'জয়া অসাধারণ অভিনেত্রী, জ্যোতি ভালো বন্ধু'

>বাংলা থিয়েটারে কলকাতার অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তীর শুরুটা হয়েছিল অভিনয় দিয়ে। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে নিজের আসন মজবুত করেছেন। অভিনয় করছেন ২৫টি চলচ্চিত্রে। গত বছর ‘মাছের ঝোল’ ছবি মুক্তি পাওয়ার পর আলোচনায় এসেছেন ঋত্বিক চক্রবর্তী। এখন যৌথ প্রযোজনার ছবি ‘ডেব্রি অব ডিজায়ার’-এর শুটিংয়ের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত। ছবিটি পরিচালনা করছেন কলকাতার ইন্দ্রনীল রায় চৌধুরী। এতে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করছেন বাংলাদেশের অপি করিম। পরিচালকসহ ছবিটি প্রযোজনা করেছেন বাংলাদেশের জসিম আহমেদ। কলকাতায় ছবিটির মহড়া আর লুক সেটের ফাঁকে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন ঋত্বিক চক্রবর্তী।
ঋত্বিক চক্রবর্তী
ঋত্বিক চক্রবর্তী

‘মাছের ঝোল’ ছবিতে আপনি একজন বিখ্যাত শেফ চরিত্রে অভিনয় করেন। আপনি নিজে কী কী রান্না জানেন?
আমি অনেক দিন বাড়ির বাইরে একা কাটিয়েছি। জীবন বাধ্য হয়ে আমাকে কিছু রান্না শিখিয়েছে। সেগুলো একটাও প্রথাগত রান্না না। এমনকি সেগুলো ঠিক বাঙালি রান্নাও না। এই ধরেন একটার মধ্যে আরেকটা দিয়ে রান্না। কিন্তু সেগুলো খাওয়া গেছে। আমার কাছে টেস্টি মনে হয়েছে। কিছু একটা হয়েছে আর কি!

বিয়ের পর সেসব রান্না করে স্ত্রীকে খাইয়েছেন?
হ্যাঁ। সে তো খেয়ে খুশিই হয়েছে। আসলে এই সব রান্নার কোনো নাম নেই। তাই খেয়েও মনে রাখে না।

‘মাছের ঝোল’ করতে গিয়ে কোনো রান্না শিখেছেন?
‘মাছের ঝোল’ ছবিতে যেহেতু শেফের চরিত্র ছিল, একটা-দুইটা রান্না তো শিখেছি। তবে রান্নার চেয়ে বেশি শিখেছি চপিং করা। আরও একটা জিনিস শিখতে হয়েছিল, সেটা হলো ফ্রেঞ্চ ভাষা। কারণ সিনেমাটায় আমাকে ফ্রেঞ্চ ভাষায় অনেকটা কথা বলতে হয়েছে। এটা বেশ কঠিন ভাষা মনে হয়েছে।

এবার যে ছবিতে অভিনয় করতে যাচ্ছেন সেই প্রসঙ্গে কথা বলি। ‘ডেব্রি অব ডিজায়ার’ ছবিতে অভিনয় করতে রাজি হওয়ার পেছনে কোন তিনটা কারণ আছে?
প্রথমত, এই ছবির পরিচালক ইন্দ্রনীল রায় চৌধুরী। তাঁর সঙ্গে কয়েকটি কাজ করেছি। আরও করব হয়তো সামনে। আসলে হয় কী, একেকটা পরিচালকের ওপর অন্ধবিশ্বাস কাজ করে। কবিদা (ইন্দ্রনীল রায় চৌধুরীর ডাক নাম) সে রকম একজন মানুষ। তাঁর ওপর অন্ধবিশ্বাস কাজ করে আমার। এই কারণে রাজি হওয়া।
দ্বিতীয়ত, এর চিত্রনাট্য। অভিনেতা হিসেবে নিয়মিতই অভিনয় করি। রোজগারের তাগিদেই করতেই হয়। যেটা হয়, তা হলো অনেক চিত্রনাট্য সামনে আসে। কখনো ভালো, কখনো খারাপ। কখনো একটু ভালো। কখনো হয়তো আফসোস হয়, ইশ্‌ আর একটু হয়তো ভালো হতে পারত। এসব মিলেই কাজ করি। কিন্তু ‘ডেব্রি অব ডিজায়ার’ ছবির চিত্রনাট্য সম্পূর্ণ আলাদা। এক কথায় অসাধারণ। রোজ রোজ এমন ভালো চিত্রনাট্য তো আসে না। আমি রোজ যে রকম কাজ করি, তার সঙ্গে এই চিত্রনাট্যের এক লহমা মিল নেই। এক লহমা না, কোনো লহমারই মিল নেই।
তৃতীয়ত, অভিনয়ের সুযোগ পাওয়া। অভিনয়ের যে প্রসেস হবে বা হচ্ছে, এটা এক ধরনের নতুন ধাপ। কবিদার সঙ্গে কাজ করার এটাই সুবিধা। নিয়মিত নতুন একটা প্রসেসের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। অভিনেতা হিসেবে আমাকে কিছু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমি দেখেছি সেটা নতুন। কবিদার সঙ্গে কাজ করতে গেলে এই নতুন কাজগুলো করতে হয়, আমারও করতে ভালো লাগে। আমরা যেটাকে ছোটবেলায় বলতাম বর্জনের চর্চা। মানে হলো, কতটা কমে, বর্জন করে, সহজ করে অভিনয় করা যায়। এই চেষ্টাটাই করছি। এটা আমার জন্য আরেকটা ধাপ।

আপনি বাংলাদেশের জয়া আহসান ও জ্যোতিকা জ্যোতির সঙ্গে অভিনয় করেছেন। এবার অপি করিমের সঙ্গে অভিনয় করতে যাচ্ছেন। তিনজন সম্পর্কে একটি করে মন্তব্য করুন।
জয়া আহসান অসাধারণ অভিনেত্রী। জ্যোতিকা জ্যোতি ভালো বন্ধু। আর অপি করিমের সঙ্গে কাজ হতে যাচ্ছে, হওয়ার পর বলব।

আপনি বাংলাদেশে গিয়েছিলেন। ‘ডেব্রি অব ডিজায়ার’ ছবির শুটিংয়ের সময় আবার যাবেন। বাংলাদেশের কোনো জায়গা বা খাবারের গল্প শুনেছেন?
নির্দিষ্ট করে বলতে পারব না। আমার আসলে অনেক কিছুই করার ইচ্ছা। যেমন পুরান ঢাকায় যেতে চাই। সেখানে গিয়ে বাকরখানি খাওয়ার ইচ্ছা আছে। আবার বাংলাদেশের গ্রামবাংলা বলতে যে চিত্রটা আমাদের মাথায় আছে, সেখানেও ঘুরতে চাই। আসলে অনেক কিছুই করতে চাই। কিন্তু পারি আর কতটা, বলেন।