ববিতার যে কথায় আঘাত পেয়েছেন ফারুক

আকবার হোসেন পাঠান ফারুক ও ববিতা
আকবার হোসেন পাঠান ফারুক ও ববিতা

গুণী অভিনেত্রী ববিতার একটি কথায় আঘাত পেয়েছেন নায়ক ফারুক। সম্প্রতি এক সভায় এ নিয়ে আক্ষেপ করেছেন তিনি। ববিতার মতো অভিনেত্রী কী করে এমন কথা বলতে পারেন, তা ভেবে বিহ্বল হয়ে পড়েন অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান ফারুক!

গতকাল শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে ছিল প্রয়াত চলচ্চিত্রকার ও সাহিত্যিক আমজাদ হোসেনের স্মরণসভা। সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম। তিনি ছাড়াও ওই সভায় বক্তব্য দেন নাট্যজন মামুনুর রশীদ, অভিনেতা ও সাংসদ আকবর হোসেন পাঠান ফারুক, বাংলাদেশ পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার, ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলীক, চলচ্চিত্রকার মসিহ উদ্দিন সাকের, অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী, আমজাদ হোসেনের স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার চৌধুরী, ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল ও সোহেল আরমান।

নিজের বক্তব্যে ফারুক বলেন, ‘গুণী নায়িকা ববিতা। তিনি একটি পত্রিকায় বলেছেন, তাঁর জীবনে অভিনয় ও চরিত্রের দিক থেকে সেরা ছবি নাকি সত্যজিৎ রায়ের “অশনিসংকেত”। এ কথাটি আমাকে আঘাত দিয়েছে। একটি টক শোতে আমি বলেছিলাম, ববিতার জীবনের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র আমজাদ হোসেন পরিচালিত “গোলাপী এখন ট্রেনে”। বহু বছর পর আমি নিজে ছবিটি দেখে কথাটি বলেছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘ওই ছবির “একটা কিছু ক গোলাপী” সংলাপটি সারা দেশে জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছিল। ছবিতে থাপ্পড় খেয়ে চুপ করে থাকে গোলাপী। এই চুপ করে থাকার একটি অর্থ ছিল। সেটা হচ্ছে, নিরীহ মানুষের মার খাওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকে না।’

ববিতার উদ্দেশে ফারুক বলেন, ‘ববিতা কি এসব বোঝেন না? তিনি হয়তো ছবিটি ভালো করে দেখেননি। দুঃখ লাগে, যখন কেউ সত্য কথা বলতে চায় না।’

আমজাদ হোসেনের স্মরণসভায় (বাঁ থেকে) মোল্লা জালাল, সাজ্জাদ হোসেন, সুরাইয়া আক্তার চৌধুরী, মসিহ উদ্দিন সাকের, মামুনুর রশীদ, ফারুক, গুলজার। ছবি: সংগৃহীত
আমজাদ হোসেনের স্মরণসভায় (বাঁ থেকে) মোল্লা জালাল, সাজ্জাদ হোসেন, সুরাইয়া আক্তার চৌধুরী, মসিহ উদ্দিন সাকের, মামুনুর রশীদ, ফারুক, গুলজার। ছবি: সংগৃহীত

আমজাদ হোসেনের সঙ্গে চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা করেছিলেন ফারুক। কিন্তু সেটা আর করা হলো না তাঁদের। এ নিয়ে আক্ষেপ করে ফারুক বলেন, ‘এফডিসিতে বসে আমাদের কথা হতো, কী হবে চলচ্চিত্রের! আমি বলেছিলাম, ভাই, ডিজিটাল সিস্টেম খুব মজার, খুব সহজ। চলুন, আমরা আবার ছবি তৈরি করি। জানি না ছবি আর বানানো হবে কি না। আমার অনুরোধ, আমজাদ ভাইয়ের নামে যেকোনো একটা কিছুর নামকরণ করুন আপনারা। এফডিসির সঙ্গে কথা বলে আমি সেখানে তাঁর স্মৃতি রক্ষার জন্য কাজ করব।’

আমজাদ হোসেনের স্মরণে স্মরণসভার আয়োজন করে জামালপুর সামাজিক-সাংস্কৃতিক পরিষদ। সংগঠনটির সহসভাপতি মির্জা আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোল্লা জালাল এবং স্বাগত বক্তব্য দেন পরিষদের মহাসচিব রাশেদুল হাসান। গত ১৪ ডিসেম্বর ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেন।