গণসংগীতশিল্পী অশোক সেনগুপ্ত আর নেই

অশোক সেনগুপ্ত
অশোক সেনগুপ্ত

চট্টগ্রামের প্রখ্যাত গণসংগীতশিল্পী অশোক সেনগুপ্ত আর নেই। আজ বুধবার সকালে কলকাতার টাটা মেডিকেল সেন্টারে তিনি পরলোকগমন করেন। ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগছিলেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী নৃত্যশিল্পী রত্না সেনগুপ্তা, সন্তান কত্থক নৃত্যশিল্পী তিলোত্তমা সেনগুপ্তা আর জামাতা নাট্যজন অসীম দাশকে রেখে গেছেন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মরদেহ চট্টগ্রাম এসে পৌঁছাবে। সবার শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আগামী শুক্রবার সকাল ১০টায় তাঁর মরদেহ রাখা হবে চট্টগ্রাম শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে। এরপর দুপুরে অভয় মিত্র মহাশ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

চট্টগ্রাম সংস্কৃতি অঙ্গনে অশোক সেনগুপ্ত খুব পরিচিত একটি নাম। বিভিন্ন গণ–আন্দোলনে গণসংগীত নিয়ে যাঁর দৃপ্ত পদচারণা ভাবিয়েছে, জাগিয়েছে সমাজের প্রতিটি শ্রেণি–পেশার মানুষকে। অশোক সেনগুপ্তের জন্ম বোয়ালখালীর খিতাপচর গ্রামে। ১৩ বছর বয়সে তাঁর সংগীতজীবনের শুরু। বাংলাদেশ বেতারে আধুনিক গান আর বাংলাদেশ টেলিভিশনে নজরুলসংগীতে প্রথম শ্রেণির শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত ছিলেন তিনি। পাশাপাশি বাংলাদেশ বেতারে ২০ বছরেরও অধিক সময় ধরে তিনি সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। গণসংগীতের শিক্ষক হিসেবেও ছিল তাঁর যথেষ্ট খ্যাতি।

জানা গেছে, অশোক সেনগুপ্ত চার শতাধিক গণসংগীত রচনা করেছেন, সুর দিয়েছেন এবং তাতে কণ্ঠ দিয়েছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘যেখানে পাখির গানে সকাল আসে/ রাঙা সূর্য হাসে সবুজ ঘাসে/ আমি যেন বারবার জন্ম লভি সেই দেশে/ আমার বাংলাদেশে’, ‘জেগে ওঠো বাংলা একাত্তরের চেতনায়/ এবার অস্ত্র নয় জনযুদ্ধে আনব বিজয়/ দুর্বার একতায়/ জেগে ওঠো বাংলা/ জেগে ওঠো’, ‘তোরা যুদ্ধ অপরাধী/ তোরা মানবতাবিরোধী/ তোদের হবে না দেশে ঠাঁই/ তাই তো জেগেছে বিপ্লবী জনতা/ তোদের বিচার চাই’, ‘বাংলা মাগো সবুজ ঘাসের চাদর দিয়ো জাতির পিতার গায়/ পরম সুখে ঘুমিয়ে থাকুক টুঙ্গিপাড়ায়’।