সাংবাদিকের ফোন 'চেক' করতে বললেন শাকিব!

শাকিব খান
শাকিব খান

ছবির শুটিং সেটের বাইরে চিত্রনায়ক শাকিব খানের সঙ্গে সহকারী পরিচালক সমিতির সদস্যদের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের মুহূর্ত ভিডিও করছিলেন অনলাইন পোর্টালের দুজন সাংবাদিক জিয়াউদ্দিন আলম ও সুদীপ্ত সাঈদ খান। তা দেখে ক্ষিপ্ত হন শাকিব খান। এরপর ওই দুই সাংবাদিকের মুঠোফোন কেড়ে নেওয়ার জন্য বললেন তাঁর দেহরক্ষী হারুনকে। তিনি হারুনকে মোবাইল ফোন ‘চেক’ করে যা ভিডিও করা হয়েছে, তা ডিলিট করতে বলেন। সন্ধ্যায় প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে বিষয়টি স্বীকার করেন শাকিব খান। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এফডিসিতে এখন শাকিব খানের ‘শাহেনশাহ’ ছবি শুটিং চলছে। শুটিং চলার সময় অনাকাঙ্ক্ষিত এই ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা গেছে, শাহেনশাহ ছবিতে প্রধান সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন আলোক হাসান। তিনি সহকারী পরিচালকদের সংগঠন সিনে ডিরেক্টোরিয়াল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সদস্য নন। তাই বিষয়টি নিয়ে শাহেনশাহ ছবির শুটিং সেটে কথা বলতে যান সংগঠনটির সভাপতি এস আই ফারুক। সেটের পাশে যখন তাঁদের সঙ্গে আলাপ হয়, তখন আরও কয়েকজন সদস্য সেখানে যান। একপর্যায়ে সেখানে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। শাকিব খানসহ শুটিং ইউনিটের আরও কয়েকজন সেখানে এগিয়ে যান। এ সময় সহকারী পরিচালকদের এমন আচরণ দেখে রেগে যান শাকিব খান। পাশে থাকা ওই দুজন সাংবাদিক উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের মুহূর্ত নিজেদের মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ধারণ করছিলেন।

শাকিব খান বলেন, ‘কেন মোবাইল কেড়ে নেব না? এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এসব কেন ভিডিও করে নিয়ে যাবে? তাই আমি ধমক দিয়ে বলেছি, এটা ভিডিও করার কী আছে? তারপর আমি ওসব ভিডিও মুছে ফেলতে বলেছি।’

শাকিব খানের মতে, যাঁরা শাহেনশাহ ছবির শুটিং সেটে ছিলেন, তাঁদের তিনি সংবাদকর্মী মনে করেন না, ছোট ভাই হিসেবে দেখেন। সাংবাদিক হিসেবে যদি দেখতেন, তাহলে নাকি তাঁদের শুটিং স্পটে ঢুকতেই দিতেন না। শাকিব খান বললেন, ‘ওরা এসেছে আমার ছোট ভাই হিসেবে। বিভিন্ন পত্রিকা আর অনলাইনের আরও যারা আসে, সবাইকে ছোট ভাই হিসেবে দেখি। এখন ওরা যদি এফডিসির মধ্যে একটা ঘটনা দেখলে ভিডিও করে বাইরে ছড়ায়, তাহলে তো আমি বলব, তোমরা আমার অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে সেটে আসবে। এ ধরনের ঘটনা যদি ঘটায়, তাহলে তাদের শুটিং এলাকায় ঢুকতেই দেব না।’

শাকিব খান আরও বলেন, ‘এমনিতেই আমাদের সিনেমার অবস্থা খারাপ। তাদের আরও বলেছি, এগুলো মানুষকে দেখিয়ে তোমরা কী বোঝাতে চাও, সিনেমার অবস্থা খুব খারাপ?’

এর আগে শাহেনশাহ ছবির পরিচালক শামীম আহমেদ রনি বলেন, ‘সূর্য অস্ত যাচ্ছে দেখে শুটিংয়ের সময় আমরা তাড়াহুড়ো করছিলাম। এর মধ্যে সেটের বাইরে চিৎকার শুনে আমি আর শাকিব ভাই (শাকিব খান) এগিয়ে যাই। তখন ওখানে কিছু কথা–কাটাকাটি হয়। শাকিব ভাই কিছুই বলেননি। তাঁর দেহরক্ষী হারুনকে দিয়ে সাংবাদিকের মোবাইল নেওয়া হয়। এফডিসিতে থাকা অন্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এসে সহকারী পরিচালকদের সঙ্গে তৈরি ঝামেলার মীমাংসা করেন।’

সাংবাদিক জিয়াউদ্দীন আলম ও সুদীপ্ত সাঈদ দুজনেই জানান, তাঁরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন। শাকিব খানের এমন আচরণে তাঁরা অবাক হয়েছেন। দেশের একজন জনপ্রিয় নায়কের কাছ থেকে এমন আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়।