চূড়ান্ত পর্বে ১০ তরুণ নির্বাচিত

তিন বিচারক—অমিতাভ রেজা, রুবাইয়াত হোসেন ও মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর মুখোমুখি এক প্রতিযোগী
তিন বিচারক—অমিতাভ রেজা, রুবাইয়াত হোসেন ও মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর মুখোমুখি এক প্রতিযোগী

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী প্রজ্ঞা আহম্মদের অনেক দিনের ইচ্ছা একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বানাবেন। কিন্তু সে সাহস তাঁর কখনো হয়নি। ফেসবুকে মেরিল–প্রথম আলো আয়োজিত ‘আগামীর নির্মাতা’ প্রতিযোগিতার কথা জেনে তিনি আর দেরি করেননি। ছোট ভাইবোনের সহযোগিতায় মুঠোফোন আর ডিএসএলআর ক্যামেরা দিয়ে প্রজ্ঞা বানিয়ে ফেললেন ছয় মিনিটের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। সেই চলচ্চিত্র টিকেও গেল প্রতিযোগিতার বাছাইপর্বে।

গতকাল শনিবার তরুণদের জন্য ‘আগামীর নির্মাতা’ শীর্ষক কর্মশালায় কথা হয় ২১ বছর বয়সী প্রজ্ঞার সঙ্গে। ঢাকার বনানীর একটি কনভেনশন হলে কর্মশালার দ্বিতীয় দিনে অংশ নিয়ে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগে কখনোই চলচ্চিত্র বানাইনি। এই প্ল্যাটফর্মে এসে অনেক কিছু শিখলাম। নতুন বন্ধুদের চলচ্চিত্র নিয়ে করা কাজ ও ভাবনাগুলো জানলাম।’

গতকাল প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বের জন্য বিচারক চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাভ রেজা, রুবাইয়াত হোসেন ও মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বেছে নেন ১০ জন সম্ভাবনাময় তরুণ নির্মাতাকে। তাঁদের মধ্যে আছেন প্রজ্ঞা আহম্মদও। বাকিরা হলেন মো. জহিরুল ইসলাম, তাসনুফা সিমি, ইয়াসির ইউনুস, তানভীর আহম্মদ চৌধুরী, লস্কর নিয়াজ মাহমুদ, তাসমিয়া আফরিন, আবু রায়হান, মাহমুদ হাসান ও নভেরা হাসান।

তরুণ নির্মাতাদের জন্য মেরিল-প্রথম আলো যৌথভাবে আয়োজন করেছে আগামীর নির্মাতা শীর্ষক প্রতিযোগিতা। অনূর্ধ্ব–৪০ বছরের নির্মাতারা টেলিভিশন, ইউটিউব, ফেসবুকসহ যেকোনো মাধ্যমের জন্য ফিকশন বা নন-ফিকশন ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। ৮ মার্চ এই প্রতিযোগিতার জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে চলচ্চিত্র চাওয়া হয়। উন্মুক্ত এই প্রতিযোগিতায় ছিল সবার আবেদনের সুযোগ। জমা পড়েছিল প্রায় আড়াই হাজার আবেদন। সেখান থেকে বাছাই হওয়া ১০০ জনকে নিয়ে গত শুক্রবার হয় প্রথম দিনের কর্মশালা। এরপর প্রায় ৫০ জনকে নিয়ে গতকাল হয় দ্বিতীয় দিনের কর্মশালা।

চূড়ান্ত পর্বের জন্য নির্বাচিত ১০ জনের প্রত্যেকে একটি করে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বানানোর কারিগরি ও মেনটরিং সহযোগিতা পাবেন প্রথম আলো ও মেরিলের পক্ষ থেকে। তাঁদের নির্মিত ১০টি চলচ্চিত্র থেকে বিচারকদের রায় এবং দর্শকদের ভোটে বেছে নেওয়া হবে সেরা তিন নির্মাতাকে। বিজয়ী একজন সুযোগ পাবেন কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ‘মার্শ দ্যু ফিল্ম’ বাণিজ্যিক বিভাগে অংশ নেওয়ার।

গতকাল কর্মশালা শুরু হয় বেলা ১১টায়। বিচারকেরা প্রতিযোগীদের একে একে সাক্ষাৎকার নেন। তাঁদের কাছে নতুন একটি চলচ্চিত্রের গল্প চান। প্রতিযোগীরা তাঁদের গল্পের স্ক্রিপ্ট ও দৃশ্যায়ন বিচারকদের কাছে তুলে ধরেন।

সাক্ষাৎকার নেওয়া শেষে সংবাদ সম্মেলনে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘চলচ্চিত্র বানানো কোনো কুস্তি প্রতিযোগিতা নয় যে একজনকে বাদ দিয়ে আরেকজনকে সেরা বানানো হবে। এরপরও সেরাদের বাছাই করে নিতে হয়। যদি এই প্ল্যাটফর্ম তিন থেকে চার বছর চালিয়ে নেওয়া যায়, তাহলে এখান থেকেই ভালো তরুণ নির্মাতারা বেরিয়ে আসবে।’ রুবাইয়াত হোসেন বলেন, ‘এ প্রতিযোগিতায় সায়েন্স ফিকশন, অ্যানিমেশনসহ বিভিন্ন জনরা (ঘরানার) চলচ্চিত্র এসেছে। মেয়েদের তৈরি করা চলচ্চিত্রগুলোর থিম বেশি পোক্ত ছিল। আমরা বেশ খুশি এই প্রতিযোগিতার সঙ্গে যুক্ত থেকে।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গীতিকবি কবির বকুল, স্কয়ার টয়লেট্রিজের বিপণন বিভাগের প্রধান জেসমিন জামান।