যুদ্ধ আর সাহসিকার জীবনের গল্প

‘জননী সাহসিকা’ নাটকের দৃশ্য
‘জননী সাহসিকা’ নাটকের দৃশ্য

পবিত্র রমজান মাসের প্রথম সপ্তাহে বেশ স্থবির ছিল রাজধানীর নাট্যাঙ্গন। জাতীয় নাট্যশালার মিলনায়তনগুলোতে তেমন কোনো নাটকের প্রদর্শনী ছিল না। সংগত কারণে দর্শকের উপস্থিতিও দেখা যায়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সে স্থবিরতা কাটল। পরীক্ষণ থিয়েটারে ‘জননী সাহসিকা’ নাটকের প্রদর্শনীতে দর্শকের দারুণ উপস্থিতি ছিল। আজ একই মঞ্চে নাটকটি আবার মঞ্চস্থ হবে।

জার্মান নাট্যকার বের্টোল্ট ব্রেখট এর ‘জননী সাহসিকা’ অন্যতম যুদ্ধবিরোধী এপিকধর্মী ক্রনিকল প্লে (মহাকাব্যিক ধারাবিবরণী নাটক)। নাটকটির নির্দেশনায় রয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নাট্যকলা বিভাগের প্রভাষক সঞ্জীব কুমার দে এবং অনুবাদ করেছেন কবীর চৌধুরী।

নাটকে যুদ্ধ আর সাহসিকার জীবনের গল্প সমান্তরালে এগিয়ে যায়
নাটকে যুদ্ধ আর সাহসিকার জীবনের গল্প সমান্তরালে এগিয়ে যায়

নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র অ্যানা ফিয়ার্লিং একটি ভ্রাম্যমাণ ক্যানটিনের মালিক। যুদ্ধের ধ্বংসলীলার মধ্যে অসীম সাহসের সঙ্গে নিজের মালামাল সে যেভাবে বাঁচিয়েছে, তারই স্বীকৃতিস্বরূপ লোকজন তার উপাধি দেয় ‘জননী সাহসিকা’। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে এলিফ। সে বেপরোয়া ও দুঃসাহসী। তবে ছোট ছেলে অত্যন্ত সৎ। তাকে ডাকা হয় সুইস পনির বলে। মেয়ে কাট্রিন অত্যন্ত সংবেদনশীল ও অনুভূতিপ্রবণ, কিন্তু বোবা। পরিবারের পঞ্চম সদস্য হলো জীবিকা নির্বাহের মূল অবলম্বন তার খাবার গাড়িটি। যুদ্ধের সর্বনাশা ছোবলে জননী সাহসিকা একে একে তার তিন সন্তানকেই হারায়। জীবিকার তাগিদে সে একাই টেনে বেড়ায় খাবারের গাড়িটি। অতঃপর যুদ্ধ আর সাহসিকার জীবন সমান্তরালে এগিয়ে চলা।

গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল নাটকটির পঞ্চম প্রদশর্নী
গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল নাটকটির পঞ্চম প্রদশর্নী

নাটকটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নাট্যকলা বিভাগের প্রযোজনা। এ প্রতিষ্ঠানের দ্বিতীয় আবর্তন (২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষ) তাদের তৃতীয় বর্ষ পরীক্ষা প্রযোজনার অংশ হিসেবে ‘জননী সাহসিকা’ নাটকের প্রথম মঞ্চায়ন করেছে ৪ মে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে নাটকটির উদ্বোধনী প্রদর্শনীসহ মোট চারটি প্রদর্শনী করে। এরপর গতকাল সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে নাটকটির পঞ্চম প্রদর্শনী মঞ্চস্থ হয়। আজ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় প্রযোজনাটির ষষ্ঠ প্রদর্শনী মঞ্চায়ন হবে।

নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাজেদ আহমেদ, ইমরুল কায়েস মুন্না, সৈয়দা কাজরিয়া রহমান, ললিতা রায়, তানিয়া সুলতানা, মো. এনামুল হাসান কাওছার, আকাশ সরকার, ইমরান হাবীব, শ্রেয়শ্রী সরকার, ইমরান হোসেন, মো. আহসান হাবীব, মাহফুজার রহমান, শাহ মুহম্মদ তাজ, মাহাবুবুর রহমান, সৈয়দা হাফসা ফারিহা, মারুফা মুন্নি, সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা এই নাটকে অভিনয় করেছেন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা এই নাটকে অভিনয় করেছেন