জীবনকৃতি সম্মাননা পেলেন আবুল খায়ের

আবুল খায়েরের হাতে তুলে দেওয়া হয় জীবনকৃতি সম্মাননা স্মারক। নজরুল মঞ্চ, কলকাতা, ১৫ ডিসেম্বর। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
আবুল খায়েরের হাতে তুলে দেওয়া হয় জীবনকৃতি সম্মাননা স্মারক। নজরুল মঞ্চ, কলকাতা, ১৫ ডিসেম্বর। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়েরকে ‘এ যুগের শিল্পের সাধক’ অভিহিত করে জীবনকৃতি সম্মাননায় ভূষিত করা হয়েছে। শিল্প সংস্কৃতির প্রতিটি শাখায় ৩০ বছরের অবদানের জন্য শনিবার কলকাতায় তাঁকে এই সম্মাননা জানানো হয়।

শনিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার নজরুল মঞ্চে স্বর সম্রাট উৎসবে আবুল খায়েরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে আজীবন জীবনকৃতি সম্মাননা। বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বাংলা গান, উচ্চাঙ্গ সংগীত, সিনেমা, তথ্যচিত্র, নাটক, স্থাপত্যবিদ্যা ও চারুকলায় অবদানের জন্য তাঁকে এই সম্মাননা জানানো হয়। এই স্বর সম্রাট উৎসবের আয়োজন করেছে শ্রীরঞ্জনী ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট। এবারের উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে ওস্তাদ আলী আকবর খানের স্মৃতির উদ্দেশ্যে। আবুল খায়েরকে সম্মাননা জানানোর মধ্য দিয়ে জীবনকৃতি সম্মাননার সূচনা করলেন আয়োজকেরা।

আবুল খায়েরের হাতে পুরস্কার তুলে দেন পণ্ডিত অজয় চক্রবতী ও প্রখ্যাত চিত্রকর যোগেন চৌধুরী। সম্মাননা হিসেবে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় উত্তরীয়, জীবনকৃতি সম্মাননা স্মারক, মানপত্র ও কলকাতা প্রসিদ্ধ মিষ্টি। এ সময় তাঁর পাশে ছিলেন পণ্ডিত তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার। সম্মাননার পাশাপাশি আবুল খায়েরকে ভূষিত করা হয়েছে ‘এ যুগের শিল্পের সাধক’ হিসেবে।

সম্মাননা দেওয়ার আগে আবুল খায়েরের সংস্কৃতি অঙ্গনের অবদানের কথা তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, তিনি চারুকলার ক্ষেত্রে শিল্পকর্ম সংগ্রহ ও প্রদর্শনীর আয়োজন এবং সর্বোপরি নানা ধরনের প্রকাশনা দিয়ে বাংলাদেশের মুখ ও মান বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছেন। তিনিই প্রায় হারিয়ে যাওয়া উচ্চাঙ্গ সংগীতের ‘চেম্বার কনসার্ট’এর তকমা থেকে মুক্ত করেন। প্রায় ৫০ হাজার দর্শকের কাছে প্রতিদিন একটানা ১০ ঘণ্টা করে পাঁচ দিনব্যাপী বিশ্বের সবচেয়ে বড় উৎসবটি ‘ক্ল্যাসিক্যাল পাবলিক কনসার্ট’ হিসেবে জনপ্রিয় করেছেন তিনিই। যা আজ অবধি কেউ করতে সক্ষম হননি। তাই তাঁকে এই স্বর সম্রাট উৎসবে আজীবন জীবনকৃতির সম্মাননা জানানো হলো।

সম্মাননা গ্রহণের পর আবুল খায়ের বলেন, ‘আমি ধন্য এত বড় সম্মান পেয়ে। এই সম্মান আমাকে সংস্কৃতি সাধনায় উজ্জীবিত করবে।’ তিনি আরও বলেন, প্রথম দিকে আমার এই উচ্চাঙ্গ সংগীত কর্মকাণ্ডকে অনেকেই সমর্থন করেনি। তবে সমর্থনও পেয়েছি অনেকের কাছ থেকে। ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম ও প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ দুজন সব সময় আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন।

পণ্ডিত তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার বলেন, ‘এবার থেকে জীবনকৃতি সম্মাননা দেওয়া শুরু করেছি। আর প্রথমে তা বাংলাদেশের এই শিল্প সাধকের হাতে তুলে দিতে পেরে আমরা গর্বিত।’