পণ্ডিত অরুণ ভাদুড়ি আর নেই

পণ্ডিত অরুণ ভাদুড়ি
পণ্ডিত অরুণ ভাদুড়ি

ভারতের প্রখ্যাত শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী পণ্ডিত অরুণ ভাদুড়ি আর নেই। আজ সোমবার ভোরে কলকাতার এক নার্সিংহোমে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। তিনি স্ত্রী, পুত্র ও পুত্রবধূকে রেখে গেছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত একাডেমির শিক্ষক ছিলেন। ফুসফুসের সংক্রমণ হওয়ায় গত মঙ্গলবার তাঁকে নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়।

গতকাল রোববার সংবাদমাধ্যমকে চিকিৎসকেরা জানান, পণ্ডিত অরুণ ভাদুড়ি ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজে ভুগছেন। তাঁকে কৃত্রিম উপায়ে শ্বাস-প্রশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। তাঁর শরীরের বেশির ভাগ অঙ্গ স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছিল না। সব মিলিয়ে তাঁর অবস্থা সংকটাপন্ন। তাই তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে।

এদিকে পণ্ডিত অরুণ ভাদুড়ির মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সংগীত মহলে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোকবার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘কিরানা ও রামপুর ঘরানার শাস্ত্রীয় সংগীতশিল্পী পণ্ডিত অরুণ ভাদুড়ির প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। অরুণ ভাদুড়িকে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ২০১৪ সালে বঙ্গবিভূষণ সম্মান প্রদান করা হয়। তাঁর প্রয়াণ সংগীত জগতের কাছে এক বড় ক্ষতি। এই শোকের মুহূর্তে আমি তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’

সংগীতশিল্পী লোপামুদ্রা মিত্র বলেছেন, ‘মনটা খুব খারাপ। আজ মনে পড়ছে কতবার বাবার সঙ্গে ঝগড়া করে মাস্টারমশাইয়ের কাছে চলে গিয়েছি। তিনি আমাকে শান্ত করেছেন। গান শিখিয়েছেন। বিনিময়ে কিছুই নেননি। আমি যে মঞ্চে অন্য ধারার গান গাই, তাতে মাস্টারমশাইয়ের উৎসাহ ছিল বিরাট। কখনো বলেননি, তোমার গান শাস্ত্রীয় সংগীতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ; বরং আমার ভিন্ন প্রয়াসকে সাধুবাদ জানাতেন। স্মৃতিরা ভিড় করে আসছে আজ। বড্ড ভালো মানুষ ছিলেন।’

অল ইন্ডিয়া রেডিও আর দূরদর্শনের নিয়মিত শিল্পী ছিলেন পণ্ডিত অরুণ ভাদুড়ি। ভজন আর ঠুমরিতে তাঁর পারদর্শিতা মুগ্ধ করেছে সবাইকে। আজ সকালে নার্সিংহোম থেকে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বাসভবনে। এরপর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সংগীত একাডেমিতে রাখা হয়। আজই পণ্ডিত অরুণ ভাদুড়ির শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।