এক বছরে আসিফের ১০৬ গান

আসিফ আকবর
আসিফ আকবর

সংগীতাঙ্গনে একটা কথা কয়েক বছর ধরেই শোনা যাচ্ছে—গানের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। অ্যালবাম প্রকাশ তো এখন একেবারে নেই বললেই চলে। সবাই একক গান প্রকাশের দিকে বেশি ঝুঁকছেন। সেখানে যেন একেবারে উল্টো স্রোতে হেঁটে চলছেন জনপ্রিয় গায়ক আসিফ আকবর। মামলা-মেকাদ্দমা, হাজতবাস শেষেও বছরজুড়ে গানে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ছিলেন তিনি। নির্দিষ্ট সময় পর পর গান প্রকাশ করে গেছেন। বছর শেষে জানা গেল, আসিফের গাওয়া গানের সংখ্যা এক শ ছাড়িয়েছে। গায়ক আসিফ অবশ্য বছর শুরুর দিকে কথা দিয়েছিলেন, বছর শেষে যে করেই হোক এক শ গান গাইবেন।

বছরের শুরু থেকে গানে সরব হলেও, জুন মাসে ছন্দপতন ঘটে। মামলার কারণে কারাগারে যেতে হয় আসিফকে। সবকিছুর পরও গান নিয়ে তিনি এগিয়ে গেছেন। আসিফের হিসাব মতে, বছর শেষে ১০৬ টি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। তবে, আসিফের গাওয়া ১০৬ টি গানের মধ্যে ৬০ টি মুক্তি পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো বাকি গান তাদের সুবিধামতো সময়ে মুক্তি দেবেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘আমার কাজ হচ্ছে গান গাওয়া। কবে, কখন, কীভাবে মুক্তি দেবেন তা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত।’

আসিফের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল তখন তিনি কক্সবাজারে। স্টেজ শো করতে গতকাল শনিবার যন্ত্রশিল্পী দল নিয়ে সেখানে যান। কাল সোমবার তাঁর ঢাকায় ফেরার কথা। আসিফ বলেন, ‘এ বছরের প্রথম গান রেকর্ড করেছি ৩ জানুয়ারি। কক্সবাজারে থেকে ঢাকায় ফিরে ১০ জানুয়ারি থেকে আবার টানা গানের রেকর্ডিংয়ে ব্যস্ত হয়ে যাব। ১৮ জানুয়ারি টানা স্টেজ শো। এ বছর এক শ ত্রিশটি গান গাওয়ার ইচ্ছে আছে।’

আসিফ বলেন, ‘আমি যখন গানের জগতে আসি, তখন বছরে ২০০- ২৫০ গান গাইতাম। তখন তো অ্যালবামের যুগ ছিল। বছরে তিনটা একক অ্যালবাম, তিনটা দ্বৈত, অসংখ্য মিশ্র অ্যালবাম প্রকাশিত হতো। চলচ্চিত্রের গান তো ছিলই। এখন ভিডিওর যুগ হওয়াতে, একটি গানে সময় দিতে হয় বেশি। একটি গানে আমার সময় লাগে ৩০ মিনিট, কিন্তু ভিডিওতে সময় দিতে হয় দুই দিন। এ বছর অবশ্য ভিডিওর ওপর গুরুত্ব কমাব। স্টুডিও ভার্সন প্রকাশ করব বেশি।’

গায়ক আসিফ আকবরের বয়স এখন সাতচল্লিশ। তিনি বললেন, ‘আর কত দিনই গাইতে পারব। আমার মতে, গানের সংখ্যা বাড়াতে হবে। তাই কাজ করে চলছি। আমার সবচেয়ে বড় সুবিধা, আমি একক কোনো সংগীত পরিচালক দিয়ে কাজ করি না। আমার সঙ্গে নতুন-পুরনো মিলিয়ে ৫৭ জন গীতিকার সুরকার ও সংগীতপরিচালক কাজ করেন। যে কারণে আমার কাজ করতে অসুবিধা হয় না। আমি এমনিতে সব সময় হিসাব-নিকাশ করে চলি, এটা সবাই জানেন। এ বছরও তেমন হিসেব নিয়ে মাঠে আছি।’

দুই দশকের পেশাদার সংগীতজীবন আসিফের। গানের ক্যারিয়ার তুঙ্গে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অবসরে চলে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর ২০১২ সালে যখন আবার গানে ফেরেন তিনি। আসিফের মতে, ‘বিরতির পর আমি যখন কাজে ফিরি, তখন দেখি সংগীতাঙ্গনের মরা অবস্থা। গান প্রকাশের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। গান ভবিষ্যতে জীবনের সম্পদ, এটা ভেবে নিজের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ঢেলে সাজাই। আর এখন তো অনেক ধরনের গান গাইছি, যা আগে কখনো গাইনি। এ বছর সিলেটের আঞ্চলিক গান গাইবার পরিকল্পনাও আছে।’