কঙ্গনার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা!

কঙ্গনা রনৌত
কঙ্গনা রনৌত

মাত্র ১৭ বছর বয়সেই যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন বলিউড তারকা কঙ্গনা রনৌত। আর সে সময় তাঁর বাবার বয়সী আরেক বলিউড তারকা আদিত্য পাঞ্চোলি নিয়মিত এই নির্যাতন করতেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। ২০১৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ‘ইন্ডিয়া টুডে’র প্রতিবেদনে বলা হয়, কিশোরী বয়সে বাবার বয়সী একজনের কাছে যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছিলেন কঙ্গনা। এবার সেই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করলেন তিনি। সেই ব্যক্তির নাম আদিত্য পাঞ্চোলি। কঙ্গনা আরও বলেন, ওই সময় আদিত্যর যৌন নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে তাঁর স্ত্রী জরিনা ওয়াহাবের কাছে সাহায্য চাইতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে কোনো সহযোগিতা তিনি পাননি।

আজ বুধবার জানা গেছে, কঙ্গনা রনৌত আর তাঁর বোন রাঙ্গোলি চান্দেলের বিরুদ্ধে মুম্বাইর আন্ধেরির ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মানহানির মামলা করেছেন আদিত্য পাঞ্চোলি ও তাঁর স্ত্রী জরিনা ওয়াহাব। মিড-ডেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আদিত্য পাঞ্চোলি বলেন, ‘আমি কঙ্গনা আর রাঙ্গোলির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছি। পাশাপাশি দেওয়ানি মামলা করার অপশনও খোলা রেখেছি।’

আদিত্য পাঞ্চোলি অভিযোগ করে বলেন, ‘কঙ্গনা রনৌত অনেক দিন ধরে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন। এমনকি এই বিষয় নিয়ে টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানেও নানা আপত্তিকর কথা বলেছেন। এর সঙ্গে আমার স্ত্রী আর সন্তানদেরও জড়িত করেছেন। এত দিন কঙ্গনা যেসব অভিযোগ করেছেন, এবার পারলে তা প্রমাণ করুক।’

এদিকে আদিত্য পাঞ্চোলিকে নাকি এই কঙ্গনা রনৌতের বিরুদ্ধে করা মানহানির মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আদিত্য পাঞ্চোলি ‘মিড-ডে’কে বলেছেন, ‘কঙ্গনা রনৌতের আইনজীবী আমাকে হুমকি দিয়েছেন, মানহানির মামলা তুলে না নিলে তাঁরা নাকি আমার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনবে। আমি এই আইনজীবীর সঙ্গে ১৮ মিনিটের কথোপকথনের ভিডিও ভারসোভা পুলিশ স্টেশনে জমা দিয়েছি।’

এই মানহানির মামলা দায়ের করার আগে কঙ্গনা রনৌত আর তাঁর বোন রঙ্গোলিকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য আইনি নোটিশ পাঠান আদিত্য পাঞ্চোলির স্ত্রী জরিন ওয়াহাব। সেই চিঠির কোনো জবাব দেননি কঙ্গনা রনৌত ও রাঙ্গোলি।

‘ইন্ডিয়া টুডে’র কাছে ২০১৭ সালে কঙ্গনা বলেছিলেন, ‘আমি তখন তাঁর (আদিত্য) মেয়ের চেয়ে বয়সে ছোট। কিশোরী বয়স। মিডিয়াতেও নতুন। এখানকার সবকিছু আমার কাছে নতুন মনে হচ্ছিল। এ কারণে নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে সাহায্য নিতে আমি তাঁর স্ত্রীর কাছে গিয়েছিলাম। আমি তাঁকে বলেছিলাম, আমাকে বাঁচান। আমি আপনার মেয়ের থেকেও ছোট। আর আমার সঙ্গে যা ঘটে চলেছে, তা বাবা-মাকেও বলতে পারব না।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, আদিত্যর স্ত্রী ওই সময় কঙ্গনাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি এমন মন্তব্য করেছিলেন যে কঙ্গনা বেশ হতাশ হয়েছিলেন। সব ঘটনা শুনে জরিনা ওয়াহাব তাঁকে বলেছিলেন, ‘এটা আমার জন্য অনেক স্বস্তির বিষয়। কারণ, এখন থেকে সে (আদিত্য) আর আমার বাসায় নির্যাতন করতে আসবে না।’

কঙ্গনা বলেন, ‘জরিনা সাহায্য না করায় আমি অসহায় হয়ে পড়েছিলাম। ভাবছিলাম, কার কাছে সাহায্য চাইব? একবার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তা জানালে বাবা-মা বিষয়টি জেনে যেত এবং আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেত। তাই আমার বাঁচার কোনো উপায় ছিল না। তবে পরে বাধ্য হয়ে পুলিশের কাছে আদিত্য পাঞ্চোলির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছি। সে সময় শুধু সতর্ক করে আদিত্যকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।’