দ্বিতীয় স্বামীর আরেক স্ত্রীর কথা জানেন না সালমা

মৌসুমী আকতার সালমা ও সানাউল্লাহ নূরে সাগর
মৌসুমী আকতার সালমা ও সানাউল্লাহ নূরে সাগর

এ বছরের শুরুতে ক্লোজআপ ওয়ানখ্যাত মৌসুমী আকতার সালমা দ্বিতীয় বিয়ের খবরটি সংবাদমাধ্যমের কাছে জানিয়েছিলেন। ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের ছেলে সানাউল্লাহ নূরে সাগরকে বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের খবর প্রকাশের তিন মাস পর জানা গেল, সালমার বর্তমান স্বামী আগেই আরেকটি বিয়ে করেছেন। কক্সবাজারের মেয়ে, ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গে ২০১৪ সালের ৩ জুন বিয়ে হয় তাঁর। প্রথম স্ত্রীকে না জানিয়েই তিনি সালমাকে বিয়ে করেন। সংবাদমাধ্যমে সালমার সঙ্গে সাগরের বিয়ের খবরটি প্রকাশের পরই প্রথম স্ত্রীর পরিবার বিষয়টি জানতে পারে। বিয়ের খবর প্রকাশের আগেই কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এ সাগরের প্রথম স্ত্রীর মা বাদী হয়ে মামলা করেন। জানতে চাইলে প্রথম আলোকে খবরটি নিশ্চিত করেছেন সাগরের প্রথম স্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা।

সাগরের প্রথম স্ত্রীর পরিবার জানায়, গত ৭ অক্টোবর সাগর লন্ডন যান। সেদিন দুই পরিবারের সদস্যরা তাঁকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিদায় জানান। লন্ডনে পৌঁছার পর সাগর নিজে থেকে যোগাযোগ করেননি। তাঁর খবর জানতে ফোন করা হলে খারাপ ব্যবহার করতেন। কথাবার্তাও সন্দেহজনক মনে হতে থাকে। আস্তে আস্তে সম্পর্ক খুব বাজে আকার ধারণ করে। বাধ্য হয়েই গত বছরের ১৯ নভেম্বর কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলা করা হয়।

মৌসুমী আকতার সালমা ও সানাউল্লাহ নূরে সাগর
মৌসুমী আকতার সালমা ও সানাউল্লাহ নূরে সাগর

প্রথম স্ত্রীর পরিবারের সদস্যরা বলছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাগর ও তাঁর বাবা-মাকে খুঁজছে। অবশ্য এ ব্যাপারে সাগরের স্ত্রী সংগীতশিল্পী সালমা প্রথম আলোকে বলেছেন, তাঁর স্বামী এখন লন্ডনে আছেন।

সালমার স্বামী সানাউল্লাহ নূরে সাগরের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা নম্বর ২৫৪। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১১ (গ), ১১ (গ)/৩০ ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় সালমার দ্বিতীয় স্বামী সানাউল্লাহ নূরে ও তাঁর বাবা-মাকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থানায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাঠিয়েছেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ এ এইচ এম মাহমুদুর রহমান।

মামলার বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৪ সালের ৩ জুন সানাউল্লাহ নূরে সাগরের সঙ্গে কক্সবাজারের মেয়ের ২০ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে হয়। ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে বিয়ের পর থেকে নানাভাবে যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকেন সাগর। শারীরিকভাবে নির্যাতন করতে থাকেন। মেয়ের কথা চিন্তা করে সাগরকে ৩ কিস্তিতে ১০ লাখ দেন। সেই টাকায় সানাউল্লাহ নূরে সাগর যুক্তরাজ্যে ‘বার অ্যাট ল’ পড়তে যান। এর মধ্যে বাংলাদেশে এসে কাউকে না জানিয়ে সাগর ক্লোজআপ তারকা সালমাকে গোপনে বিয়ে করেন এবং নিজেকে অবিবাহিত দাবি করেন। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের বদৌলতে সালমার সঙ্গে বিয়ের খবর জানাজানি হয়। সাগর ও তাঁর বাবা-মাকে খুঁজছে।

মৌসুমী আকতার সালমা ও সানাউল্লাহ নূরে সাগর
মৌসুমী আকতার সালমা ও সানাউল্লাহ নূরে সাগর

স্বামী সাগরের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সালমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘মামলা ও বিয়ের খবরটি আমার জানা নেই। আমার স্বামী তো সেপ্টেম্বর থেকে দেশের বাইরে, তাঁর বিরুদ্ধে কীভাবে নারী নির্যাতনের মামলা করে!’

আপনার স্বামী নাকি পলাতক। তিনি এখন কোথায় আছেন? ‘আমার স্বামী এখন লন্ডনে আছেন।’ বললেন সালমা।

হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের কাছে এই ধরনের কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আসেনি। কোনো অভিযোগ পেলে তখন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ার মেয়ে মৌসুমী আক্তার সালমা সংগীত রিয়েলিটি শো ‘ক্লোজআপ ওয়ান—তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’-এর দ্বিতীয় আসরের চ্যাম্পিয়ন। এরপর কয়েকটি লোকগান গেয়ে সালমা পরিচিতি পান। ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারি সালমা ও শিবলী সাদিক বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। স্নেহা নামে তাঁদের ঘরে সাত বছরের কন্যাসন্তান আছে। বর্তমানে মেয়ে তার বাবার কাছে রয়েছে।