এবারও কানে ঐশ্বরিয়ার ঝলক

কান উৎসবে ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন
কান উৎসবে ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন

দেখতে দেখতে কানে ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের ১৭ বছর হয়ে গেল। কানের রেড কার্পেট শুনলেই স্বপ্নের মতো লাগে। যেকোনো অভিনেত্রীরই কামনা এই রেড কার্পেট। কিন্তু ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের কাছে কানের লালগালিচা যেন ডালভাত হয়ে গেছে। যত ভারতীয় ৭২তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে হেঁটেছেন বা হাঁটবেন, তাঁদের ভেতর সবচেয়ে পুরোনো ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। সেই ২০০২ সাল থেকে প্রতিবার তিনি রেড কার্পেটে ‘চমক’ দেখিয়েছেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবারও কানের রেড কার্পেট পেয়েছে অপরূপ ঐশ্বরিয়ার পায়ের স্পর্শ।

কানে গতকাল রোববার ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনকে দেখা গেল চাকচিক্যাময় ফিশকাট গাউনে। সোনালি-সবুজ বললে গাউনের রংটা ঠিক বর্ণনা করা হয় না। রং অনেকটা জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরির লাভার মতো। আর সেই সোনালির ওপর ছিল সবুজের আভা। চকচকে ওই পোশাক থেকে যেন সোনালি রঙ্গের আলো ঠিকরে বের হয়। দুই হাতের দুটি আংটি বাদ দিলে শরীরে আর কোনো গয়না ছিল না। তবে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে নখে ছিল সোনালি নেইলপলিশ। ছিল অভিজাত ও স্বল্প মেকআপ, ন্যুড লিপস্টিক আর স্মোকি আই। কানে কোনো দুল না থাকলেও পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে সেখানেও ছিল সোনালি রঙের মেকআপ। ঐশ্বরিয়ার এই পোশাকের নকশা করেছেন জ্যঁ লুইস সাবাজি। চুল ছিল একেবারে স্ট্রেট, সেই কালো খোলা চুল পিঠ দিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন। তাঁর গাউনের বিশেষত্ব হাতায় আর লম্বা লেজে। ডান হাত লম্বা, বাঁ পাশ স্লিভলেস। আর গাউনের লম্বা লেজে বড় থেকে ছোট মোট ছয়টি চোখা কাট রয়েছে।

কান উৎসবে ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনকে দেখা গেল চাকচিক্যাময় ফিশকাট গাউনে
কান উৎসবে ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনকে দেখা গেল চাকচিক্যাময় ফিশকাট গাউনে

এবারও কানে ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে ছিল সাত বছরের মেয়ে আরাধ্য। ২০১২ সাল থেকে মায়ের সঙ্গে আরাধ্যর কানে আসা–যাওয়া। মায়ের সঙ্গে মিলিয়ে তাঁর পরনে ছিল হলুদ রঙের ফ্রক। সেই ফ্রকের ওপরের বাঁ পাশে আবার ছিল হলুদ রঙের বিশাল গোলাপ ফুল। মা-মেয়ের ছবি পোস্ট করে ঐশ্বরিয়া ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, ‘আমার সারা জীবনের আলো, তোমায় ভালোবাসি।’ আরেকটি ছবির ক্যাপশনে ঐশ্বরিয়া লিখেছেন, ‘যেমন মা, তেমন মেয়ে।’

এ ছাড়া কানের দ্বিতীয় দিনে ঐশ্বরিয়াকে রামি কাদির ডিজাইন করা পোশাকেও দেখা গেছে।

এর আগে ঐশ্বরিয়া নিজের ইনস্টাগ্রামে তাঁর আর আরাধ্যর ছবি শেয়ার করে জানান, কানে পৌঁছেছেন তাঁরা। গত বছর মাইকেল সিনকোর ডিজাইন করা বেগুনি-নীল প্রজাপতি গাউনে ঐশ্বরিয়া ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেন। গাউনটি রাভস্কি ক্রিস্টাল দিয়ে খচিত, আলট্রা ভায়োলেট, মিডনাইট ব্লু রঙের সম্মিলনে তৈরি এই গাউনে লাল সুতা দিয়ে নকশা করা। স্লিভলেস এই গাউনের লেজ ২০ ফুট লম্বা। আর পুরো গাউন তৈরি করতে সময় লাগে ১২৫ দিন।

মা ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের সঙ্গে মিলিয়ে আরাধ্যর পরনে ছিল হলুদ রঙের ফ্রক
মা ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চনের সঙ্গে মিলিয়ে আরাধ্যর পরনে ছিল হলুদ রঙের ফ্রক

তবে ঐশ্বরিয়ার কাছে নাকি প্রথম কান চলচ্চিত্র উৎসবে যে সাজ দিয়েছিলেন, সেটাই সবচেয়ে প্রিয়। ওই উৎসবে তিনি পুরোদস্তুর ভারতীয় নারীর সাজে হাজির হয়েছিলেন। হলুদ রঙের শাড়ি, কানে বড় ঝুমকা, গলায় হার, আর কপালের মাঝে ছোট্ট একটি টিপ। এই সাজ নাকি এখন পর্যন্ত তাঁর কাছে সবচেয়ে পছন্দের।

এ বছর কঙ্গনা রনৌতের সাদা গাউনের ডিজাইনারও মাইকেল সিনকো।

মাতৃত্বের কারণে ঐশ্বরিয়া চলচ্চিত্র থেকে সাময়িক বিরতি নিলেও কান চলচ্চিত্র উৎসবকে তিনি কখনো ‘না’ বলেননি। এবারও ফরাসি প্রসাধনী ব্র্যান্ড ল’রিয়াল প্যারিসের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে ঐশ্বরিয়া পরিচিত কান দর্শন করলেন। দীপিকা পাডুকোনও একই ব্র্যান্ডের শুভেচ্ছাদূত হয়ে গত বছর থেকে পা রাখছেন কানের রেড কার্পেটে।