এক মঞ্চে মুখোমুখি বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পীরা

অনুষ্ঠানের প্রতিযোগী ও উপস্থাপকদের নাচের একটি মুহূর্ত। ছবি: নাগরিক টিভির সৌজন্যে
অনুষ্ঠানের প্রতিযোগী ও উপস্থাপকদের নাচের একটি মুহূর্ত। ছবি: নাগরিক টিভির সৌজন্যে

হাসি, কান্না, উত্তেজনা আর জীবনের ছোট ছোট গল্প দেখা যাবে টিভিতে। তবে কোনো ধারাবাহিক কিংবা খণ্ড নাটকে নয়, দেখা যাবে নাচ নিয়ে তৈরি রিয়েলিটি শো ‘বাজলো ঝুমুর তারার নূপুর’-এ। আগামী সপ্তাহ থেকেই তারকাবহুল এ অনুষ্ঠান দেখা যাবে নাগরিক টিভির পর্দায়। অনুষ্ঠানটি প্রচারে আসার আগে এর কয়েক ঝলক দেখার সুযোগ পেয়েছিল প্রথম আলো। সেই অভিজ্ঞতা নিয়েই আজকের প্রতিবেদন।

তারকারা লড়বেন তারকার বিরুদ্ধে—এমন পরিকল্পনা নিয়ে দেশের টিভি চ্যানেলগুলো এর আগে রম্য বিতর্কের মতো আয়োজন করেছে। কিন্তু এক দেশের তারকারা লড়বেন আরেক দেশের তারকা শিল্পীদের সঙ্গে, ছুড়ে দেবেন চ্যালেঞ্জ—এমন লড়াই টিভির দর্শকদের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা। বাংলাদেশের জান্নাতুল পিয়া, আশনা হাবিব ভাবনা, সাফা কবির, ঈশানা, অমৃতা খান ও স্পর্শিয়া ছিলেন আমাদের দেশের প্রতিনিধি হয়ে। আর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধি হয়ে বাংলাদেশের নাচের রিয়েলিটি শোতে অংশ নিয়েছেন কলকাতার স্টার জলসা চ্যানেলের ‘ইচ্ছে দুপুর’ সিরিয়ালের রিমঝিম, ‘পুণ্যি পুকুর’-এর মোনামি, ‘জলনূপুর’-এর লাভলি, ‘মা’ সিরিয়ালের ছোট্ট তিথি, জি বাংলার ‘অগ্নিজল’ সিরিয়ালের সোহিনী ও বিগ বস বাংলার চ্যাম্পিয়ন এনা সাহা। তারকার আনাগোনা শুধু এখানেই শেষ নয়, বিচারকের আসনেও দুই বাংলার জনপ্রিয় তারকাদের উপস্থিতি ছিল। নিয়মিত বিচারকের আসনে বসেছেন বাংলাদেশের চিত্রতারকা ইলিয়াস কাঞ্চন ও টালিউডের অভিনেত্রী শতাব্দী রায়। আর বিভিন্ন পর্বে অতিথি বিচারকের আসনে বসেছেন বাংলাদেশের সংগীতশিল্পী আঁখি আলমগীর, অভিনেতা সজল, চিত্রতারকা মৌসুমী, ফেরদৌস ও চলচ্চিত্র নির্মাতা তৌকীর আহমেদ; কলকাতার সংগীতশিল্পী জোজো, অনিন্দ্য, অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র ও নৃত্যশিল্পী তনুশ্রী শঙ্কর।

অনুষ্ঠানের দুই বিচারক বাংলাদেশের ইলিয়াস কাঞ্চন ও কলকাতার শতাব্দি রায়
অনুষ্ঠানের দুই বিচারক বাংলাদেশের ইলিয়াস কাঞ্চন ও কলকাতার শতাব্দি রায়

‘বাজলো ঝুমুর তারার নূপুর’ অনুষ্ঠানে অভিনেত্রী জাকিয়া বারী মম, সাদিয়া জাহান প্রভা ও চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিও অতিথি প্রতিযোগী হিসেবে নেচে বিভিন্ন পর্বে তাক লাগিয়ে দেবেন দর্শকদের। অন্যদিকে, ভারত থেকে অতিথি প্রতিযোগী হিসেবে থাকবেন অভিনেত্রী ঋ, পায়েল সরকার ও জি বাংলার ‘রাশি’ সিরিয়ালের নামভূমিকার অভিনেত্রী গীতশ্রী।

নাগরিক টিভির কার্যালয়ে বসে এ অনুষ্ঠানের কয়েক ঝলক দেখেই বোঝা গেল, এর পরতে পরতে নাচের সঙ্গে মিলেমিশে আছে নাটকীয় অনেক সত্যি ঘটনা। কখনো ‘ঝিলিক’ চরিত্রে তিথিকে দেখা যাবে নাচতে নাচতে পায়ের আঙুল কেটে ফেলতে, কখনো সাফাকে দেখা যাবে নাচের বিট মিস হয়ে যাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়তে। আবার মঞ্চেই নাচতে গিয়ে ভাবনার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়াও দর্শককে করে তুলবে বিচলিত! তবে এই গল্পগুলোর কোনোটাই যে মেকি বা নাটুকে নয়, তা বোঝা যাবে প্রতিটি পর্বের ঘটনাপ্রবাহ দেখলে।

কলকাতার নৃত্যশিল্পীর সঙ্গে বাংলাদেশের স্পর্শিয়া
কলকাতার নৃত্যশিল্পীর সঙ্গে বাংলাদেশের স্পর্শিয়া

বাজলো ঝুমুর তারার নূপুর অনুষ্ঠানটি নিয়ে নাগরিক টিভির অনুষ্ঠান বিভাগের প্রধান কামরুজ্জামান বাবুর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, প্রায় তিন বছর ধরে অনুষ্ঠানটি নিয়ে নানা রকম গবেষণা ও যোগাযোগ করা হয়েছে। তারকা শিল্পীদের প্রতিযোগী হিসেবে পাওয়াটা ছিল খুবই চ্যালেঞ্জিং কাজ। দুই বাংলার তারকাদের নাচের লড়াইকে দর্শকের সামনে আকর্ষণীয় ও আধুনিকভাবে উপস্থাপনের জন্য প্রত্যেক শিল্পীই দীর্ঘসময় ধরে নাচের মহড়া করেছেন। কোনো কোনো দিন শিল্পীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টাই কাজ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠানটি সাফল্যের সঙ্গে করা সম্ভব হয়েছে শুধুই শিল্পীদের এই সহযোগিতা ও একাগ্রতার কারণে।

১৫ অক্টোবর থেকে নাগরিক টিভিতে শুরু হচ্ছে বাজলো ঝুমুর তারার নূপুর। ৭২ পর্বের নাচের এই প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানটি সপ্তাহের প্রতি সোম, মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় প্রচারিত হবে। এ অনুষ্ঠানের প্রতিটি পর্ব যৌথভাবে উপস্থাপনা করেছেন বাংলাদেশের মাসুমা রহমান নাবিলা ও কলকাতার সৌরভ।