পর্দায় লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যুরহস্য
ভারতের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না, এমনটাই দাবি করেন তাঁর ছেলে অনিল শাস্ত্রী। টাইমস অব ইন্ডিয়া থেকে জানা গেছে, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বাবার মৃত্যু-সংক্রান্ত সব নথি প্রকাশের দাবি করেন এই কংগ্রেস নেতা। সংবাদভিত্তিক টিভি চ্যানেল সিএনএন-আইবিএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অনিল শাস্ত্রী বলেন, ‘আমার বাবার মৃতদেহ যখন দিল্লি বিমানবন্দরে নামানো হলো, তখনই আমাদের মনে সন্দেহ দেখা দেয়। এর কারণ হলো, তাঁর সারা শরীর নীল হয়ে গিয়েছিল। তাঁর মুখ নীল হয়ে গিয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাবার লাশ দেখার পর আমার মা সরাসরি এই সিদ্ধান্তে এসেছিলেন যে সেটা স্বাভাবিক মৃত্যু ছিল না। মা পরিবারের সবাইকে বলেছিলেন, এই মৃত্যু স্বাভাবিক নয়, এখানে গোলমেলে কিছু আছে।’
১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খানের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় অংশ নিতে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের তাসখন্দে গিয়েছিলেন লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। ১৯৬৬ সালের ১০ জানুয়ারি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তা ‘তাসখন্দ চুক্তি’ নামে পরিচিত। এই চুক্তি সম্পাদনের কয়েক ঘণ্টা পর শাস্ত্রীকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তখন বলা হয়েছিল, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
এবার সেই রহস্য নিয়ে ছবি তৈরি করেছেন পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী। নাম ‘দ্য তাসখন্দ ফাইলস’। ছবির কাহিনি ও চিত্রনাট্য তিনিই লিখেছেন। আগামী ১২ এপ্রিল মুক্তি পাবে ছবিটি। তার আগে গতকাল সোমবার জি স্টুডিওর ইউটিউব চ্যানেলে ছবিটির ট্রেলার এসেছে। ২ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের ট্রেলারটি আজ মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ২৫ লাখ ২৭ হাজার ৭৫ বার দেখা হয়েছে।
‘দ্য তাসখন্দ ফাইলস’ ছবির ট্রেলার দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যুরহস্য নিয়ে যে বিতর্ক দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে, তা নতুন করে উসকে দিচ্ছে ছবিটি। এখানে বলা হয়েছে, ছবিটি একটি তদন্ত কমিটির ‘ফিকশনাল রিপ্রেজেন্টেশন’। এই কমিটি সাবেক প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যুর তদন্তের জন্য গঠিত হয়েছিল। ট্রেলারের শুরুতে দেখা যায়, শ্বেতা বসু প্রসাদের হাতে একটি পেনড্রাইভ আসে। তাতে লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে কিছু তথ্য রয়েছে। শ্বেতা সত্যের অন্বেষণ শুরু করেন। এখানে আরও বলা হয়, লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মৃত্যু ভারতের রাজনীতিতে চাপা দিয়ে রাখা ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি অন্যতম রহস্য।
ছবিটি নিয়ে বিবেক অগ্নিহোত্রী লিখেছেন, ‘বন্ধুরা, যে সিনেমার জন্য আপনারা এত দিন অপেক্ষা করছিলেন...যে মানুষটিকে আপনারা জানেন, অথচ যে রহস্য আপনারা জানেন না, তা নিয়ে “দ্য তাসখন্দ ফাইলস”।’
‘দ্য তাসখন্দ ফাইলস’ ছবিতে অভিনয় করেছেন মিঠুন চক্রবর্তী, নাসিরউদ্দিন শাহ, শ্বেতা বসু প্রসাদ, পল্লবী যোশি, পঙ্কজ ত্রিপাঠি, রাজেশ শর্মা, মন্দিরা বেদিসহ আরও অনেকে।