রাষ্ট্র যখন স্বীকৃতি দেয়, ভালো অনুভূতি হয়: সুবর্ণা

সুবর্ণা মুস্তাফা
সুবর্ণা মুস্তাফা
>

ঘোষিত হয়েছে একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণী ব্যক্তিদের নাম। অভিনয়ে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এবার একুশে পদক অর্জন করেছেন সুবর্ণা মুস্তাফাও। কয়েক দশক ধরে মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে দাপুটে বিচরণ তাঁর। তাঁর অভিনয়নৈপুণ্য মুগ্ধ করেছে এ দেশের অগণিত ভক্ত ও দর্শককে। শক্তিমান এই অভিনয়শিল্পীকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একুশে পদক প্রদানের সিদ্ধান্তে খুশি অভিনয় ও সংগীতজগতের অনেকে। একুশে পদকপ্রাপ্তির ঘোষণা আসার পর প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন বরেণ্য অভিনয়শিল্পী সুবর্ণা মুস্তাফা। জানালেন পদকপ্রাপ্তির অনুভূতি।

আজ থেকে দেড় যুগ আগে, ২০০১ সালে আপনার বাবা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গোলাম মুস্তাফা একুশে পদক অর্জন করেন। এবার আপনি। বাবার পর মেয়ে একই সম্মাননা অর্জনের অনুভূতি কেমন?
বিষয়টা অবশ্য ওভাবে ভাবিনি। নিঃসন্দেহে এটা অসম্ভব একটা গর্বের মুহূর্ত। রাষ্ট্র যখন একজনকে স্বীকৃতি দেয়, এটা ভালো অনুভূতি হয়। সেই একজন যখন আমি, ভালো লাগা তো আরেকটু বেশি হওয়াই স্বাভাবিক। পুরস্কার দায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়। আগামী দিনে যাতে কাজ ঠিকমতো করে যেতে পারি, সেই চেষ্টা করে যাব।

অনেকে বলছেন, একুশে পদক আরও আগে আপনার পাওয়া উচিত ছিল। আপনার কি মনে হয় একটু দেরিতে এই অর্জন?
আমি ব্যাপারগুলো ওভাবে দেখি না। আমি তো কখনো কোনো কিছুই চাই না, ধরাধরি করি না। মনের আনন্দে আমি আমার কাজ করি। দেরিতে হোক বা এখন হোক—পাওয়া নিয়ে কথা। আগেও যাঁরা পেয়েছেন, যোগ্যরা পেয়েছেন। আমি ওভাবে চিন্তা করতে চাই না।

পুরস্কারটা কাউকে উৎসর্গ করতে চান কি না?
পেইন্টিং বা স্থাপত্য ছাড়া এই ধরনের পুরস্কার, বিশেষ করে অভিনয়, যা আসলে একক কিছু নয়। এই যে এত বছর ধরে অভিনয় করছি, আমার এই চলার পথে অন্য অভিনয়শিল্পী, কলাকুশলী, সহশিল্পী, এদের সবারই একটা অবদান আছে। এককভাবে তো আর অভিনয় হয় না। আমার এই অর্জন সেলিম আল দীন, আবদুল্লাহ আল মামুন, নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, গোলাম মুস্তাফা, হুমায়ুন ফরিদী, রাইসুল ইসলাম আসাদসহ আমার সব সহশিল্পী, পরিচালক, চিত্রনাট্যকার কলাকুশলী প্রত্যেকের সঙ্গে ভাগ করতে চাই।

জাতীয় পর্যায়ের আরও অনেক অর্জন আপনার ঝুলিতে। আপনার কাছে একুশের পদকের বিশেষত্ব কী?
এটি রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পুরস্কার। বিশাল ঘটনা। একটা দেশের অন্যান্য যেকোনো অর্জনের থেকে এটি অনন্য। অনেক বড় একটা ব্যাপার। আরেকটা বিষয়, একুশে পদক দেশের ব্যাপার তো। আমি তো দেশের ব্যাপারে সব সময় বলি, দেশ আমার কাছে সব সময় আগে। দেশকে অতিক্রম করে কোনো কিছু না। দেশের সঙ্গে চলি আমরা। একুশ নামটাই তো অদ্ভুত, মনের ভেতর অন্য রকম একটা অনুভূতি সৃষ্টি করে। আমি খুবই হ্যাপি।

একুশে পদক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে গ্রহণ করবেন। এর আগেও প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নিয়েছেন। এটার অনুভূতি কেমন?
এটা অনেক অনেক বিশাল সম্মানের ব্যাপার। সবার জীবদ্দশায় এমন সৌভাগ্য হয়ও না। এই যে আজম খান একুশে পদক পাচ্ছেন, এটা আমাকে এত আপ্লুত করেছে। আমি খুবই খুশি। জীবিত অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নিতে পারাটা বিরাট ঘটনা।