বাড়ি ফিরেই গাইছেন আকবর

আকবর
আকবর

কিছুদিন আগেও শরীরে ফোসকার যন্ত্রণায় হাসপাতালের বিছানায় ছটফট করেছিলেন গায়ক আকবর। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তখন প্রথম আলোকে বলছিলেন, ‘আমি বাঁচতে চাই, গাইতে চাই’।

আকবরের সেই আকুতি ছুঁয়ে যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হৃদয়। খবর প্রকাশের দুই সপ্তাহের মধ্যে তিনি আকবরের পরিবারকে ডেকে পাঠান গণভবনে। সেখানে আকবরের স্ত্রীর হাতে তুলে দেন ২২ লাখ টাকা। শুধু তা-ই নয়, অসুস্থ এই শিল্পীর চিকিৎসার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী তাঁর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের তদারকি করার নির্দেশও দেন। চিকিৎসায় গতি আসায় আকবর দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে থাকেন বলে জানান তাঁর স্ত্রী কানিজ ফাতেমা। চার দিন আগে মোটামুটি সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন তিনি। ফিরেছেন গানের মঞ্চেও। গতকাল রোববার রাতে আকবর যখন কথা বলছিলেন, তখন তাঁকে বেশ উৎফুল্ল মনে হচ্ছিল।

জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন আকবর। চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে না পারায় একসময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে ফ্রি ওয়ার্ডে নিয়ে চিকিৎসাসেবা দেয়। হাসপাতালে ফ্রিতে বিছানা জোগাড় হলেও চিকিৎসার অন্যান্য খরচের টাকা জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল তাঁর পরিবারকে। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে এলে তিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।

আকবর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় আমি সুস্থ হয়েছি। কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার নাই। আপনারাও আমার পাশে যেভাবে ছিলেন, এই ঋণ আমি শোধ করতে পারব না। আবারও গানের মঞ্চে ব্যস্ত হচ্ছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত যেন গান গেয়ে যেতে পারি।’

আকবর জানান, হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার পরদিন টাঙ্গাইলের সখীপুরে ভালোবাসা দিবসের একটি কনসার্টে অংশ নিয়েছেন তিনি।

আকবর বলেন, ‘অসুস্থতার কারণে এক মাস গান থেকে দূরে ছিলাম। এখন থেকে আবার নিয়মিত গাইব।’

আকবর জানান, তিনি প্রধানমন্ত্রীকে মা ডেকেছেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে (আকবর) ২২ লাখ টাকা দিয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন। ২ লাখ টাকার চেক ও ২০ লাখ টাকা সঞ্চয়পত্র করে দিয়েছেন। সেখান থেকে তিন মাস পরপর টাকা পাবেন চিকিৎসার জন্য।

আকবর বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশমতো চিকিৎসকেরা আমাকে যত্নের সঙ্গে চিকিৎসা করেছেন। যত দিন বাঁচব, প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।’

হানিফ সংকেতের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন আকবর। তিনি বলেন, ‘স্যারের (হানিফ সংকেত) কাছে আমার ঋণের শেষ নাই। অভিভাবক হিসেবে তাঁকে সব সময় সঙ্গে পেয়েছি।’

আকবর জানান, তাঁর পুরোপুরি সুস্থ হতে আরও সময় লাগবে। প্রতি সপ্তাহে পিজি হাসপাতালের চর্ম, কিডনি ও মেডিসিন বিভাগ থেকে চেকআপ নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে পিজি হাসপাতালের প্রধানের কাছে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, আকবরের চিকিৎসার জন্য যা যা খরচ হবে, পিজি হাসপাতাল তা বহন করবে।

আকবর বলেন, ‘পুরোপুরি সুস্থ হয়ে আগের মতো গান করার চেষ্টা করছি।’