আলাউদ্দীন আলী শঙ্কামুক্ত নন

আলাউদ্দীন আলী
আলাউদ্দীন আলী

বরেণ্য গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক ও বাদ্যযন্ত্রশিল্পী আলাউদ্দীন আলী শঙ্কামুক্ত নন। তিনি ফুসফুসের প্রদাহ ও রক্তে সংক্রমণ সমস্যায় ভুগছেন। তিনি রাজধানীর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন। এমনটাই জানালেন এই বেসরকারি হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী।

আলাউদ্দীন আলীর স্ত্রী ফারজানা মিমি জানান, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর সন্ধ্যায় আলাউদ্দীন আলী বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তাঁর খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারছিলেন না। পাশাপাশি তাঁর উচ্চ মাত্রায় জ্বর ছিল। সবকিছু মিলিয়ে অবস্থা জটিল আকার ধারণ করে। তাঁকে বাসায় রাখা নিরাপদ মনে করেননি, তাই দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আর হাসপাতালে আনার পর দেখা যায়, আলাউদ্দীন আলীর হার্টের রেট অনেক বেশি।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসকেরা প্রয়োজনীয় পরীক্ষা শেষে রাত সাড়ে ১১টায় তাঁকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করেন।

ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী আরও জানান, আলাউদ্দীন আলীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে এখনই কিছু বলা সম্ভব না। তাঁকে প্রয়োজনীয় ওষুধ ও অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। তাঁর কিছুটা উন্নতি হয়েছে, তবে তা উল্লেখ করার মতো কিছু না। তাঁর শারীরিক অবস্থা কোন দিকে যাচ্ছে, তা জানার জন্য ৭২ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে।

আলাউদ্দীন আলী বাংলা গান, বিশেষ করে বাংলা চলচ্চিত্রে অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান তৈরি করেছেন। তিনি একই সঙ্গে সুরকার, সংগীত পরিচালক, বেহালাবাদক ও গীতিকার। গান লিখে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন। গুণী এই মানুষটির জন্ম ১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর মুন্সিগঞ্জের বিক্রমপুরের টঙ্গিবাড়ী থানার বাঁশবাড়ী গ্রামে। তাঁর বাবা ওস্তাদ জাদব আলী। মায়ের নাম জোহরা খাতুন।

দেড় বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে ঢাকার মতিঝিলের এজিবি কলোনিতে চলে আসেন আলাউদ্দীন আলী। তিন ভাই, দুই বোনের সঙ্গে সেই কলোনিতেই বড় হন এই গুণী শিল্পী। সংগীতে প্রথম হাতেখড়ি ছোট চাচা সাদেক আলীর কাছে। পরে ১৯৬৮ সালে বাদ্যযন্ত্রশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রজগতে পা রাখেন। শুরুটা শহীদ আলতাফ মাহমুদের সহযোগী হিসেবে, পরে প্রখ্যাত সুরকার আনোয়ার পারভেজের সঙ্গে কাজ করেন দীর্ঘদিন।

লোকজ ও ধ্রুপদি গানের সংমিশ্রণে গড়ে ওঠা আলাউদ্দীন আলীর সুরের নিজস্ব ধরন বাংলা সংগীতে এক আলাদা ঢং হয়ে উঠেছে প্রায় চার দশক ধরে। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তানের বহু স্বনামধন্য শিল্পী তাঁর সুরে গান করে নিজেদের সমৃদ্ধ করেছেন।