কিছু অনুভূতি আছে প্রকাশ করা যায় না

মিতালী মুখার্জি। ছবি: দ্য ডেইলি স্টারের সৌজন্যে
মিতালী মুখার্জি। ছবি: দ্য ডেইলি স্টারের সৌজন্যে

জনপ্রিয় অসংখ্য গানের শিল্পী মিতালী মুখার্জি। ময়মনসিংহে তাঁর জন্ম। থাকছেন ভারতে। আজ সন্ধ্যায় গাইবেন ‘দ্য ডেইলি স্টার-স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড সেলিব্রেটিং লাইফ’ অনুষ্ঠানে। তাঁর বর্তমান সংগীত জীবন ও নানা বিষয় নিয়ে কথা হলো প্রথম আলোর সঙ্গে।

কত দিন পর ঢাকায় এলেন?
বেশি দিন নয়। কিছুদিন আগে চ্যানেল আইয়ের প্রতিযোগিতা সেরা কণ্ঠের বিচারক হিসেবে এসেছিলাম।

‘জীবনের জয়গান’–এর সঙ্গে যুক্ত হলেন কীভাবে?
ডেইলি স্টার–এর সঙ্গে সম্পর্ক অনেক বছর আগের। রাফি (রাফি হোসেন) আমার একটা সাক্ষাৎকার নিয়েছিল। ও আমাকে বলল, ‘একটা অনুষ্ঠান আছে। তোমাকে গাইতে হবে।’ ‘জীবনের জয়গানে’ যাঁদের নিয়ে সেলিব্রেট করা হচ্ছে, তাঁরা এত বড় গুণীজন, আমার মনে হচ্ছে, সেই ময়মনসিংহ থেকে ছোট্ট আমি আসছি তাঁদের শ্রদ্ধা জানাতে। অন্য রকম অনুভূতি কাজ করছে।

আগামীকাল (আজ শুক্রবার) কোন গানগুলো গাইছেন?
মিতালী মুখার্জি মানেই তাঁর কিছু গান একদমই নির্দিষ্ট। ওগুলোই গাইব। যেমন ‘এই দুনিয়া এখন তো আর সেই দুনিয়া নাই’, ‘হারানো দিনের মতো’, ‘কেন আশা বেঁধে রাখি’। তা ছাড়া যদি গজলের কোনো অনুরোধ থাকে, অবশ্যই শোনাব।

বাংলাদেশে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলেন। এখন কোনো বাংলা চলচ্চিত্রে গাওয়ার ইচ্ছা আছে?
একজন গায়িকার গাওয়ার আশা আজীবন থাকে।

সেরা কণ্ঠের বিচারক ছিলেন। বাংলাদেশের তরুণ শিল্পীদের দেখে কেমন মনে হলো?
দারুণ প্রতিভা ওদের। একটু–আধটু বুঝিয়ে দিলেই ওরা ধরতে পারত। আমি তরুণদের নিয়ে খুবই আশাবাদী। এখন রেকর্ড শুনে শিখতে হয় না। ইউটিউব আছে, অনলাইনে কত জায়গা আছে। কিন্তু ওখানে ভুলভাল জিনিসও থাকে। তাই আমার খুব ইচ্ছা, এ দেশে গানের একটা ভালো একাডেমি হোক।

দুই দেশেই গান করার অভিজ্ঞতা আছে আপনার...
গানের সাতটি সুর একটা ঐশ্বরিক জায়গায় পৌঁছে দেয়। বাংলাদেশিদের গান নিয়ে একটা উন্মাদনা আছে। ওখানেও (ভারতে) আছে। যে শিল্পীরই অনুষ্ঠান হয়, তাঁকে মাথায় রেখেই শ্রোতা আসে। সেই শ্রোতারা যখন গান শুনতে চায়, তখন শিল্পী সেই সুরে মিশে যায়। আমরা তো শ্রোতাদের জন্য।

‘কেন আশা বেঁধে রাখি’ গানটির সঙ্গে আপনার জীবনের একটি ঘটনা জড়িত...
আমাকে এইচএমভি থেকে একটা অ্যালবাম করতে বলা হয়। আমার সব ভাইবোন গানবাজনা করত। আমার বড় ভাই দীপক। ও তবলা বাজাত। গান নিয়ে ওর সবচেয়ে বেশি উন্মাদনা ছিল। খুব অল্প বয়সে ওর কিডনির একটা সমস্যা হয়। ও মারা যায়। ঠিক তখনই এই অ্যালবাম করার কাজটি আসে। তখন গানগুলো করার সময় বারবার ওর মুখ মনে পড়ত। এই যে আমি ঢাকায় এসেছি, ও থাকলে আসত। কিছু অনুভূতি আছে, প্রকাশ করা যায় না। হৃদয়ের কোন স্তরে যে ওর জন্য মমতা ছিল, বলে বোঝাতে পারব না। হঠাৎ ওর চলে যাওয়াটা আমার কাছে ‘শকিং’ ছিল।

শেষ তিন প্রশ্ন
আপনার গাওয়া প্রিয় গান
সুখ পাখি রে পিঞ্জিরা তোর খুলে দিলেম আজ...
গানে আপনার আইডল
অনেকে আছেন। সাবিনা ইয়াসমীন, রুনা লায়লা, আরতী মুখার্জি, শাহনাজ রহমতুল্লাহ, শিপ্রা বসু, নির্মলা মিত্র, লতা মঙ্গেশকর।
মিতালী সিং, না মিতালী মুখার্জি
মিতালী মুখার্জি
সাক্ষাৎকার: শরীফ নাসরুল্লাহ, ঢাকা