হাসিনা: এক কন্যার গল্প

‘হাসিনা: অ্যা ডটারস টেল’ তথ্যচিত্রের দৃশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছবি সংগৃহীত
‘হাসিনা: অ্যা ডটারস টেল’ তথ্যচিত্রের দৃশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছবি সংগৃহীত

ছুরি হাতে কে তাড়া করেছিল? ২৮৫০৩ নম্বরপ্লেটের গাড়িটি কার? জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় মেয়ে শেখ হাসিনার জীবনসংগ্রামের সঙ্গে কী সম্পর্ক এই নম্বরপ্লেটের? তা জানা যাবে ‘হাসিনা: আ ডটারস টেল’ তথ্যচিত্র থেকে। জন্মদিনের আগে গতকাল ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই তথ্যচিত্রের ট্রেলার প্রকাশিত হয়েছে। ২ মিনিট ৪৮ সেকেন্ড ব্যাপ্তির এই ট্রেলার প্রকাশের পর থেকে সাড়া ফেলেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার বর্ণনায় এই তথ্যচিত্র এরই মধ্যে দেখা হয়ে গেছে তিন লাখবারেরও বেশি।


গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআই ও অ্যাপলবক্স ফিল্মসের যৌথ প্রচেষ্টায় নির্মিত হয়েছে ডকু-ড্রামা ‘হাসিনা: আ ডটারস টেল’। দুই বছরের গবেষণা ও তিন বছরের নিরলস প্রচেষ্টায় এই ডকু-ড্রামা নির্মিত হয়েছে। ৭০ মিনিট দৈর্ঘ্যের তথ্যচিত্রটি অক্টোবরের যেকোনো সময়ে মুক্তি পাবে।

অ্যা ডটারস টেল’ তথ্যচিত্রের শুটিংয়ের দৃশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা, ছবি সংগৃহীত
অ্যা ডটারস টেল’ তথ্যচিত্রের শুটিংয়ের দৃশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা, ছবি সংগৃহীত

নির্মাতা সূত্রে জানা গেছে, এই তথ্যচিত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবনের বিষাদ, বিজয় ও নৈকট্যের গল্পগুলোকে নিজের স্বাধীন দৃষ্টিভঙ্গিতে তুলে ধরেছেন পরিচালক রেজাউর রহমান খান পিপলু। তিনি ‘হাসিনা’ চরিত্রটিকে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) নাটকীয় কিন্তু আন্তরিক ভঙ্গিতে চিত্রায়ণ করেছেন বিভিন্ন ভূমিকায়—কখনো বঙ্গবন্ধুর মেয়ে বা কারও বোন, কখনো একজন নেতা বা পুরো দেশের ‘আপা’ হিসেবে এবং সবকিছুর ঊর্ধ্বে তাঁর ব্যক্তিসত্তাকে।

নির্মাতা জানান, ‘হাসিনা, আ ডটারস টেল’ ডকুফিল্মটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৭০ মিনিট। যেখানে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও তাঁর পরিবারের সদস্যদের দেখা যাবে। উঠে আসবে শেখ হাসিনার সাধারণ জীবনের অসাধারণ কিছু মুহূর্ত। যেখানে তিনি কখনো মেয়ে, কখনো মা, কখনো বোন আর কখনো আমজনতার নেত্রী হিসেবে দেখা দেবেন।

ট্রেলার মুক্তি পেলেও এখনো এই তথ্যচিত্রের পোস্ট  প্রডাকশন শেষ হয়নি। নির্মাতার ভাষায়, ‘শুটিংয়ের যে একটা শারীরিক চাপ ছিল, তা চলে গেছে। কিছু প্যাচওয়ার্ক বাকি। বলতে পারি, ৯০ ভাগ কাজ শেষ। মিউজিক, কালার গ্রেডিং চলছে।’

‘হাসিনা: অ্যা ডটারস টেল’ তথ্যচিত্রের পরিচালক রেজাউর রহমান খান পিপলু
‘হাসিনা: অ্যা ডটারস টেল’ তথ্যচিত্রের পরিচালক রেজাউর রহমান খান পিপলু

‘হাসিনা, আ ডটারস টেল’ তথ্যচিত্রের শুটিং কোথায় কোথায় করেছেন? ‘আপাকে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) তো আমি সবচেয়ে বেশি পেয়েছি গণভবন, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ও গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায়। এ ছাড়াও অনেক সময় সরকারি কিছু অনুষ্ঠানে দৃশ্য ধারণ করেছি। ছবিতে আমরা দেখব, বাবার (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) মৃত্যুর পর আপা জার্মানি, ব্রাসেলস থেকে শুরু করে দিল্লি—যেখানেই গেছেন সেখানে আমাদের যেতে হয়েছে। আমি তথ্যচিত্রটাকে এমনভাবে পরিকল্পনা করেছি, তাঁর সঙ্গে শুটিংয়ের ব্যাপারটা দেশেই রেখেছি। বাকি জায়গাগুলোতে তাঁর যাওয়ার দরকার পড়েনি।’ বললেন নির্মাতা রেজাউর রহমান খান। সবাই তাঁকে পিপলু নামেই চেনেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবনী নিয়ে কাজ করার ব্যাপারটা কেমন ছিল? পিপলু বলেন, ‘আমি কিন্তু এই কাজটা করার সময় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কাজ করিনি। একজন সাধারণ শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যাকেই দেখছি। এর বেশি আর কিছু দেখার দরকার পড়ে নাই। আমার ছবিটাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দরকার পড়েও নাই, আমি দেখতেও যাইনি। আমাকেও সেই স্বাধীনতা দিয়েছেন। বলেছেন, ছবিটাকে আমি যেভাবে দেখতে চাই, সেভাবেই যেন কাজটা করি। বাঁধা-ধরা কোনো ব্রিফিং ছিল না।’

‘হাসিনা: আ ডটারস টেল’ এই তথ্যচিত্রে কাজ করার ব্যাপারটা একজন নির্মাতার জীবন স্বপ্নপূরণের মতো ব্যাপার বলে মনে করছেন পিপলু। ‘শুধু কাজ হিসেবে চিন্তা করলে যেকোনো চলচ্চিত্র নির্মাতার জন্য স্বপ্নের প্রকল্প। কীভাবে যেন এটা আমি পেয়েও গেছি। আমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তা এক কথায় খুবই চমৎকার। এটা এমন একটা তথ্যচিত্র, যেটাতে নিরীক্ষা আছে। বলার ধরনে ভিন্নতা আছে। কেন এত সময় লাগল ছবিটা দেখার পর সবাই বুঝতে পারবেন।’

‘হাসিনা: অ্যা ডটারস টেল’ তথ্যচিত্রের শুটিংয়ের দৃশ্য, ছবি সংগৃহীত
‘হাসিনা: অ্যা ডটারস টেল’ তথ্যচিত্রের শুটিংয়ের দৃশ্য, ছবি সংগৃহীত

‘হাসিনা: আ ডটারস টেল’ তথ্যচিত্রের আবহ সংগীতের কাজ করেছেন কলকাতার দেবজ্যোতি মিশ্র। চিত্রগ্রাহক হিসেবে ছিলেন সাদিক আহমেদ। প্রযোজনা করেছে সেন্টার ফর রিচার্স অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)।