জীবনে প্রথম নির্বাচনে জিতেছি: লাভলু

সালাহউদ্দিন লাভলু
সালাহউদ্দিন লাভলু

ছোট পর্দার পরিচালকদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ডের নির্বাচনে সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন পরিচালক সালাহউদ্দিন লাভলু। সংগঠনকে এগিয়ে নিতে কী কী উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন নতুন সভাপতি? সেসব নিয়ে কথা বললেন নন্দিত এই নাট্যনির্মাতা।

নির্বাচনে জিতে কেমন লাগছে?
জীবনে প্রথম কোনো নির্বাচনে জিতেছি। একটা ভালো লাগা কাজ করছে। যাঁরা আমাকে নির্বাচিত করেছেন, তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞতা। বিজয়ের অনুভূতি একদিকে অসাধারণ ভালো লাগার, অন্যদিকে চাপের। দায়িত্বের চাপ। এখন থেকে আমাকে আরও বেশি দায়িত্ববান হতে হবে, ভেতরে এই অনুভূতি কাজ করছে।

সংগঠনের জন্য কোন কাজগুলো আগে শুরু করবেন?
খুব বড় কিছু করব, এ রকম আশা-ভরসা দিতে চাই না। শুরুতে পরিচালকদের সম্মান পুনরুদ্ধার করতে চাই। পরিচালক হচ্ছেন ‘ক্যাপ্টেন অব দ্য শিপ’। অথচ এখন এমন অবস্থা হয়েছে, মনে হয় পরিচালক ‘ম্যানেজার অব দ্য শিপ’। তাঁদের সম্মান ও পেশাদারের মর্যাদা ফিরিয়ে আনার কাজটি করতে চাই। তাঁদের স্বার্থ সংরক্ষণ ও পারিশ্রমিকের বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাই।
দ্বিতীয়ত, আমাদের তরুণ প্রজন্ম অনেক মেধাবী। পুরোনোরাও মেধাবী। কিন্তু আমাদের কাজের সুস্থ পরিবেশ নেই। সুন্দর কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার কাজটা জরুরি ভিত্তিতে করতে চাই, যাতে প্রতিটি পরিচালক তাঁর সৃজনশীলতা প্রকাশ করার যথাযথ প্ল্যাটফর্ম পান। একজন পরিচালক অনেক মেধাবী, অথচ কাজ করার সুযোগই পেলেন না, তা তো হয় না। প্রতিটি মেধাবী মানুষের কাজের সুযোগ দরকার, প্ল্যাটফর্মটা জরুরি। আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিবছর দুজন মেধাবী পরিচালককে কর্মশালা করতে বিদেশে পাঠাব।
তৃতীয়ত, পরিচালকদের কল্যাণের জন্য একটি তহবিল গঠন করব। অসচ্ছল সদস্যদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন এবং আকস্মিক মৃত্যুতে পরিবারকে সহযোগিতা দিতে চাই।

নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর সালাহউদ্দিন লাভলু ও এস এ হক অলিক
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর সালাহউদ্দিন লাভলু ও এস এ হক অলিক

আপনাদের প্যানেলের বাইরের কয়েকজন বিজয়ী হয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে কাজ করতে কেমন লাগবে?
যাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁরা সবাই আমার সহযোগী। আমি এখন সংগঠনের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অভিভাবক। আমার দায়িত্ব হচ্ছে সংগঠনের স্বপ্ন পূরণে সবাই মিলে কাজ করা। আমি চাই সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে।

টেলিভিশনকে এত দিন শিল্প ঘোষণা করা হয়নি কেন?
আমাদের অনেকগুলো যুক্তি আছে। টেলিভিশন মিডিয়ায় যে পরিমাণ অর্থের লেনদেন হয়, সেটা কিন্তু কম নয়। কখনো দেখা গেছে সেটা চলচ্চিত্রের থেকেও বেশি। একসময় আমাদের ক্যামেরাম্যান, এডিটর, লেখক, পরিচালকেরা ছিলেন শৌখিন। এখন সবাই পেশাদার। যখন কোনো কাজ পেশা হয়, যে মাধ্যমে কয়েক লাখ মানুষের জীবনযাপন জড়িয়ে যায়, সেটাকে শিল্প ঘোষণার দাবি আমরা করতেই পারি। এই দাবিগুলোই আমরা সরকারের কাছে তুলে ধরব। যে প্রক্রিয়ায় দাবিগুলো তোলা দরকার ছিল, এত দিন সেই উদ্যোগ নেওয়াই হয়নি। সে জন্যই টেলিভিশন আজও শিল্প হয়নি।

দারুণ উৎসবমুখর ছিল আপনাদের নির্বাচন। ভোট গণনায় অনেক সময় গেছে। কেমন আনন্দ করলেন?
শুধু পরিচালক নয়, অভিনয়শিল্পীরাও এসেছিলেন নির্বাচনের সময়। রাতে সবাই মিলে খেলা দেখেছি। একদিকে ভোট গণনা চলছিল, অন্যদিকে চলছিল বাংলাদেশের খেলা। সে এক চরম উত্তেজনায় ভরা সময়। ভেতরে সবার ফোন বন্ধ, কিছুই জানতে পারছি না যে গণনা কত দূর এগুলো। এদিকে হঠাৎ হঠাৎ সবাই আলোচনা করছিল কে এগিয়ে রয়েছে।