পথশিশুদের সঙ্গে নায়কের জন্মদিন

পথশিশুদের সঙ্গে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটছেন চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
পথশিশুদের সঙ্গে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটছেন চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, ধানমন্ডি ১২ নম্বর সড়ক ও বিমানবন্দর স্টেশন—জন্মদিনের সময়টা ঢাকার এই তিন জায়গার পথশিশুদের সঙ্গে কেটেছে ঢালিউডের নায়ক বাপ্পী চৌধুরীর। পথশিশুদের পাশাপাশি এসব জায়গায় ভক্তদের সঙ্গেও অনেকটা সময় কাটিয়েছেন তিনি। জন্মদিনে এটাই তাঁর কাছে অন্যরকম একটা আনন্দঘন মুহূর্ত। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে এমনটাই জানালেন বাপ্পী।

নায়ক হওয়ার আগে থেকেও তাঁর জন্মদিনে পথ শিশুদের সঙ্গে সময় কাটাতেন। এখন পরিসর আরও বেড়েছে। বিষয়টা দারুণ উপভোগ করছেন বাপ্পী। তিনি বলেন, ‘কত কষ্টে থাকে এই শিশুরা। অথচ সামান্য কিছুতে যে আনন্দ ওদের, তা থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। ওরা আমাকে ভাবায়, হাসায়, কাঁদায়। ওদের সঙ্গে যে সময়টা কাটাই তা আমাকে উজ্জীবিত করে।’

পাঁচ বছর আগে জাজ মাল্টিমিডিয়ার ‘ভালোবাসার রং’ দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন বাপ্পী। প্রথম সিনেমা দিয়ে আলোচনায় আসেন। তিনি শুরুর দিকে জাজ মাল্টিমিডিয়ার ব্যানারে কাজ করলেও পরে অন্য প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গেও ছবির কাজ করেন। এ পর্যন্ত তাঁর প্রায় ৩২টি চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে। সম্প্রতি তাঁর মুক্তি পাওয়া ‘নায়ক’ ও ‘আসমানী’ ছবি দুটি বেশ প্রশংসিত হয়েছে। ভক্তরা ভালোবেসে তাঁর নামে ফেসবুক ফ্যানপেজ ও গ্রুপ খুলেছেন। অন্যতম দুটি গ্রুপ হচ্ছে ‘হার্ট অব বাপ্পী চৌধুরী গ্রুপ’ ও ‘টিম বাপ্পী’।

ভক্তদের সঙ্গে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটছেন চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
ভক্তদের সঙ্গে নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটছেন চিত্রনায়ক বাপ্পী চৌধুরী। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

সারা দিনের ব্যস্ততা শেষে সন্ধ্যায় বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে যান বাপ্পী। তিনি বলেন, ‘বান্ধবীর আবদারও তো রাখতে হবে। কেক নিয়ে অপেক্ষা করে সে। একসঙ্গে কেক কাটার সময় বলে দিয়েছি, ১০ মিনিটের বেশি সময় দিতে পারব না।’ এরপর আবার তাঁকে ছুটতে হয় বাবা-মায়ের কাছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে হয় তাঁকে। টেলিভিশনের সরাসরি আয়োজনে ভক্তদের সঙ্গে কথা বলেছেন। এরপর তো পথশিশু আর ভক্তদের সঙ্গে সময় কাটানো। ‘এরা আমার আরেকটা পরিবার। এদের সময় কাটাতে আমার দারুণ লাগে’,-বলেন বাপ্পী।

জন্মদিন উপলক্ষে দুটি গ্রুপ থেকেই আয়োজন করা হয় কেক কাটার। ধানমন্ডির একটি রেস্টুরেন্টে হার্ট অব বাপ্পী চৌধুরী গ্রুপ প্রিয় এই নায়ককে নিয়ে কাটে কেক। এ সময় বাপ্পী চৌধুরী তাঁর ফেসবুকে ফ্যানপেজে লাইভে এসে ভক্তদের সঙ্গে শেয়ার করেন। এরপরই যান ধানমন্ডির ১২ নাম্বারে। সেখানে ‘টিম বাপ্পী চৌধুরী’র সদস্যরা অপেক্ষা করছিলেন। অভিনেতা বাপ্পী এলেই পথশিশুদের নিয়ে জন্মদিনের কেক কাটা হবে। এখানে পৌঁছালে পথশিশুরা হইচই করে ঘিরে ধরে তাদের নায়ককে। এরপর সেখানে পথশিশুদের সঙ্গে কেক কাটেন বাপ্পী। তাঁদের হাত থেকে কেক খান। নিজেও তাঁদের খাইয়ে দেন। ভক্তদের এমন আয়োজনের মুহূর্তটায় বেশ আবেগপ্রবণ হয়ে যান বাংলা চলচ্চিত্রের এই নায়ক।

বাপ্পী চৌধুরী বলেন, ‘এটাই হচ্ছে আসল ভালোবাসা। অথচ আমাদের কাছে তাঁদের কোনো স্বার্থ নেই। ভক্তরা বাংলা ছবিকে ভালোবেসে আমাদের এমন সম্মান দিচ্ছেন। তাঁরা এমন ভালোবাসছেন, আমার কাছে এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে? পথশিশুদের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটালাম। তাদের সঙ্গে কাটানো সময়টা আমার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সবার প্রতি অনেক অনেক ভালোবাসা।’