দেশের গান গেয়ে শুরু

লিজা, ইমরান, ঐশী
লিজা, ইমরান, ঐশী

দেশ, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ব্যাপারগুলো যে কী, তা অনেকে বুঝতে শুরু করেন দেশের গান শুনে। দেশাত্মবোধক গান গেয়ে ও শুনে দেশের প্রতি ভালোবাসা জন্মাতে থাকে। ছোটবেলায় কিছু সারগাম শিখে অনেকে প্রথম যে গানগুলো শেখেন, তার মধ্যে সাধারণত দেশের গান থাকেই। এই স্বাধীনতা দিবসে এ প্রজন্মের তিন শিল্পী স্মরণ করলেন দেশের গান নিয়ে তাঁদের শৈশবস্মৃতি।

লিজা
আমি যখন দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী, তখন প্রথম শিখেছি ‘একতারা তুই দেশের কথা’। আমার ওস্তাদ এম এ হাইয়ের কাছে গানটি শিখেছিলাম। তখন না বুঝলেও দেশের গান গাইতে কেমন যেন আলাদা ভালো লাগা কাজ করত। সেই সময় দেশের গানই বেশি গাইতাম। একবার এক অনুষ্ঠানে আমি টানা ১৭টি দেশের গান করেছিলাম। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় রুনা লায়লার গাওয়া ‘আমার মনপাখিটা যায় রে উড়ে যায়’ গানটি গেয়ে জাতীয় পর্যায়ে গোল্ড মেডেল পেয়েছিলাম। সত্যি কথা কি, আমি ছোটবেলা থেকে রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমীন, শাহনাজ রহমতউল্লাহ আপাদের দেশের গানই বেশি গেয়েছি। এ পর্যন্ত যতগুলো মৌলিক গান আমি গেয়েছি, তার মধ্যে দেশের গানই বেশি। দেশের গান আমাকে ভাবায়, তাড়িত করে। মঞ্চে গাইতে খুব মধুর লাগে।

ইমরান
ছোটবেলায় তো ছড়াগান আর দেশের গানই বেশি শিখেছি। ক্লাস টু কিংবা থ্রিতে পড়ি, তখন শিখেছিলাম শাহনাজ রহমতউল্লাহ ম্যামের গাওয়া ‘একতারা তুই দেশের কথা’। শিখিয়েছিলেন আমার গুরু সুব্রত শ্যামল বিশ্বাস। দেশের গান গেয়ে নানা জায়গায় পুরস্কার পেয়েছি। নতুন কুঁড়িতে দেশের গান গেয়ে চূড়ান্ত পর্ব পর্যন্ত গিয়েছিলাম। সেখানে গেয়েছিলাম ‘মা গো ধন্য হলো জীবন আমার তোমায় ভালোবেসে’। ছোটবেলায় তেমন কিছু বুঝতাম না। কিন্তু এখন দেশ ব্যাপারটা কী, সেটা উপলব্ধি করি। যেকোনো বিশেষ অনুষ্ঠানে এখন আমি ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি’ গানটি দিয়ে শুরু করি। দর্শক যে ভাবের মধ্যেই থাকুন না কেন, দেশের গান গাইলে সবাই শ্রদ্ধাভরে হাত নেড়ে গানটি গাইতে থাকেন।

ঐশী
আমি গান শিখতাম নোয়াখালীর মৌমাছি কচি–কাঁচার মেলাতে। তখন দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। সেবার স্বাধীনতা দিবসে ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা লক্ষ প্রাণের দান’ গানটি নোয়াখালীর বিজয়মঞ্চে গেয়েছিলাম। কচি–কাঁচার মেলার মোহাম্মদ শরিফ স্যার শিখিয়েছিলেন। তখন তো তেমন কিছু বুঝতাম না। কিন্তু মনে আছে, গান শেখানোর সময় স্যার বলেছিলেন, কিংবদন্তি শিল্পী রুনা লায়লার গাওয়া গান এটি। স্যার সুন্দর করে গানটি বুঝিয়ে বুঝিয়ে শেখান। সেই বয়সে বুঝি না–বুঝি, গানটি শেখার সময়, মঞ্চে গাওয়ার সময় খুব ভালো লেগেছিল। এখনো রুনা লায়লা ম্যাম, সাবিনা ইয়াসমীন ম্যামের দেশের গান গাওয়া হয়। সেই ছোটবেলা থেকে তাঁদের গান শুনে, গেয়ে বড় হয়েছি। এটি আমার ছোট্ট সংগীতজীবনের বড় প্রাপ্তি।