আলিয়া ভাট বললেন বিয়ের প্রশ্নে আমি জর্জরিত

>

কলঙ্ক ছবির দৃশ্যে আলিয়া ভাট ও বরুন ধাওয়ান
কলঙ্ক ছবির দৃশ্যে আলিয়া ভাট ও বরুন ধাওয়ান

আলিয়া ভাটের বিয়ে নিয়ে বলিউডে চাপা গুঞ্জন। কিন্তু বিয়ের সম্ভাবনা একেবারে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিলেন তিনি। মুক্তি পেল তাঁর অভিনীত ছবি কলঙ্ক। অভিষেক বর্মণ পরিচালিত ছবিটি মুক্তির আগে ভারতের মুম্বাইয়ের এক পাঁচতারা হোটেলে প্রতিভাময়ী অভিনেত্রী আলিয়া ভাটের মুখোমুখি প্রথম আলোর মুম্বাই প্রতিনিধি দেবারতি ভট্টাচার্য

‘কলঙ্ক’তে আপনার লুক একদম অন্য রকম। এর জন্য কতটা পরিশ্রম করতে হয়েছে?

এখানে আমার কোনো পরিশ্রম নেই। সবার আগে তো অভিষেকের দূরদর্শিতা ছিল। আর ডিজাইনার মনীশ মালহোত্রা প্রথমবার কোনো পিরিয়ড ফিল্মে কাজ করলেন। আমাকে যা পোশাক দেওয়া হয়েছে, তা–ই পরে অভিনয় করেছি। তবে এই লুক নিয়ে কাজ করা একটু কঠিন ছিল। এই প্রথম আমি ১২ থেকে ২৫ কেজি ওজনের ঘাগরা পরেছি। ভারী গয়না পরেছি। এত ভারী ওড়না পরেছি যে গলায় দাগ হয়ে যেত। তবে নিজেকে যখন আয়নায় দেখতাম, তখন দারুণ লাগত।

‘কলঙ্ক’র ‘রূপ’ হয়ে উঠতে কতটা হোমওয়ার্ক ছিল?

অনেক পুরোনো দিনের ছবি দেখেছি। অভিষেক বলেছিল পাকিস্তানি শো ‘জিন্দেগি গুলজার হ্যায়’ দেখতে। এই শোর মূল অভিনেত্রীর সঙ্গে রূপের অনেকটা মিল আছে। এ ছাড়া উমরাও জান, মুঘল-এ-আজম, সিলসিলা ছবিগুলো দেখেছি। এই চরিত্রের জন্য আমার সব থেকে বড় প্রেরণা ছিলেন রেখা। তিনি এমন এক অভিনেত্রী, যিনি এক চোখে সারল্য, অন্য চোখে কাঠিন্য ব্যক্ত করতে পারেন।

ছবিটির ট্রেলারকে ঘিরে বাবা-মায়ের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?

অবাক করার মতো প্রতিক্রিয়া ছিল মায়ের। মা খুব কম প্রশংসা করেন। ট্রেলার দেখে একের পর এক লম্বা মেসেজ পাঠিয়েছিলেন। বাবাও (মহেশ ভাট) খুব খুশি হয়েছিলেন।

আর রণবীর কাপুরের প্রতিক্রিয়া?

এ তো জানা কথা যে সে আমার প্রশংসা করবে। সব সময় আমার ব্যাপারে ভালো কথাই বলে।

আলিয়া ভাট
আলিয়া ভাট

প্রথমবার মাধুরী দীক্ষিতের সঙ্গে কাজ করলেন। কতটা টেনশনে ছিলেন?

মাধুরী দীক্ষিতের সঙ্গে কাজ করা আমার জন্য খুবই স্পেশাল। প্রথম দিনের শুটিংয়ের আগের রাতে আমি উত্তেজনায় ঠিকমতো ঘুমাতে পারিনি। ভাগ্য ভালো যে আমাদের প্রথম দৃশ্যটা ছিল বসা অবস্থায়। কারণ, আমার হাত কাঁপছিল। সংলাপ ভুলে যাচ্ছিলাম। তাঁর মধ্যে অসম্ভব ধৈর্য ও আত্মসম্মানবোধ আছে। আমরা ডায়েট নিয়ে বেশি কথা বলতাম। দুজনেই তখন কিটো ডায়েটে ছিলাম। ‘ঘর মোরে আয়ে পিয়া’ গানটার সময় একটু বেশি ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। কারণ, আমার লেহেঙ্গাটা ভারী ছিল। মাধুরী বললেন, দেবদাস ছবির সময় তাঁর একই অসুবিধা হয়েছিল।

আর সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?

সঞ্জয় দত্ত খুবই মিষ্টি এক মানুষ। শুটিংয়ে বিরতির সময় তিনি আমার কাছে এসে বাবার গল্প করতেন। তাঁর গল্প বলার শখ আছে, আর আমার গল্প শুনতে ভালো লাগে।

এ বছর প্রায় সব কটা পুরস্কার আপনার ঝুলিতে। এ সম্পর্কে কিছু বলতে চান?

কখনো কখনো মনে হয় আমি স্বপ্ন দেখছি না তো! রাজামৌলির পর সঞ্জয়লীলা বানসালির ছবিতে কাজ করার সুযোগ পেলাম। আমার কাছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ সেটে গিয়ে নিজের চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলা। আর পরিচালকের নির্দেশ মেনে চলা। এর পরের চিন্তা আমি করি না। সফলতা, ব্যর্থতা, নাম্বার ওয়ান—এসব নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না।

বরুণ ধাওয়ানের সঙ্গে এই নিয়ে চারবার জুটি বাঁধলেন। অনুভূতি কেমন?

বরুণ শুধু আমার সহ-অভিনেতা নয়, খুব ভালো বন্ধুও। আমাদের বোঝাপড়া দুর্দান্ত। আমার মনে হয় গত জন্মে আমাদের দুজনের মধ্যে কোনো সম্পর্ক ছিল।

এই বছরটা আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ‘কলঙ্ক’র পর ‘ব্রহ্মাস্ত্র’র মতো ছবি আছে ঝুলিতে। কী রকম লাগছে?

‘ব্রহ্মাস্ত্র’ আমার জন্য খুবই বিশেষ ছবি। কারণ রণবীর কাপুর, অমিতাভ বচ্চন, নাগার্জুন, মৌনী রায়—আমরা সবাই প্রথমবার একসঙ্গে কাজ করলাম। আমাদের একটা দৃশ্যের শুটিং হয়েছিল মেহেবুব স্টুডিওতে। আমি, রণবীর আর অমিতাভ বচ্চন একসঙ্গে সেই দৃশ্যে ছিলাম। বাবার খুব ইচ্ছে ছিল বচ্চন স্যার, রণবীর এবং আমাকে একসঙ্গে কাজ করতে দেখবেন। বাবা বচ্চন স্যারের কাছে এই ইচ্ছা প্রকাশ করেন। আর তা শুনে বচ্চন স্যার মজা করে বলেছিলেন, ‘আমি এমনিতেই অনেক চাপে আছি। আপনি এসে আর চাপ বাড়াবেন না। আপনি বরং থিয়েটারে দেখে নেবেন।’

বলিউডের অলিগলিতে শুধু আপনার আর রণবীর কাপুরের বিয়ের খবর। এ বছর কি সত্যি বিয়ে করছেন?

বিয়ের প্রশ্নে আমি জর্জরিত। বিয়ে করলে সবাই তা জানতে পারবে। আমিই চিৎকার করে বলব আমি বিয়ে করছি। বিয়ের বিরুদ্ধে নই। কিন্তু আমি এখন বিয়ে করছি না।