সিনেমা কম, এফডিসির ক্যামেরা ব্যবহার হয় বিজ্ঞাপনে

কয়েক বছর ধরেই কমে গেছে চলচ্চিত্র নির্মাণ। সারা দেশে বন্ধ হয়েছে সিনেমা হলও। কিন্তু উল্টো দিকে বেড়েছে বিএফডিসির (বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন) আধুনিক সব প্রযুক্তি। বিশেষ করে ডিজিটাল ক্যামেরা। অত্যাধুনিক আটটি ডিজিটাল ক্যামেরা আছে এখন এফডিসিতে। এর মধ্যে রেড ড্রাগন আছে দুটি, রেড স্কারলেট এবং সনি ব্র্যান্ডের ক্যামেরা পাঁচটি। তবে এসব ক্যামেরা এখন বেশির ভাগ সময়ই ব্যবহার হয় বিজ্ঞাপন বা টেলিভিশন অনুষ্ঠান নির্মাণের কাজে। এর বড় কারণ, সিনেমার শুটিং কমে যাওয়া বলে উল্লেখ করেন অনেকে। এফডিসির কর্মকর্তারা জানান, বিজ্ঞাপনের জন্য আগেও ক্যামেরা ভাড়া হতো। কিন্তু সেটা তুলনামূলক কম। নিলেও অনেক আগে থেকে বুকিং দিতে হতো।

এফডিসির অতিরিক্ত পরিচালক (বিক্রয়) শহীদুল আলম জানান, ক্যামেরা ভাড়া দেওয়ার বেলায় সবার আগে চলচ্চিত্রকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। কিন্তু সেটা কম হচ্ছে বলে বিজ্ঞাপন ও টেলিভিশন অনুষ্ঠানের জন্য ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল এফডিসিতে ফ্লোর ভাড়া নিয়ে অনুষ্ঠান নির্মাণ করে। সামনে ঈদ আসছে। আশা করছি, ওই সময় ক্যামেরাগুলো নিয়মিত ভাড়া যাবে। কারণ এখন সিনেমার জন্য ক্যামেরা ভাড়া কমে গিয়েছে।’

জানা গেছে, এফডিসির ক্যামেরা দুই শিফটে ভাড়া দেওয়া হয়। এফডিসির ভেতরে ব্যবহার হলে এক রকম ভাড়া, বাইরে নিয়ে গেলে আরেক রকম ভাড়া। এর মধ্যে রেড ড্রাগন ক্যামেরার ভাড়া ছয় হাজার ইনডোরে এবং সাড়ে ছয় হাজার আউটডোরে। একইভাবে রেড স্কারলেটের ভাড়া চার হাজার ও সাড়ে চার হাজার এবং সনি ক্যামেরার ভাড়া পাঁচ হাজার ও সাড়ে পাঁচ হাজার। তবে বিজ্ঞাপনের জন্য ভাড়ার বেলায় শতকরা ১৫ ভাগ বাড়ে। এফডিসি কর্তৃপক্ষ মূলত সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা একটা শিফট এবং ৫টা থেকে রাত ১১টা আরেকটা শিফট হিসেবে ক্যামেরা ভাড়া দেয়।।

ক্যামেরা ইউনিটের স্টোরকিপার আলমগীর হোসেন জানান, এখন বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্রের জন্য সমানতালে ভাড়া যাচ্ছে ক্যামেরাগুলো। তিনি বলেন, ‘অনেক বিজ্ঞাপনের শুটিং এফডিসির ভেতরেই হয়। তাই অনেকে ক্যামেরা এখান থেকেই নেন। এ ছাড়া আমাদের ইউনিটের লোকবলও আছে। তাই অসুবিধা হয় না।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্র মিলিয়েও সব কটি ক্যামেরা নিয়মিত ভাড়া যায় না। দিনে হয়তো তিন-চারটা। আর ক্যামেরার মান অনুযায়ী আমাদের ভাড়াও তুলনামূলক কম। এ কারণে অনেকেই আগ্রহী হয়ে ভাড়া নিতে আসেন।’

তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আশা প্রকাশ করেন, সিনেমার সুদিন ফিরলে এফডিসির ক্যামেরা চলচ্চিত্রের জন্য ব্যবহার হবে। সেই দিনের অপেক্ষায় আছেন বেশির ভাগ কর্মী।