চমক দেখাল চমক দেখাবে

ক্যাপ্টেন মার্ভেল
ক্যাপ্টেন মার্ভেল

নারী দিবসে মার্ভেল সিনেমাটিক ইউনিভার্স (এমসিইউ) নিয়ে এল বিশাল এক উপহার। এমসিইউর প্রথম নারী অতিমানবের সিনেমা ক্যাপ্টেন মার্ভেল মুক্তি পায় এদিন বিশ্বজুড়ে। ছবিটি আয়ের দিক থেকে একের পর এক মাইলফলক ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এটি চলছে বাংলাদেশের কয়েকটি মাল্টিপ্লেক্সেও। মার্ভেলের নতুন এই শক্তিশালী নারী সুপারহিরোকে নিয়েই আমাদের এবারের আয়োজন—

অ্যাভেঞ্জার্সের শুরু যেখানে
কোনো স্পয়লার দিচ্ছি না। এটা বেশ আগে থেকেই প্রচার হয়ে আসছে যে ক্যাপ্টেন মার্ভেল ছবিটি ’৯০-এর দশকের প্রেক্ষাপটে তৈরি। তখনো ‘অ্যাভেঞ্জার্স ইনিশিয়েটিভ’-এর জন্ম হয়নি। তখনো শীতনিদ্রা ভাঙেনি ক্যাপ্টেন আমেরিকার, কিংবা টনি স্টার্কও তৈরি করেননি তাঁর সেরা আবিষ্কার আয়রনম্যান-এর স্যুটটি। এই ছবি সেই শুরুর গল্পটা নিয়েই। ছবিতে চকচকে মাথার রাশভারী নিক ফিউরিকে দেখা গেছে কুচকুচে কালো চুলওয়ালা তরুণের চরিত্রে। এলিয়েনদের সঙ্গে যে নিক ফিউরির পুরোনো দোস্তি এই ছবির মাধ্যমে সেটাই জানতে পেরেছেন মার্ভেলের ভক্তরা।

ব্যবসা ভালো, তবু হতাশা!

ক্যাপ্টেন মার্ভেল নিয়ে আশাবাদী ছিলেন এর পরিচালক ও প্রযোজকেরা। বিশেষ করে ডিসি কমিকসের ওয়ান্ডার ওম্যান-এর সাফল্য দেখার পর তাঁদের প্রত্যাশার পারদ আরও উঁচুতে উঠে যায়। বক্স অফিসে আয়ের দিক থেকে ভরাডুবি হয়নি। তবে নির্মাতা ও প্রযোজকদের প্রত্যাশার সেই পারদ ক্যাপ্টেন মার্ভেল সেভাবে ছুঁতেও পারেনি। যুক্তরাষ্ট্রে ছবির আয়ের গতি ধীর। তবে আন্তর্জাতিক বাজার বলে ভিন্ন কথা। যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের বিভিন্ন দেশে এই ছবি চমক দেখাচ্ছে। পাশের দেশ ভারতে তো অমিতাভ বচ্চনের ছবি বদলাকেও এটি পেছনে ফেলে দিয়েছে। সেখানকার বক্স অফিসে এই ছবি আছে এক নম্বর অবস্থানে।

সবচেয়ে শক্তিশালী ক্যাপ্টেন মার্ভেল

এটুকু স্পয়লার তো দেওয়াই যায়। কারণ এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চাউর হয়ে গেছে যে, ক্যাপ্টেন মার্ভেল হলো এমসিইউর সবচেয়ে শক্তিশালী অতিমানব। তাই অ্যাভেঞ্জার্স: ইনফিনিটি ওয়ার দেখে যাদের নিশ্বাসে নিশ্বাসে হতাশা মিশে গিয়েছিল, স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারছিলেন না। ক্যাপ্টেন মার্ভেল তাঁদের পুরোনো সব দুঃখ ঘুচিয়ে দেওয়ার প্রত্যয় নিয়ে এসেছে। তাঁর শক্তির সামনে ‘থানোস’-এর (অ্যাভেঞ্জার্স-এর সবচেয়ে শক্তিশালী খলচরিত্র) ধ্বংসাত্মক তুড়ি তো নস্যি!

কেমন করলেন ব্রি লারসন?

প্রেক্ষাগৃহে বসে ছবিটি দেখলে ক্যাপ্টেন মার্ভেলরূপী ব্রি লারসনের উত্তাপ আপনি ভালোই আঁচ করতে পারবেন। শুরুতে সংশয় ছিল অনেকের মনে, ব্রি লারসন ক্যাপ্টেন মার্ভেল চরিত্রটির সঙ্গে কতটা মানিয়ে নিতে পারবেন? কারণ ধুন্ধুমার ‘সুপারহিরো’ ছবিতে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা একেবারেই ছিল না অস্কারজয়ী এই অভিনেত্রীর। তাই ২০১৬ সালের ২৩ জুলাইয়ে এই ছবির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর থেকে অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন ব্রি।
সেই পরিশ্রমের মিষ্টি ফল এখন পাচ্ছেন তিনি।

আরও কিছু চমক
ছবিটি যে মাধ্যমেই দেখুন না কেন, আপনার নজরে ও মনে এই ছবির একটি চরিত্র গেঁথে থাকবে অনেক দিন। সেই চরিত্রের নাম ‘গুজ’। একটা বিড়াল কীভাবে একটি ছবির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে ওঠে, এটা ক্যাপ্টেন মার্ভেল না দেখলে ধারণা করা যাবে না। তাই মন দিয়ে চোখ রাখুন গুজের দিকে। আর হ্যাঁ, সিনেমা শেষ হলেই উঠে যাবেন না যেন। আপনি যদি মার্ভেল-ভক্ত হন, তাহলে তো আর নতুন করে বলার দরকার নেই যে মার্ভেলের ‘এন্ড ক্রেডিট সিন’ (সমাপনী দৃশ্য) কতটা রোমাঞ্চকর হতে পারে। ক্যাপ্টেন মার্ভেল-এও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ছবিটির একটি সমাপনী দৃশ্য যেখানে আসন্ন ছবির ব্যাপারে আঁচ দিয়েছে দর্শকদের। দ্বিতীয় দৃশ্যটি সবাইকে অতীতের কিছু প্রশ্নের জবাব জানিয়ে দিয়েছে।

সূত্র: ভ্যারাইটি, সান, আইএমডিবি ইত্যাদি