বাবার স্মৃতি বিক্রি করছেন ছেলেরা

আরকে স্টুডিওর প্রবেশদ্বার
আরকে স্টুডিওর প্রবেশদ্বার

বাবা বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেতা রাজ কাপুর ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আরকে স্টুডিও। এবার এই স্টুডিও বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁর তিন ছেলে রণধীর কাপুর, ঋষি কাপুর ও রাজীব কাপুর। ‘মুম্বাই মিরর’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঋষি কাপুর জানিয়েছেন, আরকে স্টুডিও বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। এখন এই স্টুডিওর রক্ষণাবেক্ষণ করা একেবারেই সম্ভব হচ্ছে না। তাঁদের মতে, এটা ‘বিশাল সাদা হাতি!’ আর তা পুষতে গিয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে পুরো কাপুর পরিবারকে। ফলে বাবার এই স্টুডিও বিক্রি করে দিতে পারলেই বাঁচেন ছেলেরা।

মুম্বাইর দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম চেম্বুরের আরকে স্টুডিও। বড় পর্দায় ঝড় তোলা ‘আওয়ারা’ (১৯৫১), ‘শ্রী ৪২০’ (১৯৫৫), ‘মেরা নাম জোকার’ (১৯৭০) ও ‘ববি’র মতো অসংখ্য ছবির শুটিং হয়েছে এই স্টুডিওতে। ৭০ বছরের পুরোনো এই স্টুডিও আরব সাগরের তীরবর্তী আর পাঁচটা স্টুডিওর মতো নয়, আরকে স্টুডিও ভারতীয় চলচ্চিত্রের এক ঐতিহাসিক দলিল।

‘মুম্বাই মিরর’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঋষি কাপুর বলেন, ‘আমাদের ভাইদের সম্পর্ক খুবই মজবুত। কিন্তু কেউ জানে না আমাদের ছেলে বা নাতিরা কী করবে? পরের প্রজন্মের কথা বলতে পারব না। সেখানে পারিবারিক মতভেদ আসতেই পারে। হয়তো আইনজীবীর দ্বারস্থ হয়ে মামলা মোকদ্দমা করে প্রচুর অর্থের বিনিময়ে এই স্টুডিওর শেষ হবে। কিন্তু বাবা যদি বেঁচে থাকতেন, তাহলে তিনি কখনোই চাইতেন না তাঁর ভালোবাসা আর পরিশ্রম দিয়ে গড়ে তোলা আরকে স্টুডিও আদালতের বিচারাধীন বিষয় হয়ে উঠুক।’

গত বছর আরকে স্টুডিওর অগ্নিকাণ্ডের সময় কাপুর পরিবারের সদস্যরা
গত বছর আরকে স্টুডিওর অগ্নিকাণ্ডের সময় কাপুর পরিবারের সদস্যরা

গত বছর আরকে স্টুডিওর একটা অংশে আগুন ধরে যায়। সেই অগ্নিকাণ্ডে আরকে ফিল্মসের অনেক কিছু পুড়ে যায়। এই যেমন নার্গিস থেকে শুরু করে বৈজন্তীমালা এমনকি ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন অভিনীত বিভিন্ন ছবির কস্টিউম আর জুয়েলারি। পুড়ে যাওয়া সামগ্রীর মধ্যে আরও ছিল ‘মেরা নাম জোকার’ ছবিতে ব্যবহার করা মুখোশ আর ‘জিস দেশ মে গঙ্গা বেহতি হ্যায়’ ছবির বন্দুক। ‘আওয়ারা’, ‘সঙ্গম’ ও ‘ববি’ ছবির সেই বিশাল পিয়ানোটাও পুড়ে গেছে।

কবে নাগাদ এই স্টুডিও বিক্রি হচ্ছে? ঋষি কাপুর বলেন, ‘তা এখনই বলা সম্ভব নয়। বিক্রির ব্যাপারে আলোচনা মাত্র শুরু হয়েছে, অবশ্যই সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।’