত্র। পরবর্তী সময় এই ছবি আবারও তৈরি হয়। কিন্তু প্রথম ‘সুজন সখী’ ছবিটি দর্শকের এখনো পছন্দের। ভারতের কলকাতায়ও রিমেক করা হয় ছবিটি। ফারুক বলেন, ‘আতা ভাইয়ের (খান আতাউর রহমান) “সুজন সখী”র মতো আর কোনো ছবি পরবর্তীতে নির্মিত না হওয়ার কারণ আছে। সেই ছবির মধ্যে গানের ব্যাপারটি সবচেয়ে বড় কারণ। এই ছবির “প্রেম ছাড়া প্রাণে বাঁচি না” লাইনটি এতই সত্য যে, তা প্রত্যেক দর্শককে স্পর্শ করেছে। আসলেই, ভালোবাসা ছাড়া পৃথিবী নেই, ভালোবাসতে হবে, ভালোবাসা থাকতেই হবে।’