দীপিকার মুখে অ্যাসিড ছুড়েছে কে!

‘ছপাক’ ছবিতে দীপিকা পাড়ুকোনের লুক। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া
‘ছপাক’ ছবিতে দীপিকা পাড়ুকোনের লুক। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

দীপিকা পাড়ুকোন অ্যাসিড-সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন! তাঁর মুখে কে অ্যাসিড ছুড়েছে! আজ সোমবার সকালে টুইটারে দীপিকা পাড়ুকোন একটি ছবি পোস্ট করেছেন। ছবিটি দেখে যেকেউ আঁতকে উঠবেন। অ্যাসিডে ঝলসে গেছে এই বলিউড সুন্দরীর মুখ। পরে জানালেন, এটা হলো ‘ছপাক’ ছবিতে তাঁর লুক। ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘একটা চরিত্র, যা আমার সঙ্গে সারা জীবন থাকবে...মালতী। আজ থেকে শুরু হলো শুটিং। মুক্তি পাবে ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারি।’

মুম্বাই মিররের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, অ্যাসিড-সন্ত্রাসের শিকার হওয়া লক্ষ্মী আগরওয়ালের ঘটনা নিয়ে ছবি তৈরি করছেন মেঘনা গুলজার। এই ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব নিয়ে গত বছর শেষ দিকে তিনি দীপিকা পাড়ুকোনের সঙ্গে আলোচনা করেন। সবকিছু শুনে ছবিটিতে অভিনয় করতে রাজি হয়ে যান দীপিকা পাড়ুকোন। শুধু তা-ই নয়, ছবিটি প্রযোজনা করার ব্যাপারেও তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন।

মুম্বাই মিররকে দীপিকা পাড়ুকোন বলেন, ‘যখন গল্পটি শুনেছিলাম, তখন আমি স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। ঘটনাটি আমাকে গভীরভাবে স্পর্শ করেছে। অ্যাসিড-সন্ত্রাস এক ভয়ংকর সহিংসতা। এর বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে প্রতিবাদ করতে হবে। আর যারা এই সহিংসতার শিকার, তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে, তাদের মনে শক্তি ও সাহস জোগাতে হবে।’ আরও বললেন, ‘আমি মনে করি, এ ধরনের গল্পগুলো সিনেমায় বলা দরকার। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি গল্প, সত্য ঘটনা। আশা করছি, দারুণ কিছুই আসছে।’

পরিচালক মেঘনা গুলজার বলেন, ‘আমার বারবার মনে হয়েছিল, আমি যেমনটা চাইছি, তাতে রাজি হবেন না দীপিকা। তিনি এই ছবি করতে চাইবেন না। কিন্তু তিনি তা করেননি। পরপর তিনটি গভীর চরিত্র করার পর একটি হালকা ছবি করতে চেয়েছিলেন দীপিকা। আর আমার ছবিটি অ্যাসিড-সন্ত্রাস নিয়ে। এক অ্যাসিড–আক্রান্ত নারীর সাহস ও শক্তির গল্প। মুহূর্তেই রাজি হয়ে যান দীপিকা।’

ঘটনাটি ২০০৫ সালের। বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার পর লক্ষ্মী আগরওয়াল অ্যাসিড-সন্ত্রাসের শিকার হন। এরপর বেঁচে থাকার জন্য শুরু হয় তাঁর জীবনসংগ্রাম। একসময় তিনি জয়ী হন। তাঁর অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি কয়েকটি পর্বের একটি টিভি অনুষ্ঠানও তৈরি করেন। ২০১৬ সালে লন্ডন ফ্যাশন উইকে র‌্যাম্পে হেঁটেছেন তিনি। যারা এই সহিংসতার শিকার, তাদের কাছে লক্ষ্মী আগরওয়াল আজ একজন আদর্শ নারী। ২০১৪ সালে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে তাঁকে ‘আন্তর্জাতিক নারী সাহসিক পুরস্কার’ দেওয়া হয়।

এবার জানা গেছে, ‘ছপাক’ ছবিতে দীপিকা পাড়ুকোনের সঙ্গে আরও আছেন রাজকুমার রাও। এই সময়ের তরুণ মেধাবী অভিনেতা তিনি। গত বছর তাঁর ‘নিউটন’ সিনেমাটি ভারত থেকে অস্কারে পাঠানো হয়। দীপিকা পাড়ুকোনের পাশে দাঁড়িয়ে পাল্লা দিয়ে যে তিনি অভিনয় করতে পারবেন, এটা নিশ্চিত।

এদিকে সম্প্রতি নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন দীপিকা পাড়ুকোন। মুম্বাই একাডেমি অব মুভিং ইমেজেসের (মামি) চেয়ারম্যান মনোনীত হয়েছেন এই তরুণ তারকা। ভারতীয় চলচ্চিত্রকে বিশ্বের দরবারে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে অবদান রাখতে চান। তিনি বলেন, ‘দায়িত্বটা নিতে রাজি হয়েছি, কারণ আমি মনে করি, এ ধরনের প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিতে তরুণদের কিছু করার আছে। ভবিষ্যতে চলচ্চিত্র অঙ্গনকে একটি নতুন গড়ন দেওয়ার কাজটি তরুণদের করতে হবে। একটি সম্মানজনক প্রতিষ্ঠানের জন্য নিজের জায়গা থেকে যদি কিছু করতে পারি, আমার জন্য সেটা একটা বড় ব্যাপার। ভারতীয় চলচ্চিত্র এখন বিশ্ব স্বীকৃতির দ্বারপ্রান্তে। এ অবস্থায় আমি ভারতীয় চলচ্চিত্রকে এক অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে চাই।’