প্রেম-অপ্রেম

নায়ক আর নায়িকা—সিনেমাজগতে এই দুজনকে ঘিরে ঘুরে বেড়াবে নানা ধরনের ধোঁয়া–ওঠা গুঞ্জন, হবে ফিসফাস, সময়ে–অসময়ে জ্বলে উঠবে ক্যামেরার ফ্ল্যাশ। তাঁদের প্রশ্ন করা হবে, আপনারা কি প্রেম করছেন? কী সম্পর্ক আপনাদের? কতটা গভীর আপনাদের রসায়ন? সবকিছুর জবাবেই তাঁরা বলবেন, ‘উই আর জাস্ট ফ্রেন্ডস!’ (আমরা শুধুই বন্ধু)।

এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক। এমনটাই হয়ে আসছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম। তাহলে কি একই গল্প সিয়াম আহমেদ–পূজা চেরির বেলায়ও ঘটবে? নাকি শোবিজের গতানুগতিক নায়ক–নায়িকার জুটি বাঁধা মানেই প্রেম—এই ধারণাকে ভেঙে দেবেন তাঁরা? এ কথা সময় বলে দেওয়ার আগে আমরা বরং সিয়াম–পূজার কাছ থেকে জেনে নিই তাঁদের প্রেম ও প্রেমের গুজববিষয়ক ভাবনা।

সিয়াম আহমেদ ও পূজা চেরি
সিয়াম আহমেদ ও পূজা চেরি

মাত্র এক ছবি পুরোনো সিয়াম–পূজার জুটিকে ঘিরে নানা দিকে নানা কথা শোনা যায়। কিন্তু এসব কথা নাকি তাঁদের কানে কখনো পৌঁছায়ই না। সিয়ামের কাছে পূজার সঙ্গে প্রেমবিষয়ক গুঞ্জনের কথা জানতে চাইলে ‘দুনিয়া কাঁপানো’ হাসি দেন তিনি। প্রায় আধা মিনিট পর হাসি থামিয়ে বলেন, ‘আমি কখনো কোনো গুজব শুনিনি! আজ এই প্রথম শুনলাম।’

ওদিকে পূজার অভিজ্ঞতা আলাদা। প্রেমের গুজব ও গুঞ্জনবিষয়ক আলাপে পড়ার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। কিন্তু সেই সব আলাপ থেকে খুব সহজেই নিজেকে বের করে আনতে পারেন তিনি। বয়সে ছোট হলে কী হবে, এরই মধ্যে গুজবকে ছাপিয়ে নিজের কাজকে ঠিকই আলোচনায় তুলে আনার কায়দা শিখে ফেলেছেন পূজা চেরি। তিনি বলেন, ‘প্রেমবিষয়ক আলাপ শুনলে একদিক থেকে ভালো লাগে, আবার অন্যদিকে খারাপও লাগে।’ এর ব্যাখ্যা পূজার মুখ থেকে শুনলাম আমরা। ভালো লাগে কারণ, সিয়ামের সঙ্গে একটা মাত্র প্রেমের ছবিতে অভিনয় করেই নিজেদের রসায়নকে সবার চোখে বাস্তবসম্মত করতে পেরেছেন। আর খারাপ লাগে কারণ, এখনই যদি প্রেম নিয়ে এমন গুজব–গুঞ্জন ছড়াতে থাকে, তাহলে সামনের লম্বা পথটায় পড়াশোনা–অভিনয়ের ওপর চাপ ফেলবে, এমন আশঙ্কায় আছেন পূজা।

পূজা চেরি
পূজা চেরি

সিয়াম–পূজার প্রেম-প্রেম গুঞ্জন নিয়ে ভক্ত আর গুজবপ্রেমীদের কৌতূহল অনেক। কিন্তু এই দুই শিল্পীর পরিবার কীভাবে দেখে তাঁদের দুজনের রসায়নকে। সিয়ামের প্রেমিকাই–বা কীভাবে দেখেন বড় পর্দায় সিয়াম–পূজার রসায়নকে? নায়ক সিয়াম বলেন তাঁর প্রেমিকার কথা—‘সে তো খুব খুশি!’ সামনের বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবেন পূজা। এ নিয়েই সিয়ামের প্রেমিকার বিস্ময়—‘এত অল্প বয়সে এমন অভিনয়। এ তো দারুণ মেধাবী হলেই সম্ভব!’ এমন প্রশংসায় পূজাও বিনয়াবনত। তিনি বলেন, ‘সিয়ামের পরিবারের সবাই খুব ভালোবাসে আমাকে। এমনকি আমাদের পোড়ামন ২ ছবির পর গেট টুগেদার পার্টিতে তো সিয়ামের গার্লফ্রেন্ড আমাকে অনেক ইন্সপায়ারিং কথা বলেছে, যা আমার কাছে সব সময় অমূল্য হয়ে থাকবে। আর সিয়ামের মা–বাবা আমাদের দুজনকে ছবিতে দেখার পর হল থেকে বেরিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন।’

দিন শেষে গুজব–গুঞ্জনকে হাওয়ায় উড়িয়ে প্রেমের বিষয়কে আমলেই আনছেন সিয়াম ও পূজা। সিয়ামের কাছে প্রেমটা একান্তই ব্যক্তিগত। আর পূজার কাছে সে আরও অনেক পরের ব্যাপার। আপাতত শুধু অভিনয়টাই আসল।

রসায়ন

কে বেশি ঝগড়া করেন?

পূজা: কেউই না।

সিয়াম: ওটা আসলে খুনসুটি।

তৈরি হতে কে কত সময় নেন?

সিয়াম: কাল শুটিং থাকলে আজ থেকে শুরু করলে পূজার হয়ে যায়।

পূজা: ও তো ছেলে। তবে দহন-এ ওকে যেভাবে দেখা যাবে, সেখানে তৈরি হতে একটু বেশি সময় লেগেছে।

সেটে ফোনে বেশি কথা বলেন কে?

সিয়াম: আমি সেটে ফোন ব্যবহার করি না। বাকিটা বুঝে নেন।

পূজা: (হাসি)

রাগ করলে সিয়াম-পূজা যা করেন...

সিয়াম: পূজা যদি রাগ করে, তাহলে সিয়াম পূজার মায়ের রাগ ভাঙানোর চেষ্টা করে। ঝর্ণা আন্টির রাগ ভাঙানো বেশি ইম্পোর্ট্যান্ট।

পূজা: সিয়াম চুপচাপ থাকে। কোনো কথা বলে না।

কে বেশি লাইন ভুলে যান?

সিয়াম: পূজার ভুল হয় না। আমারও খুব একটা হয় না। আমাদের মেইন টেকে কখনো বেশি সময় লাগেনি এখন পর্যন্ত।

পূজা: আসলে আমরা চেষ্টা করি একবার রিহার্সাল করে নিতে।

কে বেশি সেলফি তোলেন?

পূজা: মেয়েরা। মানে বুঝে নিন।

কার লাঞ্চ ব্রেক বড়?

পূজা: আমরা একসঙ্গেই খাই।

সিয়াম: পূজার আগে শেষ হয়। মুরগিরও অপমান হবে, এমনভাবে খায় আরকি।

প্যাকআপ হলে কে বেশি খুশি হন?

পূজা: নরমাল থাকি। তবে ভোরে কল টাইম থাকলে মনে হয় কখন শেষ হবে।

সিয়াম: প্যাকআপ হওয়ার আগে থেকেই পূজা খুশি। আন্টি আরও খুশি। আমার তো দুঃখ। শেষে আমাকেই যেতে হবে।

জুটি হিসেবে কটি ছবি করতে চান?

পূজা: দর্শকের ওপর নির্ভর করছে।

সিয়াম: কটি করছি, সেটা গুরুত্বপূর্ণ না। যেন মানসম্মত কাজ করি।

‘পোড়ামন ২’ না ‘দহন’?

পূজা: আমার সব সিনেমা আমার কাছে সমান।

সিয়াম: সবচেয়ে কঠিন প্রশ্ন। প্রথম ছবি সব সময়ই স্পেশাল। কিন্তু আমার জীবনে দহন-এর চরিত্রটি স্বপ্নের চরিত্র। অনেক কষ্ট করে করা একটি প্রজেক্ট।

পূজা চেরি

পর্দার ক্রাশ কারা?

সালমান শাহ স্যার, শাবনূর ম্যাম, মৌসুমী ম্যাম।

প্রথম প্রপোজাল কবে পান?

পাইনি। করিওনি।

প্রেমিক কীভাবে প্রপোজ করলে খুশি হবেন?

হাতে ফুল নিয়ে বলবে, ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি। সারা জীবন ভালোবেসে যাব।’

প্রেমিকের মধ্যে কোন গুণটি থাকতেই হবে?

আমাকে যেন ভালোবাসে।

আর কোন দোষটা কিছুতেই মেনে নেবেন না?

অনিয়ম।

কলকাতার কাউকে ভালো লেগেছে?

না। তবে ক্রাশ দেব।

প্রিয় প্রেমের ছবি কোনটি?

জীবন সংসার।

কারও ওপর ক্রাশ খেলে প্রথম কাকে বলেন?

মাকে।

কোন গান শুনলে প্রেম করতে ইচ্ছা করে?

প্রতিটি গান শুনলেই।

প্রেমিকের কাছে কীভাবে সেজে যাবেন?

একদম বাঙালি সাজ। শাড়ি, কপালে টিপ।