নিখোঁজ হওয়া মনোজ ফিরে এসেছেন

মনোজ প্রামাণিক
মনোজ প্রামাণিক

‘গত ৮ মার্চ আমি চাকরি ছেড়ে দিয়েছি এবং আমি আর কোনো দিন শুটিং করব না সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আজকে রাতে সারা জীবনের জন্য রাধানগরে আমার বাবা–মায়ের কাছে ফিরে যাচ্ছি। আর কোনো দিন ফিরব না, আপাতত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ, বাবা-মায়ের আমাকে দরকার। আমি আর কিচ্ছু চাই না।’

৮ মার্চ রাতে এ রকম স্ট্যাটাস দেন তরুণ অভিনেতা মনোজ প্রামাণিক। তারপর থেকে তাঁকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আর দেখা যায়নি। দেখা যায়নি কোনো শুটিং স্পটেও। ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো তো দূরের কথা, সোজা চলে গিয়েছিলেন নিজের গ্রামে। মা–বাবার কাছে। এই সময়ে ফোনও ধরেননি কারও। তাঁর সহকর্মী থেকে শুরু করে সংবাদকর্মীরাও খোঁজ করেছেন তাঁর। মাসের ২০ থেকে ২৫ দিনই যে তরুণ দাঁড়াচ্ছেন ক্যামেরার সামনে, দিন দিন বাড়ছে তাঁর অভিনয়ের চাহিদা, তারকা খ্যাতিটা সবে উপভোগ করতে শুরু করেছেন যিনি, তিনিই কিনা হুট করে এমন নিরুদ্দেশ হবেন লাইট–ক্যামেরার চেনা জগৎ থেকে!

এরই ফাঁকে যোগাযোগ করা হয় মনোজ প্রামাণিকের বাবার সঙ্গে। তিনি জানান, মনোজ গ্রামেই আছেন। তাঁদের সঙ্গে কাটাবেন কিছুদিন। সেই কিছুদিন আসলে কত দিন? বাবাও বলতে পারলেন না। টানা কয়েক দিন ফোন বন্ধ রেখেছিলেন মনোজ। তাঁর কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তাঁরাও উন্মুখ হয়ে ছিলেন মনোজের ফোন খোলার অপেক্ষায়।

অবশেষে গত সোমবার খোলা পাওয়া গেল মনোজের ফোন। ধরতেই ওপাশ থেকে হাসিমাখা কণ্ঠস্বর। জানতে চাইলেই বললেন, ‘ফিরেছি। শুটিং করছি। একটু পর কথা বললে ভালো হয়। এখন শট দিতে যাচ্ছি তো।’ সেই একটু পর হলো আধা ঘণ্টা পর। হাসতে হাসতে বললেন, ‘আমার বাবা-মা খুব অসুস্থ ছিলেন। ওই সময় আমার কিছুই ভালো লাগছিল না। এ কারণে ও রকম স্ট্যাটাস দিয়ে গ্রামে চলে গিয়েছিলাম।’

মনোজ জানালেন, তাঁর গ্রামের বাড়ি নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার রাধানগরে। সেখানেই বেড়ে উঠেছেন তিনি। বেড়ে উঠলেও এখন পেশার সুবাদে পুরোদস্তুর রাজধানীবাসী। মা–বাবাকেও কয়েকবার আনতে চেয়েছিলেন। এসেছিলেন তাঁরা। কিন্তু নাগরিক জীবনযাপনে থিতু হতে পারেননি দুজনের কেউই। আবার ফিরে গেছেন নওগাঁয়।

মনোজ বলেন, ‘সবকিছুর আগে আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ আমার মা–বাবা। তাই তাঁদের কিছু হলে স্থির থাকতে পারি না। এ কারণে এ রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’

তবে আপাতত সেই সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে এসেছেন। চাকরিতে বহাল আছেন। ফিরেছেন ফেসবুকে। মন দিয়েছেন শুটিংয়ে। তাঁর হাতে নিয়মিত নাটক তো আছেই; আছে বেশ কয়েকটি অনলাইনভিত্তিক প্রযোজনার কাজও। একই সঙ্গে অভিনয় করছেন দুটি চলচ্চিত্রে। জানালেন, সময়মতো মনোজের সব কাজই দেখবেন দর্শক। শুধু অপেক্ষামাত্র।