মন খারাপ নিয়ে প্রিন্স হ্যারির তথ্যচিত্র

প্রিন্স হ্যারি
প্রিন্স হ্যারি

১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট মা প্রিন্সেস ডায়ানার সঙ্গে শেষ ফোনে কথা বলেছেন তাঁর দুই ছেলে প্রিন্স হ্যারি ও প্রিন্স উইলিয়াম। তখন প্রিন্স উইলিয়ামের বয়স ছিল ১৫ বছর আর প্রিন্স হ্যারির ১২ বছর। সেদিনই এক গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত হন প্রিন্সেস ডায়ানা। তাঁর ২০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বছর দুয়েক আগে একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করা হয়। সেখানে মাকে নিয়ে কথা বলেছেন প্রিন্স উইলিয়াম ও প্রিন্স হ্যারি। প্রিন্স হ্যারি বলেন, ‘সেদিন এত তাড়াতাড়ি ফোনটা রেখে দিয়েছিলাম যে তা মনে করে সারা জীবন আমার আফসোস হবে।’ আরও বললেন, ‘প্যারিস থেকে কল করেছিলেন মা। কী বলেছিলেন, মনে নেই। কিন্তু ফোন কলটি সংক্ষিপ্ত ছিল।’ প্রিন্সেস ডায়ানা যে কতটা মজার মানুষ ছিলেন, সন্তান বড় করার প্রক্রিয়া যে তাঁর আলাদা আর মজার ছিল, তা সেই প্রামাণ্যচিত্রে বর্ণনা করেন তাঁরা।

সেদিন তাঁরা ছিলেন স্কটল্যান্ডে রানীর বাড়ি বালমোরালে, চাচাতো ভাইবোনদের সঙ্গে খেলাধুলায় ব্যস্ত ছিলেন। প্রিন্স উইলিয়াম বলেন, ‘হ্যারি আর আমি ফোন রাখার জন্য খুব ব্যস্ত ছিলাম এবং খুব তাড়াতাড়ি “বিদায়, পরে দেখা হবে” বলে ফোনটা রেখে দিলাম...যদি জানতাম এরপর কী ঘটতে যাচ্ছে, ওভাবে ফোনটা রেখে দিতাম না।’

প্রিন্স উইলিয়াম আর প্রিন্স হ্যারির কাছে প্রিন্সেস ডায়ানা হলেন ‘পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মা।’ তাই মায়ের মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি প্রিন্স হ্যারি। মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। ওই সময় তাঁর আচরণ দেখে রাজ পরিবারের মানুষজন উদ্বিগ্ন হন। তাঁকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই আঘাত থেকে বেরিয়ে আসার জন্য অনেক দিন মানসিক চিকিৎসা নিতে হয়েছে তাঁকে।

মায়ের মৃত্যুর পরের সেই দিনগুলোর কথা ইদানীং তাঁর খুব বেশি মনে পড়ছে। নিজের মন খারাপের সেই সময়গুলো নানা ভাবে বিশ্লেষণ করছেন। প্রত্যেক মানুষের জীবনে মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব অনুধাবন করছেন। এবার সেই মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে একটি তথ্যচিত্র তৈরির পরিকল্পনা করেছেন। আর এই তথ্যচিত্র নির্মাণে তাঁকে সহযোগিতা করবেন জনপ্রিয় টিভি তারকা অপরাহ্‌ উইনফ্রে। এর পর একটি বিবৃতি দিয়েছেন প্রিন্স হ্যারি। তাতে বলেছেন, ‘অপরাহ্‌ উইনফ্রের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়ে আমি খুব গর্বিত। গত কয়েক মাস ধরে এই তথ্যচিত্র তৈরি নিয়ে ভাবছিলাম। এবার তা বাস্তব রূপ পেতে যাচ্ছে। আশা করি এই তথ্যচিত্রের সিরিজ থেকে সমাজ আর মানুষের উপকার হবে।’

প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মার্কেল
প্রিন্স হ্যারি ও মেগান মার্কেল

জানা গেছে, প্রিন্স হ্যারির তথ্যচিত্রের এই সিরিজটি দেখা যাবে অ্যাপেলের স্ট্রিমিং সাইটে। নেটফ্লিক্স আর আমাজনের পাশাপাশি আসছে এই স্ট্রিমিং সাইট।

এদিকে কয়েক দিন আগেই শোনা গেছে, ব্রিটিশ রাজপরিবার থেকে নাকি ডাচেস অব সাসেক্স ও প্রিন্স হ্যারির স্ত্রী মেগান মার্কেলকে বেরিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি রানি এলিজাবেথের কথা অমান্য করেছেন। হলিউড তারকা মেগান মার্কেল মেয়েদের ওজন কমানো নিয়ে কাজ করছেন। বাজারে এনেছেন ‘কেটো পিওর’ নামের ওজন কমানোর এক টোটকা। তাই রানির কাছে আবেদন করেন তাঁর রাজদায়িত্ব কিছুটা কমিয়ে দিতে, যাতে তিনি নিজের এই উদ্যোগে আরও সময় দিতে পারেন। কিন্তু রানির তাতে আপত্তি। আর মেগান মার্কেল নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য অনড়।

এর পর এন্টারটেইনমেন্ট টুডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেগান মার্কেল বলেছেন, ‘কেটো পিওর আমার স্বপ্নের প্রকল্প। আমি চেয়েছি নারীকেন্দ্রিক একটি ব্যবসা করব আর এর নিয়ন্ত্রণ থাকবে নিজের কাছে। কখনো বুঝতে পারিনি, আমার যা করব, তা তাঁদের মনের মতো হতে হবে। তাঁরা (রাজ পরিবার) জানেন, ওজন ঝরানোর ব্যাপারে আমি কতটা নিবেদিত। আর উদ্যোগটি সফল করতে আমি মনপ্রাণ ঢেলে দিয়েছি।’