যৌনতার নামে এসব কী!

জোয়া আখতার
জোয়া আখতার

সুস্থ যৌনতা যাকে বলে, ভারতীয় ছবিতে সেসব কখনোই ছিল না। যৌনতার নামে বরং এতকাল দেখানো হয়েছে ধর্ষণ, শারীরিক নির্যাতন ও নারীদের পীড়নের দৃশ্য। একটি প্রজন্মকে শৈশব থেকে এসব দেখানোর ফল এখন পাচ্ছে ভারতবাসী। সম্প্রতি নিজের ছেলেবেলায় দেখা সিনেমার এ দৃশ্য নিয়ে এভাবেই বললেন বলিউডের চলচ্চিত্র নির্মাতা জোয়া আখতার।

সিনেমায় সুস্থ যৌন সম্পর্ক দেখানোর বদলে অসুস্থ যৌনতাকে প্রণোদনা জুগিয়েছেন পরিচালকেরা। জোয়া আখতার বলেন, ‘অনেক পরে এসে লক্ষ করলাম, আমি নিজেই ছেলেবেলা থেকে সেসব দেখে বড় হয়েছি। ধর্ষণের দৃশ্য, নারীদের পীড়ন, অপমান করার দৃশ্য দেখিয়েছেন আমাদের পরিচালকেরা। কিন্তু সুস্থ যৌন সম্পর্কের দৃশ্য আমরা তেমন দেখতে পাইনি।’

জোয়া মনে করেন, ছোটবেলায় দেখা ওই দৃশ্যগুলো মানুষের মস্তিষ্কের ওপর কুপ্রভাব ফেলে। তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্রে মানুষ চুমু খেতে দেখেনি, কোমল প্রেম দেখেনি। মানুষকে যৌনমিলন করতে বা ভদ্র আচরণ করতে দেখেনি।’ ‘গণমাধ্যম ও বিনোদন অঙ্গনে নারী চরিত্র’ শীর্ষক এক আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি। বললেন, ‘যৌনতাকে পর্দায় উপস্থাপনকে সমস্যা মনে করা ভুল। আপনারা কী দেখিয়েছেন! নারীরা বলবে “না”, অমনি তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। শৈশবে এসব দৃশ্য কেন দেখতে হবে। শিশুরা যখন বেড়ে উঠবে, তখন তাকে খারাপ জিনিসগুলো পরিবর্তন করা শেখাতে হবে।’

একজন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নারী হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য পুরুষের ভূমিকাও জরুরি। জোয়া আখতার মনে করেন, তাঁর ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি একজন কড়া নারীবাদী হিসেবে বেড়ে উঠেছি। ইন্ডাস্ট্রিতে আমার পুরুষ বন্ধু, সহকর্মীসহ ইন্ডাস্ট্রির বাইরে অনেক বন্ধু আছেন, যাঁরা প্রায় সবাই নারীবাদী। নারীবাদ বিষয়টি বুঝতে আমার যথেষ্ট সময় লেগেছে। কারণ আমার পৃথিবীতে এই বিষয়গুলোর কোনো স্থান ছিল না। বলিউডের সিনেমায় এখন থেকে বেশি বেশি নারীদের গল্প রাখা উচিত। সেখানে নারী সম্পৃক্ত নানা ঘটনা জুড়ে দেওয়া দরকার।’

জোয়া বলেন, ‘ছবি বানানোর সময় আমি সেই সব পুরুষের চরিত্রই রাখি, পৃথিবীতে আমি যেমন পুরুষ দেখতে চাই। নারীদের গল্পগুলোও বেশি বেশি করে সিনেমায় আনা দরকার।’

সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে জোয়া আখতার পরিচালিত ছবি ‘গলি বয়’। ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন রণবীর সিং ও আলিয়া ভাট। ডিএনএ ইন্ডিয়া