কবরীর ১২ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার উধাও

সারাহ বেগম কবরী
সারাহ বেগম কবরী

বাংলাদেশের বরেণ্য অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরীর বাসা থেকে ১২ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার ও ৫ লাখ টাকা উধাও হয়ে গেছে।

এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কবরীর গাড়িচালক মোস্তফা, গৃহপরিচারিকা শেলি ও গৃহপরিচারক কাওসার মিয়াকে গ্রেপ্তার করে গুলশান থানা-পুলিশ। ঘটনার ৩০ দিন পার হয়ে গেলেও মূল আসামি রতন পালকে এখনো ধরতে পারেনি পুলিশ। এদিকে ভয়াবহ এই চুরির ঘটনায় কবরীর বাসার নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান সেবা গ্রুপের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও এনেছেন কবরী।

প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে আজ বৃহস্পতিবার কবরী জানান, চুরির বিষয়টি তিনি প্রথম টের পান গত ২০ আগস্ট সকালে। ঘটনায় হতবাক কবরী তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকার গুলশান থানায় হাজির হয়ে মামলা করেন। মামলা নম্বর ২০। নানা কারণে চুরির বিষয়টি এত দিন সংবাদমাধ্যমকে জানাননি তিনি।

মামলার এজাহারে কবরী উল্লেখ করেন, পূর্বপরিচিত রতন পাল ১৫ বছর পর তাঁর বাসায় আসেন। বিভিন্ন পারিবারিক অসুবিধার কথা বললে কবরী তাঁকে বাসায় আশ্রয় দেন। এপ্রিল থেকে রতন পাল কবরীর গুলশানের বাসায় থাকা শুরু করেন। এই সময়টাতে জরুরি প্রয়োজনে দেশের বাইরে থাকা কবরী তাঁকে বিশ্বাস করে বাসার দেখাশোনার যাবতীয় দায়িত্ব দিয়ে যেতেন। কয়েক মাস পর তাঁর কথাবার্তা সন্দেহজনক মনে হলে ২০ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১টায় কবরী তাঁর বাসার জিনিসপত্র সব ঠিকঠাক আছে কি না, দেখেন। টের পেয়ে রতন পাল কাউকে কিছু না বলে সুকৌশলে বাসা থেকে পালিয়ে যান। বাসার সবকিছু তন্নতন্ন করে খোঁজার পর একটা সময় কবরী দেখলেন, তাঁর আলমারি থেকে সাতটি সোনার চুড়ি, দুটি সীতাহার, চারটি স্বর্ণের আংটি, যার মূল্য আনুমানিক ১২ লাখ টাকা এবং ৫ লাখ টাকাসহ মোট ১৭ লাখ টাকা ও বেশ কিছু মালামাল এপ্রিল থেকে ২০ আগস্টের মধ্যে চুরি হয়। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর কবরী একাধিকবার রতন পালের মোবাইলে ফোন করে বাসায় আসার কথা বলার পরও আসেননি। বর্তমানে তাঁর মোবাইল বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

চুরির বিষয়টি এত দিন সংবাদমাধ্যমকে কেন জানাননি? ‘এটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাজ। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমি মামলা করেছি। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গেও এ নিয়ে কথা হয়েছে। বারবার শুধু আশ্বসাই পেয়েছি। দুঃখজনক হচ্ছে, ঘটনার এত দিন পার হয়ে গেলেও এখনো মূল আসামি ধরা পড়ল না! এদিকে ঘটনার কয়েক দিন পরই চিকিৎসাসেবা নিতে আমি দেশের বাইরে চলে যাই। তিন দিন হয়, ঢাকায় এলাম।’ বললেন কবরী।

এদিকে কবরীর বাসায় চুরির ঘটনাটি সম্পর্কে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাড়ির কেয়ারটেকার, গাড়ির চালক ও বুয়া—এই তিন আসামিকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। চুরির সঙ্গে তিনজনের সম্পৃক্ততার প্রাথমিক প্রমাণ মিলেছে। তাঁদের মধ্যে বাড়ির কেয়ারটেকার মূল দোষী, তাঁর রিমান্ড চেয়েছিলাম কিন্তু আদালত তা মঞ্জুর করেননি। ঘটনার পর থেকেই মূল আসামির ফোন বন্ধ পাচ্ছি। তাঁর কোনো হদিস পাচ্ছি না। চেষ্টা করছি খুঁজে বের করার। ম্যানুয়াল ও তথ্যপ্রযুক্তি—দুই দিক দিয়েই আগাচ্ছি, মূল আসামিকে ধরার।’