কত দিন অপেক্ষা, বললেন না মাধুরী

মাধুরী দীক্ষিত
মাধুরী দীক্ষিত

মুক্তি প্রতীক্ষিত ‘কলঙ্ক’ ছবি মাধুরীকে নতুন করে নিয়ে এসেছে আলোচনায়। এই ছবির ট্রেলার এবং গানে তাঁর উপস্থিতি ভক্তদের নজর কেড়েছে। কেউ কেউ তো ‘কলঙ্ক’ ছবির এই মাধুরীকে দিয়ে আবারও খুঁজে পেয়েছেন ‘দেবদাস’ সিনেমার সেই চন্দ্রমুখীকে। সবাই যখন ‘কলঙ্ক’–এর মাধুরীর খবরাখবরে ব্যস্ত, ঠিক আরেকটি খবরে ভক্তদের চমকে দিলেন মাধুরী। শিগগিরই বলিউডের ‘ধকধক গার্ল’ মাধুরী পপ গানের অ্যালবাম নিয়ে হাজির হতে যাচ্ছেন। তবে গান প্রকাশের দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত করে কিছুই বলেননি। এক খবরে টাইমস অব ইন্ডিয়া এমনটাই জানিয়েছে।

জানা গেছে, চুপি চুপি অ্যালবামের কাজ শেষও করে ফেলেছেন মাধুরী দীক্ষিত। গান নিয়ে শ্রোতাদের সামনে হাজির হতে পুরোপুরি প্রস্তুত তিনি। এই অ্যালবামে মাধুরীর কণ্ঠে ভক্ত ও শ্রোতারা শুনবেন পপ ধাঁচের গান। দিনক্ষণ চূড়ান্ত না হলেও আভাস দিয়ে রেখেছেন, এ বছরেই মাধুরীর গান শুনতে পারবেন ভক্ত ও শ্রোতারা। মাধুরীর নতুন এই উপহারের জন্য আরও কত দিন অপেক্ষা করতে হবে, সেটা অবশ্য এখনো জানা যায়নি। মাধুরী এই মুহূর্তে ব্যস্ত তাঁর নতুন ছবি ‘কলঙ্ক’ ছবির প্রচারণা নিয়ে। এ ছবিটি আর মাত্র পাঁচ দিন পর অর্থাৎ ১৭ এপ্রিল মুক্তি পাবে।

কার সাধ্য আছে ‘দেবদাস’ সিনেমার সেই চন্দ্রমুখীকে ভোলার! ১৯৬৭ সালে মহারাষ্ট্রের মারাঠি এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন তিনি। পদ্মভূষণ উপাধি পাওয়া বলিউড অভিনেত্রী মাধুরীর ক্ষেত্রে ক্যালেন্ডারের হিসাবে বছর পেরিয়ে যায়, সময় গড়িয়ে যায়। কিন্তু কেন যেন বয়সের ছাপ স্পর্শ করতে নাকি পারে না মাধুরীর শরীর বা মনকে। যুগের পর যুগ ধরে ‘দিল’ (১৯৯০), ‘সাজন’ (১৯৯১), ‘বেটা’ (১৯৯২), ‘খলনায়ক’ (১৯৯৩), ‘হাম আপকে হ্যায় কন’ (১৯৯৪), ‘রাজা’ (১৯৯৫), ‘দিল তো পাগল হ্যায়’ (১৯৯৭), ‘গজগামিনী’ (২০০০), ‘দেবদাস’ (২০১২), ‘আজা নাচলে’ (২০০৭) বা ‘কলঙ্ক’ (২০১৯) ছবিগুলো তাঁকে বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পীর আসন দিয়েছে। এবার তিনি গায়িকা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে উঠেপড়ে লেগেছেন বলে অনেকের অভিমত।

বলিউডে মাধুরী দীক্ষিতকে বলা হয় ‘ওয়ান অ্যান্ড অনলি সুপারস্টার’। ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ওয়েব পোর্টাল রেডিফ বলিউডের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা অভিনেত্রী হিসেবে মাধুরী দীক্ষিতের নাম ঘোষণা করে। ২০১০ সালের মার্চে ইকোনমিক টাইমস ঘোষণা করে যে মাধুরী দীক্ষিত ভারতের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ৩৩ ভারতীয় নারীর একজন। বয়স যতই বাড়ছে—অভিনয়, নাচ, গান সব ক্ষেত্রে মাধুরীর মাধুর্য ছড়িয়ে পড়ছে স্বমহিমায়। শিগগিরই বলিউডের এই তারকা নিজের ইংরেজি গানের অ্যালবাম প্রকাশের ইচ্ছার কথা জানান। এর আগে অবশ্য ‘গুলাব গ্যাং’ সিনেমায় ‘রাঙ্গি শাড়ি গুলাবি চুনারিয়া’ শিরোনামের একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছিলেন। গানটি প্রথমে গেয়েছিলেন তাঁর মা। মায়ের সঙ্গে কণ্ঠ মেলান মাধুরীও। সেটা ছিল একেবারেই শখের বসে। গান গাইতে কেমন লাগে সেই স্বাদ নিতেই এমনটা করেছিলেন। সেই স্বাদ বোধ হয় ভালো লেগেছিল গুণী এই অভিনয়শিল্পীর। তাই এবার আটঘাট বেঁধে পেশাদার সংগীতশিল্পীর মতো অ্যালবাম বের করার সিদ্ধান্তের কথা জানালেন এই নায়িকা। মাধুরীর মা স্নেহলতা দীক্ষিত শাস্ত্রীয় সংগীতে প্রশিক্ষিত শিল্পী।

১৯৯৯ সালে মাধুরী ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওভাসকুলার সার্জন শ্রীরাম মাধব নেনেকে বিয়ে করেন। চিকিৎসক নেনেও মারাঠি ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান। তাঁদের সংসারে আরিন (জন্ম ২০০৩) এবং রায়ান (জন্ম ২০০৫) নামে দুই ছেলে রয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালে মাধুরী ‘মোগলি: লেজেন্ড অব দ্য জঙ্গল’ ছবির হিন্দি ডাবিংয়ে মোগলির নেকড়ে মায়ের চরিত্রে কণ্ঠ দিয়েছেন। একসময় সঞ্জয় দত্ত ও মাধুরী দীক্ষিত জুটিকে নিয়ে বলিউড রীতিমতো উত্তাল ছিল। সেসব কবেকার কথা। একসময় ভেঙে যায় সেই প্রেম। এরপর থেকে একজন আরেকজনকে এড়িয়ে চলেছেন দীর্ঘদিন। এমনকি মাধুরীর অনুরোধে ‘সঞ্জু’ ছবি থেকে তাঁদের প্রেমের পর্ব বাদ দিতে বাধ্য হন পরিচালক রাজকুমার হিরানী। সম্প্রতি দীর্ঘ ২১ বছর পর আবারও জুটি বেঁধেছেন ‘কলঙ্ক’ ছবিতে।