মন্ত্রীর কাছে নালিশ করেছেন গানের মানুষেরা

তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের সঙ্গে দেখা করার পর চলচ্চিত্র পুরস্কাপ্রাপ্ত সুরকার, সংগীতপরিচালক, গীতিকারের একটি প্রতিনিধি দল। ছবি–সংগৃহীত
তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের সঙ্গে দেখা করার পর চলচ্চিত্র পুরস্কাপ্রাপ্ত সুরকার, সংগীতপরিচালক, গীতিকারের একটি প্রতিনিধি দল। ছবি–সংগৃহীত

‘দহন’ ছবির ‘হাজির বিরিয়ানি’ গানটি প্রকাশের পর থেকেই ক্ষুব্ধ সংগীতাঙ্গনের অনেকেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গানটি নিয়ে সাধারণ দর্শক–শ্রোতারাও তাঁদের আপত্তির কথা জানিয়েছেন। ইউটিউবে গানটির মন্তব্যের ঘরে অনেকেই এই গান নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। সবারই একটাই মত, গানটির কথা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বাংলাদেশের ছবিতে এই ধরনের গান নিষিদ্ধ হওয়া উচিত। গানটি যাতে কোনোভাবেই সেন্সর ছাড়পত্র না পায় এবং ছবি থেকে বাদ দেওয়া হয়, তার দাবি জানাতে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের সঙ্গে দেখা করে নালিশ করেছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কাপ্রাপ্ত সুরকার, সংগীত পরিচালক, গীতিকারের একটি প্রতিনিধি দল। আবেদনপত্রে গানটি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানানো সংগীতাঙ্গনের ৭১ জন গায়ক–গায়িকা, সুরকার–সংগীত পরিচালক ও গীতিকারের স্বাক্ষর যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।

বিকেল চারটার কিছু আগে তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের সঙ্গে দেখা করেছেন সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলাউদ্দীন আলী, শেখ সাদী খান, ফরিদ আহমেদ, শওকত আলী ইমন, গায়ক শুভ্র দেব ও গীতিকার কবির বকুল।

প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে এক ঘণ্টার বৈঠক শেষে প্রথম আলোকে শেখ সাদী বলেন, ‘অশ্লীল কথার এই গানটি নিয়ে আমরা তো শুরুতেই নিজেদের আপত্তির কথা জানিয়েছি। আজ তথ্য প্রতিমন্ত্রীকে লিখিত আকারে জানালাম। প্রতিমন্ত্রী আমাদের বলেছেন, এই গানের কথা তো মুখেও উচ্চারণ করা যাচ্ছে না! এই ধরনের গান তো ছবিতে থাকার প্রশ্নই আসে না।’

গানটি প্রসঙ্গে ‘দহন’ ছবির পরিচালক রায়হান রাফি প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ছবির স্বার্থে এই গান। সংগীতাঙ্গনের বিক্ষুব্ধ লোকজনের সঙ্গে তাঁর দ্বিমত নেই বলেও জানান তিনি। রাফি বলেন, ‘গানটি আমাদেরও যে খুব ভালো লেগেছে, তা কিন্তু নয়। গল্পের প্রয়োজনে গানটি করা। এই গানের মধ্যে ইয়াবা, মদ, গাঁজা, হিসুর মতো শব্দগুলো স্বাভাবিকভাবে নেওয়ার বিষয় নয়। আমাদের এও বোঝা দরকার, এটি মাদক-সন্ত্রাসবিরোধী ছবি।’

দেশের সংগীতাঙ্গনের প্রায় সবাই ‘হাজির বিরিয়ানি’ গানটি অশ্লীল বলে মন্তব্য করেছেন। তাই এমন কথার গানটি বাতিলের প্রতিবাদে স্বাক্ষর করেছেন সাবিনা ইয়াসমীন, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, এন্ড্রু কিশোর, কনকা চাঁপা, ফোয়াদ নাসের বাবু, কুমার বিশ্বজিৎ, ফাহমিদা নবী, বাপ্পা মজুমদার, শফিক তুহিন, হাসান মতিউর রহমান, কিশোর, মুহিনসহ মোট ৭১ জন গায়ক–গায়িকা, গীতিকার এবং সুরকার ও সংগীত পরিচালক।

‘হাজির বিরিয়ানি’ গানটির কথা লিখেছেন ভারতের কলকাতার প্রিয় চট্টোপাধ্যায়। সংগীত পরিচালনা করেছেন ও গেয়েছেন সেখানকারই আকাশ সেন। গানটি নিয়ে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার আবদুল আজিজের যুক্তি, ‘এই গানে নায়কের চরিত্র সম্পর্কে দর্শককে ধারণা দেওয়া হয়েছে। যাঁরা এখন গানটির সমালোচনা করছেন, পুরো ছবি দেখার পর করবেন না, তা নিশ্চিত।’ বিষয়টি মানতে নারাজ এদেশের সংগীতাঙ্গনের অগ্রজ ও নবীন শিল্পী, গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালকদের কেউই।