নায়ক বাবার ইচ্ছায় মেয়ে গায়িকা

দেশের চলচ্চিত্রের এক সময়ের জনপ্রিয় নাইম–শাবনাজ ও তাঁদের মেয়ে মাহাদিয়া। ছবি–সংগৃহীত
দেশের চলচ্চিত্রের এক সময়ের জনপ্রিয় নাইম–শাবনাজ ও তাঁদের মেয়ে মাহাদিয়া। ছবি–সংগৃহীত

মাহাদিয়া নাইমের মা–বাবা দুজনেই ছিলেন বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় জুটি । নব্বইয়ের দশকে তো নাইম ও শাবনাজ মানেই সুপারহিট সব সিনেমা। সিনেমা ছেড়ে পুরোপুরি সংসারী হয়ে গেলেও,বাংলা ভাষাভাষি মানুষ এই দুজনের নাম শুনলে একটু নস্টালজিক হন। সেই প্রিয় দুই মুখের ছোট সন্তান মাহাদিয়া নাইমের গানে অভিষেক হয়েছে। নিজের ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে খুব কাছাকাছি সময়ে দুটি গানের ভিডিও প্রকাশ করেছেন তিনি। মেয়ের গান প্রকাশে ভীষণ আনন্দিত বাবা নাইম ও মা শাবনাজ।
মাহাদিয়ার গাওয়া প্রথম গানটি নিউজিল্যান্ডের জনপ্রিয় গায়িকা লর্ডের রয়্যালস। এই গানটির নতুন করে সংগীতায়োজন করেছেন মানাম আহমেদ। রয়াল্যাস গানটি প্রকাশের ঠিক সপ্তাহখানেক পর উপমহাদেশের প্রখ্যাত গায়িকা আশা ভোঁশলের গাওয়া ‘যেতে দাও আমায় ডেকো না’ গানটি ইউটিউবে আপলোড করেছেন । এই গানের সংগীতায়োজন করেছেন সৈয়দ সুজন।

দুই মেয়েকে নিয়ে নাইম ও শাবনাজ। ছবি-সংগৃহীত
দুই মেয়েকে নিয়ে নাইম ও শাবনাজ। ছবি-সংগৃহীত

মাহাদিয়াকে ছোটবেলা থেকে মা–বাবা গানের তালিম দিয়েছেন । শাস্ত্রীয় সংগীত ও গজলের তালিম নিয়েছেন সালাউদ্দিন শান্তনুর কাছে। নজরুলসংগীতের ওপরও তালিম নিয়েছেন মাহাদিয়া। ইংরেজি গানগুলো দেখে দেখে নিজেই শিখেছেন বলে জানান মাহাদিয়া। তবে গানের প্রতি অনুরাগি হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে বড় বোন নামিরা নাইম। প্রথম আলোকে মাহাদিয়া বলেন, ‘আমার বাবা খুব ভালো গান গায় । দাদি আর ফুফুরাও দারুণ গায়। পরিবারের সবাই অনেক ভালো গায়। গানের ব্যাপারটা তাই বংশগতভাবেই আমার ভেতরে চলে এসেছে বলতে পারেন। বাবা খুব করে চাইছিলেন আমি যেন গান রেকর্ড করে প্রকাশ করি। বাবার ইচ্ছায় গানগুলো গেয়েছি, এরপর ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবে আপলোড করেছি।’

বাবা নাইমের সঙ্গে মেয়ে মাহাদিয়া। ছবি-সংগৃহীত
বাবা নাইমের সঙ্গে মেয়ে মাহাদিয়া। ছবি-সংগৃহীত

মাহাদিয়ার গাওয়া গান দুটির ভিডিও পরিচালনা করেছেন মা একসময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবনাজ । আর ভিডিও প্রযোজনা করেছেন বাবা নাইম। মা–বাবা ও পরিবারের সদস্যদের বাইরে গান গাওয়ার ব্যাপারে শিল্পীদের মধ্যে অ্যাডেলে ও সেলিন ডিওন খুব অনুপ্রাণিত করেন । জানালেন, ‘অ্যাডেল ও সেলিন ডিওন আমার অসম্ভব পছন্দের গায়িকা । তাঁরা দুজন আমাকে নানাভাবে অনুপ্রাণিত করেন। আমি ইনস্টাগ্রামে ইংরেজি গানগুলো গেয়ে প্রায়ই আপলোড করতাম। এরপর বন্ধুরাও গানগুলো শুনে খুব উৎসাহ দিত। বাবা তো চাইতেনই। সব মিলিয়ে গাওয়া হলে গেল। আমার আরও অনেক গান রেকর্ড করা আছে। এর মধ্যে ইংরেজি গানই বেশি করা হচ্ছে। গান প্রকাশ করায় বাবাই সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছেন। বাবার খুশি হওয়াতে আমিও অনেক খুশি।’

সামনে কোন গান আসছে? জানতে চাইতে মাহদিয়া বলেন, সেলিন ডিওনের একটি গান প্রকাশের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছি । শাবনাজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বড় মেয়ে পড়াশোনার জন্য এখন কানাডায় । নাঈমের খুব ইচ্ছা, ছোট মেয়ে গান গাইবে। মাহদিয়া এখন ইলেভেন ক্লাসে পড়ছে। বাবার চাওয়া, দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার আগ পর্যন্ত কিছু গান প্রকাশ করে। বাবার ইচ্ছামতো মেয়ে গাইছে। সবার কাছে মেয়ের জন্য দোয়া চাই।’