আজ থেকে শুরু হলো প্রদর্শনী

‘মেরিল-প্রথম আলো চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৯’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিরা। ছবি: প্রথম আলো
‘মেরিল-প্রথম আলো চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৯’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিরা। ছবি: প্রথম আলো

আজ শুক্রবার সকালে ছুটির আমেজে শুরু হলো ‘মেরিল-প্রথম আলো চলচ্চিত্র উৎসব ২০১৯’। উৎসব চলবে আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত। রাজধানীর ধানমন্ডির সীমান্ত সম্ভারের স্টার সিনেপ্লেক্সে আটটি ছবি নিয়ে চলছে এ আয়োজন। এতে অনলাইনে নিবন্ধন করে দর্শক চলচ্চিত্র প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছেন। এই আয়োজনের সহযোগী স্টার সিনেপ্লেক্স।

আজ গিয়াসউদ্দিন সেলিম পরিচালিত ‘স্বপ্নজাল’ ছবির প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে শুরু হয় মেরিল-প্রথম আলো চলচ্চিত্র উৎসবের প্রথম আয়োজন। এর আগে বেলা ১১টায় ছিল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এতে অংশ নেন ‘স্বপ্নজাল’ ছবির পরিচালক গিয়াসউদ্দিন সেলিম, উৎসবে অংশ নেওয়া আরেক জনপ্রিয় ছবি ‘ঢাকা অ্যাটাক’-এর নির্মাতা দীপঙ্কর দীপন, ‘খাঁচা’ ছবির পরিচালক আকরাম খান, নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও সাহিত্যিক আনিসুল হক, স্কয়ার টয়লেট্রিজের বিপণন ব্যবস্থাপক ফজল মাহমুদ এবং স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রথম আলো ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন বিভাগের ব্যবস্থাপক ও গীতিকার কবির বকুল।

উৎসবের উদ্বোধনী আয়োজনে আনিসুল হক বলেন, ‘আমরা ২০ বছর ধরে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আসছি। তবে আমাদের শুধু পুরস্কার দিলে হবে না, আমাদের আরও ভালো কিছু করতে হবে। ভালো চলচ্চিত্র মানে, সমাজ ও দেশের উন্নয়ন। তাই চলচ্চিত্রকে ঘিরে মেরিল-প্রথম আলো এ বছর নানা উদ্যোগ নিয়েছে।’ বক্তব্যের শেষে তিনি মেরিল-প্রথম আলোর আরেকটি উদ্যোগ ‘আগামীর নির্মাতা’ নিয়েও কথা বলেন।

উৎসবের উদ্বোধনী আয়োজনে অংশ নেওয়া অতিথিদের মধ্য থেকে দীপঙ্কর দীপন এই উৎসবের জন্য ধন্যবাদ জানান মেরিল, প্রথম আলো ও স্টার সিনেপ্লেক্সকে। তিনি প্রথম আলোর কাছে অনুরোধ করেন, পত্রিকাটি যেন তাদের লেখনীর ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে চলচ্চিত্রের প্রসার ও উন্নয়নে নিয়োজিত থাকে। আর স্টার সিনেপ্লেক্সের কাছে দীপনের অনুরোধ ছিল, শুধু অবকাঠামোগতভাবে মাল্টিপ্লেক্স নিমার্ণেই নয়, চলচ্চিত্র প্রযোজনায় ও নির্মাতাদের পৃষ্ঠপোষকতায় যেন স্টার সিনেপ্লেক্স এগিয়ে আসে।

নির্মাতা আকরাম খান জোর দেন চলচ্চিত্রের দর্শক বাড়ানোর দিকে। তিনি বলেন, ‘শুধু নির্মাতা আর নির্মাণের সংখ্যা বাড়ালেই হবে না। আমাদের চলচ্চিত্রের দর্শকও তৈরি করতে হবে, ভালো সিনেমা দেখার জন্য দর্শককে শিক্ষিত করতে হবে। আর মেরিল-প্রথম আলো চলচ্চিত্র উৎসবের মতো আয়োজন দর্শকে ভালো সিনেমার প্রতি আকৃষ্ট করবে। দর্শকের সিনেমা দেখার চর্চা নিয়মিত হবে।’

উৎসবের উদ্বোধনী ছবি ‘স্বপ্নজাল’-এর নির্মাতা গিয়াসউদ্দিন সেলিম বলেন ভিন্ন প্রসঙ্গে। তিনি বলেন, ‘যখন থেকে বাংলা চলচ্চিত্রের শুরু, তখন থেকেই এই দেশের নির্মাতারা বিভিন্ন দেশ ও ভাষার ছবির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রকে সোনালি যুগে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে ভিনদেশি চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী বন্ধ হয়ে যায়। তবে এখনো অনলাইনে নানা মাধ্যমে আমাদের কিন্তু বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সিনেমার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতেই হচ্ছে। তাই আমি মনে করি, আমাদের দেশের দ্বারও আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বের সব দেশের সিনেমার জন্য খুলে দেওয়া উচিত। তাহলে নির্মাতারা প্রতিযোগিতাপূর্ণ মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যেতে পারবেন।’

নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ বলেন, ‘সংস্কৃতি না এগোলে দেশ এগোবে না। একটা সময় ছিল, যখন হলে গিয়ে সিনেমা দেখাটা একটা সামাজিক রীতি ছিল। কিন্তু একসময় সেই সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে গেল। তবে মেরিল-প্রথম আলোর এই ধরনের উদ্যোগ আবার সেই সংস্কৃতি পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।’

আজ উৎসবে প্রদর্শিত হচ্ছে ‘স্বপ্নজাল’ বেলা ১১টা ২০ মিনিটে, ‘খাঁচা’ বেলা ২টা ৩০ মিনিটে, অনম বিশ্বাস পরিচালিত ‘দেবী’ বিকেল ৫টায় ও মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘টেলিভিশন’ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। আগামীকাল উৎসবের দ্বিতীয় ও শেষ দিন দেখানো হবে নূর ইমরান মিঠু পরিচালিত ‘কমলা রকেট’ বেলা ১১টায়, ‘ঢাকা অ্যাটাক’ বেলা ১টা ১৫ মিনিটে, অমিতাভ রেজার ‘আয়নাবাজি’ বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে আর তৌকীর আহমেদের ‘অজ্ঞাতনামা’ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়।

উৎসবটি সবার জন্য উন্মুক্ত। প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়ার জন্য দর্শকদের https://service.prothomalo.com/film-festival/ লিংকে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। যাঁরা নিবন্ধন করতে পারেননি, আসন খালি থাকা সাপেক্ষে তাঁরা প্রদর্শনী শুরুর আগে স্টার সিনেপ্লেক্স সীমান্ত সম্ভার থেকে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে নিবন্ধিত দর্শকেরা আসন গ্রহণের পরই তাঁরা প্রবেশপত্র পাবেন।