যেমন চলছে 'ফাগুন হাওয়ায়' ও 'রাত্রির যাত্রী'

বলাকা সিনেমা হলে ছবি দেখতে আসা দর্শকদের একাংশ
বলাকা সিনেমা হলে ছবি দেখতে আসা দর্শকদের একাংশ

গেল শুক্রবার দেশের প্রেক্ষাগৃহে দুটি নতুন ছবি ফাগুন হাওয়ায় ও রাত্রির যাত্রী মুক্তি পেয়েছে। নুসরাত ইমরোজ তিশা ও সিয়াম আহমেদ অভিনীত ফাগুন হাওয়ায় ৫২টি এবং মৌসুমী ও আনিসুর রহমান মিলন অভিনীত রাত্রির যাত্রী ১৬টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। মুক্তির পাঁচ দিন হয়ে গেল, ছবি দুটি থেকে আশানুরূপ দর্শক সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বেশ কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহের ব্যবস্থাপকেরা। তবে সরেজমিনে দর্শক ও হল ব্যবস্থাপকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, রাত্রির যাত্রী থেকে ফাগুন হাওয়ায় ছবিটি দর্শক পছন্দে এগিয়ে আছে।

ঢাকার বলাকা সিনেমা হলে চলছে ফাগুন হাওয়ায়। গত মঙ্গলবার দুপুরের শো শুরু হওয়ার আগে সেখানে গিয়ে দর্শক জোয়ার দেখা গেল না। তবে ছবি দেখতে আসা অনেকেই ফাগুন হাওয়ায় ছবিটির প্রশংসা করেছেন। জানা গেছে, দিনের প্রদর্শনীর চেয়ে রাতের প্রদর্শনীতে দর্শক বাড়ে। গতকাল নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান ছবিটি দেখতে এসে প্রেক্ষাগৃহের প্রবেশমুখে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘শুনেছি ছবিটি ভালো হয়েছে। তা ছাড়া সিয়াম আমার পছন্দের অভিনেতা। এর আগে তাঁর পোড়ামন ২ ও দহন দেখেছি।’

বলাকা হলের ব্যবস্থাপক সাজিদ আলী বলেন, ‘ফাগুন হাওয়ায় ছবিটি মুক্তির দিন থেকেই যে দর্শকের জোয়ার, তেমনটা নয়। গত পাঁচ দিনে গড়ে মোটামুটি চলছে।’

বসুন্ধরা সিটির সিনেপ্লেক্স ও ধানমন্ডির সীমান্ত সম্ভারে প্রতিদিন ফাগুন হাওয়ায়–এর চারটি ও রাত্রির যাত্রীর দুটি করে প্রদর্শনী চলছে। ছবি দুটির মধ্যে ফাগুন হাওয়ায় নিয়ে প্রত্যাশা বেশি ছিল সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের। কিন্তু গত পাঁচ দিনে ছবিটি থেকে মোটামুটি সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানান সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘শুক্র ও শনিবার ফাগুন হাওয়ায় দেখতে অনেক দর্শক এসেছেন। এরপর থেকে টিকিট বিক্রি কমে গেছে। তবে তৌকীর আহমেদের ছবির গুণ আছে। আস্তে আস্তে দর্শক বাড়ে। এর আগে হালদা ও অজ্ঞাতনামা ছবি দুটিতে তেমনটাই দেখা গেছে। এদিকে বসুন্ধরা ও সীমান্ত সম্ভারে—দুটি জায়গাতেই রাত্রির যাত্রী ছবির টিকিট বিক্রি তেমন ভালো না বলে জানান এই ব্যবস্থাপক।’

যমুনা ব্লকবাস্টারে প্রতিদিন তিনটি করে প্রদর্শনী চলছে ফাগুন হাওয়ায় ছবির। আগামী সপ্তাহ থেকে চারটি করে শো চলবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির বিপণন কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান। মধুমিতা হলে ফাগুন হাওয়ায় ছবিটি ঢিমেতালে চলছে বলে জানান হল ব্যবস্থাপক আবদুল করিম। তিনি বলেন, ‘ছবিটির গল্প, নির্মাণ দুটোই ভালো। কিন্তু দর্শক জোয়ার নেই। মোটামুটি যাচ্ছে। আগের সপ্তাহের ছবিটি থেকে খানিকটা ভালো যাচ্ছে এই ছবি।’

অভিসার সিনেমা হলে রাত্রির যাত্রী চলছে। সেখানে গিয়ে দর্শকের আকাল দেখা গেল। হলের ব্যবস্থাপক আলমগীর হোসেনের কণ্ঠে হতাশার সুর। তিনি বলেন, ‘আশা নিয়েই ছবিটি নিয়েছিলাম। ভালো যাচ্ছে না।’

ঢাকার বাইরে থেকে একই রকমের হতাশার কথা মুঠোফোনে জানালেন কুষ্টিয়া বনানী হলের ব্যবস্থাপক মোকলেছুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ছবি নিয়ে মন্তব্য করব না। এখন প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ করে দেওয়ার সময় এসেছে।’

হল ব্যবস্থাপকেরা যা-ই বলুন না কেন, রাত্রির যাত্রী ছবির পরিচালক হাবিবুল ইসলাম হাবিব জানিয়েছেন, সিনেমার এই সংকটের দিনেও রাত্রির যাত্রী ছবির টিকিট বিক্রি ভালো।

ফাগুন হাওয়ায় ছবির পরিবেশনা প্রতিষ্ঠান টাইগার মিডিয়ার পরিচালক জাহিদ হাসান জানান, ছবির টিকিট বিক্রি আশাব্যঞ্জক। ভাষা আন্দোলনের গল্প নিয়ে ছবিটি। হয়তো অনেকেই ভাবছেন, ভারী গল্পের ছবি। ব্যাপারটা তা নয়। ছবি দেখার পর অনেক দর্শকেরই ধারণা পাল্টেছে। তিনি বলেন, ‘আস্তে আস্তে দর্শক বাড়বে আশা করছি। তা ছাড়া সামনে ২১ ফেব্রুয়ারির দিন একটা ভালো সেল আসতে পারে।’