ফিনল্যান্ডে গানের যুদ্ধে বাংলাদেশের তারানা

‘দ্য ভয়েস অব ফিনল্যান্ড’ অনুষ্ঠানে গাইছেন বাংলাদেশের ফারজানা তারানা। ছবি–সংগৃহীত
‘দ্য ভয়েস অব ফিনল্যান্ড’ অনুষ্ঠানে গাইছেন বাংলাদেশের ফারজানা তারানা। ছবি–সংগৃহীত

দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় প্রশাসন বিষয়ে পড়াশোনা শেষে উচ্চ শিক্ষার্থে ২০১৬ সালে ফিনল্যান্ড চলে যান বাংলাদেশের ফারজানা তারানা। শব্দগ্রহণ ও সংগীত প্রযোজনা বিষয়ে সেখানকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছর মেয়াদি পড়াশোনায় মনোযোগী হন। পড়াশোনার ফাঁকে অংশ নেন একটি প্রতিযোগিতায়। ‘দ্য ভয়েস অব ফিনল্যান্ড’ শিরোনামের এই আসরে বর্তমানে ব্যাটল রাউন্ডে লড়ছেন তিনি। ফিনল্যান্ড থেকে প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তারানা। 

‘দ্য ভয়েস অব ফিনল্যান্ড’–এর এটি অষ্টম আসর। ২০১১ সালে ফিনল্যান্ডে নেলনেন টেলিভিশনে এই অনুষ্ঠানের প্রচার শুরু হয়। ২০১৯ সালের আয়োজনে অংশ নেন তারানা। তিনি জানান, এ বছর এই আয়োজনের প্রথম ধাপে অংশ নেন ২ হাজার প্রতিযোগী। তাঁদের মধ্য থেকে দ্বিতীয় ধাপে জায়গা করে নেন ৫০০ জন, তৃতীয় ধাপে (ব্লাইন্ড অডিশন) ১০০ জন, চতুর্থ ধাপে (ব্যাটল) রাউন্ডে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৫০ জন। চার ধাপ শেষে পঞ্চম ধাপে (নকআউট ) থাকবেন ২৪ জন। এরপর শুরু হবে ষষ্ঠ ধাপ বা লাইভ ভোটিং। আমি আছি সেরা চব্বিশে ঢোকার লড়াইয়ে। সেরা চব্বিশের এই লড়াইয়ের সম্প্রচার ‘নেলনেন’ টেলিভিশনে প্রচারিত হবে আগামী ৭ মার্চ। ব্লাইন্ড অডিশন প্রচার হয় ২২ ফেব্রুয়ারি।

নিজ দেশে স্বপ্নের বাস্তবায়ন করতে না পারলেও দেশের বাইরে গিয়ে সে পথে হাঁটার সুযোগ পেয়ে গেছেন ফারজানা তারানা। এ নিয়ে উচ্ছ্বসিত তারানা বলেন, ‘সংগীত নিয়ে পথ চলব, এই স্বপ্ন বহুদিনের। কিন্তু নানা কারণে তা বিকশিত করার সুযোগ হয়নি। দ্য ভয়েস অব ফিনল্যান্ড আমার জীবনের সেই স্বপ্নের বাস্তাবায়নের পথে সহায়ক বড় ভূমিকা রেখেছে। আমি অনেক বেশি অনুপ্রাণিত। আমি বিশ্বাস করি, এই প্রতিযোগিতার সংগীতে আমার পথচলার আরও বেশি উৎসাহ জোগাবে।’

‘দ্য ভয়েস অব ফিনল্যান্ড’ অনুষ্ঠানে গাইছেন বাংলাদেশের ফারজানা তারানা। ছবি–সংগৃহীত
‘দ্য ভয়েস অব ফিনল্যান্ড’ অনুষ্ঠানে গাইছেন বাংলাদেশের ফারজানা তারানা। ছবি–সংগৃহীত

ফারজানা তারানা জানান, ছোটবেলা থেকেই গান গাইতে পছন্দ তাঁর। কিন্তু গানকে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে মায়ের কাছ থেকে কোনো অনুপ্রেরণা পাননি। দশটা সাধারণ মেয়ের মতো নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিবিএ পড়তে বাধ্য হতে হয়, যেন পড়ালেখা শেষে করপোরেট চাকরি পাওয়া যায়।

ফারজানা জানান, তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে বিবিএ, এমবিএ শেষ করেন। বাবার মৃত্যুর পর হতাশ হয়ে পড়েন। চলে যান ফিনল্যান্ডে। দূর পরবাসে যাওয়ার ছুঁতো ছিল মাস্টার্স ডিগ্রি, কিন্তু মনে ছিল অন্য আশা। শব্দগ্রহণ ও সংগীত প্রযোজনার ওপর চার বছর মেয়াদি পড়াশোনার ফাঁকে উন্মোচিত হয় সেই আশা ও স্বপ্নের। অনেক কষ্টের পরও একসঙ্গে চলতে থাকে সংগীত নিয়ে পরিকল্পনা আর পড়াশোনা।