সেকালের প্রেম

>

সেকালে বিটাউনে প্রেমের সংজ্ঞা ছিল একদম আলাদা। অনেক নায়িকা নিজের ভালোবাসাকে বাঁচিয়ে রাখতে সারা জীবন বিয়ে পর্যন্ত করেননি। অনেকে বিয়ে করলেও তাদের প্রেমকথা ডিজিটাল যুগেও হারিয়ে যায়নি। অনেকে আবার প্রেমের জন্য নিজেদের ক্যারিয়ার থেকে সবকিছু বিসর্জন দিয়েছেন। তেমনই কিছু প্রেমের গল্প প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি দেবারতি ভট্টাচার্যের কলমে।

রাজ কাপুর-নার্গিস
রাজ কাপুর-নার্গিস


রাজ কাপুর-নার্গিস
বিটাউনে আজও অমর হয়ে আছে রাজ কাপুর-নার্গিসের প্রেমকাহিনি। এই দুই বলিউড তারকা বিয়েথা করে আলাদা সংসারজীবন শুরু করলেও আজও সবাই মনে রেখেছেন তাঁদের ভালোবাসার কথা। নার্গিস ও রাজ কাপুর একে অপরকে পাগলের মতো ভালোবাসতেন। পর্দায় ও পর্দার বাইরেও তাঁদের দুর্দান্ত রসায়ন ছিল। কিন্তু বিবাহিত রাজ কাপুর স্ত্রী কৃষ্ণা কাপুরকে ছাড়তে পারেননি। নার্গিস আশায় ছিলেন যে রাজ তাঁকে বিয়ে করবেন। আর তাঁর জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করেছিলেন এই বলিউড সুন্দরী। ১০ বছর নার্গিস রাজ কাপুরের পথ চেয়ে বসেছিলেন। অবশেষে তিনি সুনীল দত্তকে বিয়ে করেন।


দেব আনন্দ-সুরাইয়া

দেব আনন্দ-সুরাইয়া
দেব আনন্দ-সুরাইয়া


বলিউডের আরেকটি জনপ্রিয় এবং অসম্পূর্ণ প্রেমকাহিনি হলো দেব আনন্দ ও সুরাইয়ার প্রেম। সুরাইয়া যখন দেব আনন্দের প্রেমে পড়েন তখন তিনি টিনএজার। এদিকে বলিউডের কিংবদন্তি নায়ক দেব আনন্দ এই বিটাউন নায়িকা তথা গায়িকার রূপ এবং গায়কির প্রেমে পড়েন। দেব ও সুরাইয়া একে অপরকে এতটাই ভালোবাসতেন যে তাঁরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু সুরাইয়ার পরিবার এই বিয়ের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে এই বলিউড অভিনেত্রীর দিদিমা চাননি দেবের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হোক। কারণ দেব আনন্দ হিন্দু, আর সুরাইয়া মুসলিম ছিলেন। দেব অনেক চেষ্টা করেন সুরাইয়াকে বিয়ের জন্য রাজি করাতে। কিন্তু পরিবারের অমতে গিয়ে বিয়ে করতে পারেননি সুরাইয়া। পরে দেব আনন্দ বিয়ে করেছিলেন কল্পনা কার্তিককে। কিন্তু সুরাইয়া আর বিয়ে করেননি। পরে দেব আনন্দকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তিনি আফসোস করেছিলেন।

সঞ্জীব কুমার-সুলক্ষণা পণ্ডিত
সঞ্জীব কুমার-সুলক্ষণা পণ্ডিত


সঞ্জীব কুমার-সুলক্ষণা পণ্ডিত
বলিউডের অত্যন্ত সুন্দরী অভিনেত্রী সুলক্ষণা পণ্ডিতের প্রেমে অনেকে হাবুডুবু খেয়েছেন। কিন্তু এই অভিনেত্রী শুধু একজনকেই মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসতেন, তিনি হলেন বলিউডের প্রভাবশালী নায়ক সঞ্জীব কুমার। সঞ্জীব কুমার আর সুলক্ষণার প্রেমের কাহিনিও খুব জনপ্রিয় ছিল। ওই সময় আবার সঞ্জীব কুমারের সঙ্গে হেমা মালিনীর সম্পর্কের কথাও শোনা গিয়েছিল। সুলক্ষণা সঞ্জীব কুমারকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু বলিউডের এই অভিনেতা তাঁর প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। সুলক্ষণা তাঁর সঙ্গে সঞ্জীব কুমারের ব্রেকআপ মেনে নিতে পারেননি। ব্রেকআপের পর তিনি মানসিক অবসাদে ভুগতে থাকেন। শোনা যায়, সঞ্জীব কুমারের পরিবারে নাকি এক অভিশাপ ছিল। বিয়ের পর প্রথম সন্তানের জন্মের ১০ বছর পূর্ণ হলেই তার বাবার মৃত্যু হয়। সঞ্জীব কুমারের দাদা, কাকা, বাবা, ভাই সবার সঙ্গে একই ট্র্যাজেডি ঘটেছিল। এ জন্যই নাকি সঞ্জীব কুমার চিরকুমার ছিলেন।


নাসির হুসেন-আশা পারেখ

নাসির হুসেন-আশা পারেখ
নাসির হুসেন-আশা পারেখ


এদিকে আরেক বিটাউন সুন্দরী আজও অকপটে স্বীকার করেন যে তিনি জীবনে একটি পুরুষমানুষকে ভালো বেসেছিলেন। এখানে চিত্রনির্মাতা নাসির হুসেন এবং পঞ্চাশ দশকের দাপুটে অভিনেত্রী আশা পারেখের কথা বলা হচ্ছে। আশা সারা জীবন বিয়ে করেননি। নাসির ও তাঁর প্রেমের কথা কারও অজানা ছিল না। নাসির বিবাহিত ছিলেন। কিন্তু আশা কখনো চাননি নাসিরকে তাঁর পরিবার থেকে দূরে রাখতে। তিনি চাননি নাসির তাঁর বিবাহিত সম্পর্ক ভেঙে তাঁকে বিয়ে করুক। আশা পারেখ নিঃশর্তভাবে ভালোবেসে গেছেন নাসিরকে। ৭৬ বছরে দাঁড়িয়ে আজও জোর গলায় এই অভিনেত্রী বলেন আজীবন তিনি নাসিরকেই ভালোবেসেছেন। তাই বিয়ে করার কথা কখনো ভাবেননি তিনি।

আরও কিছু অসম্পূর্ণ প্রেম
বিবাহিত ধর্মেন্দ্র হেমা মালিনীকে বিয়ে করার জন্য তাঁর ধর্ম পর্যন্ত বদলে ছিলেন বলে জানা গেছে। রেখা ও অমিতাভ বচ্চনের প্রেমের কথা কারও অজানা নয়। রেখা বিয়ে করেও নিজেকে সুখী করতে পারেননি। তাঁর স্বামী মুকেশ আগরওয়াল আত্মহত্যা করেছিলেন। আজও নাকি রেখা অমিতাভের নামের সিঁদুর পরেন। মিঠুন-শ্রীদেবী একে অপরের প্রেমে পাগল ছিলেন। শোনা যায়, তাঁরা নাকি গোপনে বিয়ে করেছিলেন। এ ছাড়া সেকালের আরও অনেক প্রেমকাহিনি আজও অমর হয়ে আছে।