আমার জীবনেও তেমন ঘটনা ঘটেছে: স্পর্শিয়া

অর্চিতা স্পর্শিয়া। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
অর্চিতা স্পর্শিয়া। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

ডিসেম্বরে মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে অর্চিতা স্পর্শিয়ার সিনেমা ‘বন্ধন’। দেড় বছর আগে শুটিং শুরু হওয়া এই ছবির কাজ শেষ হয়েছে। পোস্টারের ফটোশুটেও অংশ নিয়েছেন অভিনয়শিল্পীরা। আজ সোমবার দুপুরে স্পর্শিয়ার সঙ্গে যখন কথা হয়, তখন তিনি সিনেমা দেখে প্রেক্ষাগৃহ থেকে বের হচ্ছেন। জানালেন, সিনেমা আর নিজের জীবনের কিছু পরিকল্পনার কথা।

কোন ছবি দেখলেন?
‘হাসিনা: এ ডটার’স টেল’। দারুণ! আমি এমনিতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহাভক্ত। তাঁর সংগ্রামী জীবনের কর্মকাণ্ড আমাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করে। শেখ হাসিনার জীবনসংগ্রামের ওপর নির্মিত এই তথ্যচিত্র দেখে তাই ভীষণ ভালো লেগেছে।

আপনার নিজের ছবি দর্শক কবে প্রেক্ষাগৃহে দেখতে পাবেন?
কাছাকাছি সময়ে আমার কয়েকটা ছবি মুক্তি পাবে। পরিচালক অনন্য মামুন বলেছেন, ডিসেম্বরে আমার ‘বন্ধন’ ছবিটি মুক্তি পাবে। পরিচালকের পরিকল্পনা যদি ঠিক থাকে, তাহলে জীবনের প্রথম ছবিটি প্রথমে মুক্তি পাবে। তা না হলে পরের ছবিটি হয়তো আগে মুক্তি পেতে পারে।

পরের ছবি মানে!
আমার অভিনীত আরও দুটি ছবির কাজ প্রায় শেষ। দর্শক যেকোনো সময় এই ছবিগুলোর ট্রেলার দেখতে পাবেন। শিগগিরই আরও দুটি ছবির কাজ শুরুর পরিকল্পনা চলছে। তবে ছবিগুলোর নাম আর পরিচালকের ব্যাপারে এখনই কিছু বলতে চাই না। সময় হলে বলব।

অর্চিতা স্পর্শিয়া। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
অর্চিতা স্পর্শিয়া। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

নীরবেই ছবির কাজ করতে চান?
তা বলতে পারেন। আমরা আসলে উল্টো নীতিতে এই কাজগুলো করছি। সাধারণত দেখি, শুটিং শুরুর আগেই ছবি নিয়ে আমাদের দেশে বিশাল আওয়াজ হয়। এরপর অনেক ছবি মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। তখন নানা কথা হয়। তাই আমি চেয়েছি, ছবির কাজ আগে শেষ হোক। এরপর যত প্রচারণা দরকার হবে, করব। আকাশে চাঁদ উঠলে সবাই দেখবে।

‘বন্ধন’ ছবির কাজ কবে করেছেন?
গত বছর জানুয়ারিতে এই ছবির শুটিং শুরু হয়। মাঝে কাজ কয়েক মাস বন্ধ ছিল। সব জটিলতা কাটিয়ে ছবির শুটিং শেষ হয়েছে। ডাবিংয়ের কাজও শেষ। সম্প্রতি পোস্টারের ফটোশুট করেছি।

নাটকের কাজ বন্ধ করে দিলেন?
একদম বন্ধ। নাটকে আর কাজ করতে চাই না। নাটকে ভালো স্ক্রিপ্ট পাই না, চ্যালেঞ্জিং কোনো চরিত্রও নাই। মনের মতো অভিনয়ের সুযোগ পাই না। আগের মতো বাজেটও নাই। মাঝে তিনটা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে কাজ করেছি, আইফ্লিক্সের জন্য। আমি আসলে অভিনয়ের মানুষ হতে চেয়েছি। কিন্তু নাটকে তেমন কোনো চরিত্র পাচ্ছিলাম না। বড় পর্দায় এসে মনে হচ্ছে, মনের মতো গল্পে কাজ করছি।

অর্চিতা স্পর্শিয়া। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
অর্চিতা স্পর্শিয়া। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

সিনেমার কাজ নিয়ে আপনার মা কী বলেন?
আম্মু আমাকে সব সময় কাজের স্বাধীনতা দিয়েছেন। সিনেমার কাজেও আম্মুর সমর্থন শতভাগ। তবে আম্মু শুধু একটা কথাই বলেন, ‘ছবিটা কমার্শিয়াল, নাকি আর্ট ঘরানার; ছবিতে নাচ-গান কতটুকু থাকবে—এসব নিয়ে তাঁর যত মাথাব্যথা। আমার কাছে যত সিনেমার প্রস্তাব আসে, সব গল্পই আম্মু পড়েন।

নাটক থেকে চলচ্চিত্রে এসে কেমন সহযোগিতা পাচ্ছেন?
চলচ্চিত্রে যাঁদের সঙ্গে কাজ করছি, সবাই সহযোগিতা করছেন। এখন পর্যন্ত যে কটি ছবিতে কাজ করেছি, অভিজ্ঞতা খুব চমৎকার।

এখন ‘# মি টু’ আন্দোলন নিয়ে কথা হচ্ছে। আপনাকে কখনো ও রকম হেনস্তা বা হয়রানির মুখোমুখি হতে হয়েছে?
‘#মি টু’ মুভমেন্ট যেসব ঘটনা নিয়ে, আমার জীবনেও তেমন ঘটনা ঘটেছে। ২০১১ সাল থেকে আমি অভিনয় করছি। ২০১৪ সালে একবার এ ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হয়েছি। বিষয়টা আমাদের অঙ্গনের সবাই জানেন। ঘটনার পরই প্রতিবাদ করেছিলাম। সমাধানও পেয়েছি। আমার সঙ্গে যিনি এই আচরণ করেছেন, তিনি শাস্তিও পেয়েছেন। সবাই এগিয়ে এসে আমাকে সহযোগিতা করেছেন। এটা নিয়ে এখন আর রাগ-ক্ষোভ কিছুই নেই। আমি চাই না, আমার কর্মক্ষেত্র নিয়ে কেউ কথা বলুক।

অর্চিতা স্পর্শিয়া। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
অর্চিতা স্পর্শিয়া। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

বিবাহবিচ্ছেদের পর একজন নির্মাতার সঙ্গে আপনার প্রেমের খবর শোনা গেছে। আবার সংসার শুরু করতে যাচ্ছেন?
সংসার তো ছোটবেলা থেকেই করছি। সংসার বলতে শুধু স্বামী-স্ত্রী সঙ্গে নিয়ে থাকা? আমি এখন একা আছি, একা থাকতে চাই। আর প্রেম নয়। বন্ধু পর্যন্ত থাকো, এটাই ভালো।

এমন উপলব্ধি কেন হলো?
ন্যাড়া একবার বেলতলায় যায়। আমি দশবার বেলতলায় গেছি। আর যেতে চাই না।

অর্চিতা স্পর্শিয়া। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
অর্চিতা স্পর্শিয়া। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

সম্পর্কের ব্যাপারে আপনি কী ভাবেন?
আমার কাছে সম্পর্কের মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা মনে হয় আন্ডারস্ট্যান্ডিং (পারস্পরিক বোঝাপড়া) নিয়ে। আমার ক্ষেত্রে এ রকম কখনো হয়নি যে, কেউ আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমি নিজেও কারও সঙ্গে প্রতারণা করিনি। আমাকে কেউ ভালোবাসা কম দিয়েছে, তা-ও না। আমার সঙ্গে যারা ছিল বা আমি যাদের সঙ্গে ছিলাম, আমার যতগুলো প্রেম কিংবা একটা বিয়ের কথাই বলি না কেন, ভালোবাসার ব্যাপার নিয়ে খারাপ কোনো মন্তব্য করতে পারব না। ভালোবাসার বাইরেও একটা সম্পর্কে অনেক কিছুই থাকে, তার প্রথমটা বোঝাপড়া আর দ্বিতীয়টা বিশ্বাস। আমার ক্ষেত্রে এই দুটো নড়বড়ে হয়ে গেছে। তাই স্থির করছি, এখন স্থায়ী কোনো সম্পর্কে জড়াব না। পুরোপুরি কাজে মন দিতে চাই। পাঁচ বছর পর মায়ের পছন্দে বিয়ে করব।